জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার পুর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের ২০ দিন পর মামলার নথি হাই কোর্টে পৌঁছেছে, যার ওপর নির্ভর করছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন।
Published : 11 Mar 2018, 01:38 PM
দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের এই মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাগারে থাকা খালেদা জিয়া জামিন পাবেন কি না, এই নথি দেখে সোমবার তা জানাবে হাই কোর্ট।
খালেদা জিয়ার জামিন প্রশ্নে রোববার সকালেই আদেশ দেওয়ার কথা ছিল বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাই কোর্ট বেঞ্চের। কিন্তু নথি পৌঁছাতে বিলম্বের কারণে আদেশ পিছিয়ে সোমবার যায়।
কোতোয়ালি থানার এএসআই মঞ্জু মিয়া বড় একটি ট্রাংকে করে মামলার নথি নিয়ে বেলা ১২টা ৫৪ মিনিটে সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছান। হাই কোর্টের আদান-প্রদান শাখায় নথি গ্রহণ করেন সেকশন কর্মকর্তা কেএম ফারুখ হোসেন। সেখান থেকে মামলার নথি ফৌজদারি আপিল শাখায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান গত ৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলার রায়ে পাঁচ বছরের সাজা দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠান।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে খালেদার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে গত ২২ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট নিম্ন আদালত থেকে মামলার নথি তলব করে।
আর ২৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে হাই কোর্ট জানায়, নিম্ন আদালত থেকে নথি পাওয়ার পর জামিন বিষয়ে আদেশ দেওয়া হবে।
সে অনুযায়ী খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের আবেদনে বিষয়টি রোববার আদেশের জন্য কার্যতালিকায় রাখা হয়।
কিন্তু নথি তখনও না আসায় বিএনপিনেত্রীর আইনজীবী জয়নুল আবেদীন সকালে আদালতকে বলেন, “এ জামিনের জন্য রেকর্ডের প্রয়োজন নেই। এই কোর্টের ট্র্যাডিশন আছে রেকর্ড ছাড়াই জামিন দেওয়ার। এই কোর্টের সেই পাওয়ারও আছে।”
এ সময় বিচারক বলেন, “নজির আছে ঠিক। কিন্তু আমরা তো রেকর্ড তলব করেছি। আমরা ওই অর্ডার দিয়েছিলাম ২২ ফেব্রুয়ারি,
রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহম্মেদ এবং দুদকের পক্ষে খুরশীদ আলম খান এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের মধ্যে জয়নুল আবেদীন ছাড়াও এ জে মোহাম্মদ আলী, খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নিতাই রায় চৌধুরী, কায়সার কামাল, সগীর হোসেন লিয়ন ও এহসানুর রহমান আদালতে ছিলেন।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে খন্দকার মোশারফ হোসেন, মঈন খান, মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জয়নুল আবদিন ফারুক ও আবদুল আউয়াল মিন্টু উপস্থিত ছিলেন আদালতে।
বিএনপি নেতারা অভিযোগ করে আসছেন, ‘ভিত্তিহীন মামলায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থেকে’ তাদের নেত্রীকে সাজা দেওয়ার পর ক্ষমতাসীনরা এখন তার জামিনও ‘বিলম্বিত করার চেষ্টা’ করছে।
অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলে আসছেন, এই মামলা কিংবা রায়ের সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আর বিএনপি চেয়ারপারসনের কারাবাস দীর্ঘায়িত হচ্ছে তার আইনজীবীদের ভুলের কারণে।