বিরোধীরা সরকার পতনের দাবিতে অবরোধের মতো কর্মসূচিতে থাকায় অর্থবহ আলোচনার পরিবেশ নেই বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
Published : 17 Nov 2023, 08:55 PM
সংলাপের আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের তরফে যে চিঠি দেওয়া হয়েছিল, তার জবাবে আওয়ামী লীগ বলেছে, সময় স্বল্পতার কারণে তা আর ‘সম্ভব নয়’।
ক্ষমতাসীন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের পক্ষে কেন্দ্রীয় সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে ওই চিঠি পৌঁছে দেন।
নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তির পরস্পরবিরোধী অনড় অবস্থানের মধ্যে সংলাপের আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে ১৩ নভেম্বর চিঠি দেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডনাল্ড লু।
মোহাম্মদ এ আরাফাত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ডনাল্ড লু’র চিঠির প্রত্যুত্তরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব ওবায়দুল কাদেরের পক্ষে আমি অ্যাক্টিং ডেপুটি চিফ অব মিশন মি. আর্টুরো হাইন্সকে চিঠি হস্তান্তর করি।"
চিঠিতে আওয়ামী লীগ দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমুন্নত রাখতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য দলের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে; বলেছে, “সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনকে সত্যিকারের স্বাধীন সংস্থা হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের দূরদর্শী প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বেশ কিছু কাঠামোগত, আর্থিক, মানবসম্পদ, আইনি এবং অন্যান্য সংস্কারের উদ্যোগ নেন। এর মধ্যে রয়েছে ছবিযুক্ত ভোটার আইডি কার্ড, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স এবং নির্বাচন কমিশন গঠনে আলাদা আইন প্রণয়ন।”
ওবায়দুল কাদের লিখেছেন, “আপনি অবগত আছেন, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটের তারিখ ঠিক করা হয়েছে, যেখানে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর রাখা হয়েছে।
“বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বহু মাস ধরে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নিঃশর্ত সংলাপের দরজা খোলা রেখেছিল। তবে সেই আহ্বানে সাড়া না দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সরকার পতনের দাবিতে অনঢ় ছিল এবং সেই অবস্থানেই আছে।”
সরকার পতনের দাবিতে বর্তমানে বিএনপি ও তাদের সমমনা জামায়াতে ইসলামীর মত দলগুলোর অবরোধ কর্মসূচি পালনের বিষয়টি তুলে ধরে চিঠিতে বলা হয়, এ কর্মসূচিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের হিসাবে, গত ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত অবরোধ সমর্থকদের হাতে ১৫৪টি নাশকতার ঘটনা ঘটেছে।
বিএনপি ও অন্যদের সঙ্গে সংলাপে বসতে আওয়ামী লীগ সম্মত থাকলেও বিরোধীরা সরকার পতনের দাবিতে অবরোধের মত কর্মসূচিতে থাকায় ‘অর্থবহ আলোচনার পরিবেশ নেই’ বলে চিঠিতে মন্তব্য করা হয়েছে।
“তাছাড়া আগামী সপ্তাহগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যস্ততা কাটবে নির্বাচনী কাজে, যার মধ্যে আছে ৩০০ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বিষয়ে পর্যালোচনা ও চূড়ান্ত করা, ইশতেহার প্রণয়ন, নির্বাচনী প্রচারণার কৌশল চূড়ান্ত করা, ভোটারদের কাছে ভোট চাওয়ার মত কাজে। তার মানে সংলাপের জন্য সব শর্তেই অনুকূল পরিস্থিতি থাকলেও অর্থপূর্ণ ও সত্যিকার অর্থে সংলাপ করার মতো যথেষ্ট সময় নেই।"
বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্তর্জাতিক সব বন্ধুরা যাতে সহযোগিতা করে, সেই প্রত্যাশার কথাও লিখেছে আওয়ামী লীগ।