বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থান অনিবার্য বলে মনে করছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তার দাবি, আন্দোলনে এখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘণ্টা হরতালের প্রথম দিন রোববার এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
নিপীড়নে বিএনপির নেতাকর্মীরা ‘মৃত্যু থেকে কয়েক মিনিট দূরে’ অবস্থান করছেন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, “বাড়ি ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করা হচ্ছে। …দিশাহীন, উন্মাদ হয়ে পাইকারি গ্রেপ্তার, আর্ত চিৎকার-হুংকার, খুনের হুমকি দিয়ে ভীতিকর ভয়ানক পরিবেশ তৈরি করেছে।”
এভাবে লাভ হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবি আদায়ে বাঁধভাঙ্গা আন্দোলনে স্ফূলিঙ্গ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। অনিবার্য গণঅভ্যুত্থানের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছে বাংলাদেশিরা।”
বিএনপির বিরুদ্ধে নাশকতার অপবাদ দিয়ে দেশের বাইরে প্রচার চলছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, “সন্ত্রাসের অপবাদ দিয়ে ২০১৪-১৫ সালের ন্যায় আর বিদেশে মার্কেটিং করতে পারছে না। কারণ, সারা দুনিয়া টের পেয়েছে বিএনপির নামে সন্ত্রাসের অপবাদ মূলত একতরফা নির্বাচনের কৌশল।”
গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপির ৫১০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার এবং বিভিন্ন মামলায় ২ হাজার ৮৫ জনকে আসামি করা হয়েছে বলেও জানা্ন তিনি।
‘লাল সবুজের পতাকা যতদিন, বিএনপিও ততদিন’
আগামী ১০ থেকে ১৫ বছর পর বিএনপি-জামায়াত বলতে কিছু থাকবে না বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় যে বক্তব্য রেখেছেন, তার কড়া সমালোচনা করেন রিজভী।
তিনি বলেন, “আগামী ১০/১৫ বছর কেন, বিশ্বের মানচিত্রে লাল-সবুজের পতাকা যতদিন থাকবে, ততদিন বিএনপি থাকবে এই দেশে ইনশাল্লাহ।”
জয়ের বক্তব্যকে ‘দাম্ভিকতাপূর্ণ’ আখ্যা দিয়ে রিজভী বলেন, “এই কণ্ঠ শুনে দেশের মানুষ স্তম্ভিত ও হতবাক হয়েছে। একই সঙ্গে জনগণ অট্টহাসিও দিয়েছে।
“তিনি বলেছেন, আগামী ১০/১৫ বছরে বিএনপি বলে কোনো দল বাংলাদেশে আর থাকবে না। তার মানে এই সময়ে তারা বিএনপিকে ধ্বংস ও নিঃশেষ করে দেবে। দেশে শুধুমাত্র একটাই রাজনৈতিক দল থাকবে, সেখানে ভিন্ন মতাদর্শের কেউ থাকতে পারবে না, কেউ স্বৈরাচারী সরকারের সমালোচনা করতে পারবে না, বাকশাল দুই স্থাপিত হবে।”
বিএনপির নেতা বলেন, “এই উপদেষ্টা সাহেবের মা ‘নিশিরাতের প্রধানমন্ত্রী’ ও তার অনুগতরা দশকের পর দশক ধরে বিএনপিকে ধ্বংসের জন্য উঠে পড়ে লেগে আছে। এক এগারোর ‘বেআইনি সরকার’ও সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।
‘‘আমি শুধু সজীব ওয়াজেদ জয় সাহেবকে বলব্, ইতিহাস পড়ুন। স্বৈরাচার যখন ক্ষমতার মসনদে বসে থাকে তখন অন্ধের মতো দাম্ভিকতা দেখায়।… এই ধরনের কথা আপনি পূর্বেও অনেকদিন বলেছেন। আপনার কথাগুলো এখন বাসি হয়ে গেছে।”
যতবার আঘাত এসেছে, বিএনপি ততবার ‘আরও শক্তিশালী’ হয়েছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, “বিএনপি প্রতিবারই চক্রান্তের চোরাবালি থেকে জেগে উঠে চতুর্দিকে আবার বিস্তার লাভ করেছে।…গ্রেপ্তার, নির্যাতন, গুম, ‘আয়না ঘরে’ বন্দি ও ক্রসফায়ার করেও বিএনপির নেতা-কর্মীদের দমানো যায়নি।”