ভারতে আটকে পড়া বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিনের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে এখন আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি শাখার মহাপরিচালক রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন।
শিলংয়ে থাকা সালাহ উদ্দিন এই খবর শুনে বলেছেন, তিনি এখন গুয়াহাটিতে বাংলাদেশ মিশনে যোগাযোগ করবেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আট বছর আগে ভারতের বাংলাদেশ লাগোয়া রাজ্য মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে অনুপ্রবেশের মামলায় গ্রেপ্তার হন, তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়।
সেই মামলায় গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি খালাস পেলেও ‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ না পাওয়ায় তিনি দেশে ফিরতে পারছিলেন না। কারণ তার কাছে পাসপোর্ট নেই।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে রফিকুল বলেন, “আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদের দেশে ফেরার আবেদন মঞ্জুর করেছে।
“পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে ভারতের আসাম রাজ্যের গুয়াহাটিতে আমাদের বাংলাদেশ মিশনের সঙ্গে যোগযোগ করছে।”
এরপর সালাহ উদ্দিনকে ফোন করা হলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি দেশে ফেরার জন্য গত ৮ তারিখ আবেদন করেছি। আজকে বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রচারিত খবরাখবর থেকে শুনছি, আমাদের আবেদন গ্রান্ট করা হয়েছে।
“এখনও মিশন থেকে কিছু আমাকে জানায়নি। দেখি, দুই-একদিনের মধ্যে আমি যোগাযোগ করব।”
বিসিএস ক্যাডারের কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন ১৯৯১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সহকারী একান্ত সচিব ছিলেন। পরে সরকারি চাকরি ছেড়ে তিনি বিএনপিতে যোগ দিয়ে রাজনীতিতে নামেন। ২০০১ সালে কক্সবাজার থেকে সংসদ সদস্য হন, পরে যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পান।
২০১৪ সালের নির্বাচন বয়কট করে বিএনপি যখন আন্দোলন করছিল, তখন দলের যুগ্ম মহাসচিবের পদে ছিলেন সালাহ উদ্দিন। ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরা থেকে নিখোঁজ হন তিনি।
বিএনপি অভিযোগ তোলে, সরকারি কোনো সংস্থা তাদের নেতাকে তুলে নিয়েছে। তবে ক্ষমতাসীন দল থেকে প্রত্যাখ্যান করা হয়।
রহস্যময়ভাবে নিখোঁজ হওয়ার ৬৩ দিন পর ওই বছরের ১১ মে সিলেটের ওপারে মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতের প্রবেশের অভিযোগে ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী তাকে গ্রেপ্তার দেখায় মেঘালয় থানা পুলিশ। একই বছরের ২২ জুলাই ভারতের নিম্ন আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের দায়ে অভিযোগ গঠন করা হয়।
সেই মামলায় রায়ে এ বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি শিলং জজ আদালত বাংলাদেশের বিরোধী দলের এই নেতাকে খালাস দেয়।
রায়ের পর সালাহ উদ্দিন বলেছিলেন, তিনি দেশে ফিরতে উদগ্রিব।
বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “আমি ভারতে অবস্থানের প্রথম দিন থেকে দেশে যাওয়ার জন্য প্রতীক্ষায় আছি। দেখা যাক এখন কী হয়।”
সালাহ উদ্দিন শিলংয়ে থাকা অবস্থায়ই বিএনপির কাউন্সিলে স্থায়ী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।