“আজও আমরা যখন কোনো নতুন উদ্যোগ নিতে যাই তখন দেখি মাত্র তিন বছর সময়ে বঙ্গবন্ধু সেটা করেছেন।”
Published : 13 Aug 2023, 08:03 PM
পচাত্তরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রক্ষা করতে না পারায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
এখন বঙ্গবন্ধু কন্যাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে না পারলে কী খেসারত দিতে হয়, এখন তা তারা জানেন।
রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘ষড়যন্ত্রের উৎপাটনই শোকাবহ অগাস্টের অঙ্গীকার’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। ‘বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন এ আয়োজন করে।
১৯৭৫ সালের মত এখনও ষড়যন্ত্র চলছে মন্তব্য করে দীপু মনি বলেন, “আজকে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে সজাগ থাকতে হবে। ষড়যন্ত্র প্রতিহত না করার খেসারত কী দিতে হয় এটা আমরা এখন জানি। পঁচাত্তরে যদি বঙ্গবন্ধুকে আমরা না হারাতাম তাহলে বাংলাদেশ অন্ধকারে পতিত হত না।”
মুক্তিযুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধু সরকারের ভূমিকাও তুলে ধরেন দীপু মনি। তিনি বলেন, “আজও আমরা যখন কোনো নতুন উদ্যোগ নিতে যাই তখন দেখি মাত্র তিন বছর সময়ে বঙ্গবন্ধু সেটা করেছেন। সারাজীবনে বঙ্গবন্ধু কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত নেননি। ধাপে ধাপে সবকিছু করেছেন। পুরো দেশটাকে এগিয়ে নেওয়ার পথ রেখা তৈরি করে গেছেন।”
২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের কথা মনে করিয়ে দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর পিলখানায় বিডিআরের ঘটনা ঘটানো হল এবং সেনাবাহিনীকে সরকারের বিরুদ্ধে উত্তপ্ত করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। সে সময় খালেদা জিয়ার গতিবিধি ছিল রহস্যময়। কাজেই ষড়যন্ত্র ছিল এবং আছে। ষড়যন্ত্রের জাল কেটে আমাদের এগোতে হচ্ছে।”
২০০৪ সালের ২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলা প্রসঙ্গেও কথা বলেন দীপু মনি। নাগরিক সমাজের একাংশ এই দুটি ঘটনা নিয়ে ‘চুপ থাকে’ মন্তব্য করে তাদের সমালোচনাও করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, “আমাদের সুশীল সমাজের বিশাল অংশ আজকে মানবতার কথা বলে। বিভিন্ন দেশ এসে যখন মানবাধিকারের কথা বলে, তখন তারা সঙ্গ দেয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা বা তার পরিবারকে নির্বংশ করা নিয়ে তাদের কথা নেই।
“২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলা নিয়ে কথা নেই। সে সময় মানবাধিকার কোথায় ছিল? ২০১৩-১৪ সালে পুড়িয়ে মানুষকে হত্যা করা হল, পঙ্গু করে দেওয়া হল, এতে কারো মানবাধিকার নেই, এটা কারো চোখে পড়ল না।”
বিএনপির সমালোচনা করে দীপু মনি বলেন, “আজকে মির্জা ফখরুল বলেন তারা সংখ্যালঘু নির্যাতন করেননি। আমরা এতটা ভোলা নই। ৯১ এর পর, ২০০১ এর পরে কী হয়েছিল তা ভুলে যাইনি। গোপাল কৃষ্ণ, ফাহিমা মুনিমা সব ভুলে যাব? যাদের মাধ্যমে আমরা এমন নৃশংসতা দেখেছি।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান।
বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন জিয়া রহমান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য রাশিদ আসকারী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কলামিস্ট মেজর (অব.) নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম, ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।