জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়াকে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন আদেশের বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের ওপর দ্বিতীয় দিনের শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে।
Published : 09 May 2018, 10:06 AM
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চে বুধবার সকাল সোয়া ৯টায় এ শুনানি শুরু হয়।
শুনানির প্রথম দিন মঙ্গলবার দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
কেন খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল হওয়া উচিৎ- সে বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের সামনে নিজেদের যুক্তি তুলে ধরেন তারা।
দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য শেষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেছিলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী।
বুধবার সকালে তিনি তার অসমাপ্ত বক্তব্য উপস্থাপন শুরু করেন। পরে জামিন বহাল রাখার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও জয়নুল আবেদীন।
বিএনপির আইনজীবীদের মধ্যে মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মাহবুবউদ্দিন খোকন ও সানউল্লাহ মিয়াও উপস্থিত আছেন শুনানিতে।
এছাড়া বিএনপি নেতাদের মধ্যে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খানকে আদালতে দেখা গেছে।
রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের সঙ্গে আছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।
দুর্নীতি দমন কমিশনের এ মামলায় পাঁচ বছরের সাজার রায়ের পর গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা রয়েছেন পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের পরিত্যক্ত কারাগারে।
জজ আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করে জামিন পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আপিল বিভাগ তা স্থগিত করে দিলে খালেদার মুক্তি আটকে যায়।
হাই কোর্টে আপিল চলমান থাকা অবস্থায় ৭৩ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ জামিন পাবেন কি না- তা আপিল বিভাগের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।
অবশ্য জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় জামিন হলেও অন্য মামলায় খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তার ‘মুক্তি বিলম্বিত করার কৌশল’ সরকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে বিএনপি নেতাদের মধ্যে।
বিদেশ থেকে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টের নামে আসা দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের এই মামলা দায়ের করা হয়েছিল জরুরি অবস্থার মধ্যে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই।
রমনা থানায় দুদকের করা এই মামলার বিচার চলে পুরো দশ বছর। ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আখতারুজ্জামান গত ৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলার রায়ে খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সাজা দেওয়ার পাশাপাশি তার ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদকে দশ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হওয়ার পর মামলার নথি নিম্ন আদালত থেকে এনে তা দেখে গত ১২ মার্চ খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দেয় হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ।
দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গেলে সর্বোচ্চ আদালত গত ১৪ মার্চ জামিন স্থগিত করে নিয়মিত আলিভ টু আপিল করতে বলে।
এরপর ১৯ মার্চ দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের অনুমতি দিয়ে ৮ মে শুনানির দিন ঠিক করে দেয় আপিল বিভাগ। ফলে খালেদার জামিন স্থগিতই থাকে।
পুরনো খবর