গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন সম্পূর্ণ পক্ষপাতমুক্তভাবে হয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
Published : 26 Jun 2018, 08:50 PM
তিনি বলেছেন, “কোনো প্রকার পক্ষপাত ছাড়া এই নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং এই ব্যাপারে সরকার সহযোগিতা করেছে। নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে এই কথা বিএনপি ছাড়া আর কেউ বলছে না।”
মঙ্গলবার গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর সন্ধ্যায় ঢাকায় দলের ধানমণ্ডির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন কাদের।
কোনো সহিংসতা ছাড়া অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট স্থগিতের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। তিনি বলেছেন, তার এজেন্টদের কেন্দ্রে থাকতে দেওয়া হযনি।
বিএনপির অভিযোগের জবাবে কাদের বলেন, “দেখুন বিএনপি সকাল থেকে শুরু করেছে। তাদের প্রার্থী বলে ১০টি কেন্দ্রের এজেন্ট বের করে দিয়েছে, আর নয়াপল্টনের অফিস থেকে বলে একশটি কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দিয়েছে। এরা একেক জন একেক কথা বলছে, কিন্তু বাস্তবে এর কোনো ভিত্তি নেই।
“এর চেয়ে ভালো নির্বাচন সম্ভব? তারপরও এই নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে তাদের সেট করা কিছু কথাবার্তা তোতা পাখির মতো বলেছে। তাদের এজেন্টরা যদি নিজেরা না আসে, তাহলে কীভাবে প্রমাণ করবেন যে তাদের বের করে দেওয়া হয়েছে।”
গাজীপুরে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, অন্তর্কোন্দলের কারণে বিএনপি প্রার্থী এজেন্টই দিতে পারেনি।
নয়টি কেন্দ্রে ভোট স্থগিতের বিষয়ে তিনি বলেন, “৪২৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৯টি কেন্দ্রে সমস্য হয়েছে। সেটা কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জন্য দায়ী। এছাড়া অন্য কোনো ফ্যাক্টর কাজ করেনি।”
নির্বাচনে গণরায়ের বিরুদ্ধে কথা বললে আগামী নির্বাচনেও জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, “তারা (বিএনপি) বলছে, নির্বাচন কমিশন জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। বিএনপি জিততে পারলে কী বলতেন? বিএনপি হেরে গেলে যে কোনো ধরনের অশ্রাব্য, অমার্জিত শব্দ চয়নে কথা বার্তা বলেন, এটাই তাদের নেতিবাচক রাজনীতির ধারা।
“বিএনপি হেরে গিয়ে যদি এটাকে প্রতারণা ভাবে। তাহলে সামনের দিনগুলোতে তাদের ভোট আরও কমবে। এ ধরনের কথা যারা বলে জনগণের রায়ের বিরুদ্ধে, জনগণ সামনের দিনে এরও জবাব দেবে।”
সন্ধ্যায় কাদেরের সংবাদ সম্মেলনের সময় ভোট গণনা চলছিল, তবে বিভিন্ন কেন্দ্রের ফলাফলে এগিয়ে ছিলেন নৌকার প্রার্থী জাহাঙ্গীর।
কাদের গাজীপুরে ‘বড় বিজয়ের’ আশা প্রকাশ করে বলেন, “শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন অর্জনের সোনালী ফসল এই ফলাফল। এই বিজয়ের ধারা জাতীয় নির্বাচনে অব্যহত থাকবে।”
নির্বাচনকে ‘প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অবসরপ্রাপ্ত মেজর মিজানুর রহমানের গ্রেপ্তারের কথা তুলে ধরে কাদের বলেন, “আপনারা শুনেছেন নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য একটা ষড়যন্ত্রের অডিও। এই নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে পণ্ড করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র তারা করেছে।
“ষড়যন্ত্রের ফোনালাপ সোস্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ হয়েছে। সেখানে বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতার ষড়যন্ত্রের নীল নকশা প্রকাশিত হয়েছে।
“বিএনপির লোকজন নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নৌকা মার্কার ব্যাজ লাগিয়ে দিয়েছে। এবং আজকে হাতে নাতে জাল ভোটের অভিযোগে বিএনপিরই একজন কর্মী ধরা পড়েছে। এটার কি জবাব দিবে বিএনপি?”
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এ কে এম এনামুল হক শামীম, মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ প্রচার আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ দপ্তর বিপ্লব বড়ুয়া, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।