তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন, আসামিদের বিরুদ্ধে ঘটনায় জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
Published : 03 Dec 2024, 06:31 PM
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের মধ্যে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় রমনা মডেল থানায় করা মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মীর্জা আব্বাসসহ বিএনপির ৮৩ নেতাকর্মী।
এ মামলায় পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে ঢাকার মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্ল্যাহ মঙ্গলবার তাদের অব্যাহতির আদেশ দেন।
আদালতে রমনা থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই জিন্নাত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত ২৮ নভেম্বর আদালত ওই আদেশ দিলেও বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে মঙ্গলবার।
ফখরুল ও আব্বাস ছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, আহমেদ খান, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, ভিপি জয়নাল, মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম ডোনার ও সদস্য সচিব আমিনুল হক রয়েছেন অব্যাহতি পাওয়া নেতাকর্মীদের তালিকায়।
জাতীয় নির্বাচনের আগে ‘সরকার পতনের’ এক দফা দাবিতে ২০২৩ সালের গত ২৮ অক্টোবর সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। সেদিন সমাবেশ শুরুর পর কাছেই কাকরাইল মোড়ে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়। শান্তিনগর, নয়াপল্টন, বিজয়নগর, ফকিরাপুল, আরামবাগ এবং দৈনিক বাংলা মোড় এলাকা রণক্ষেত্রের রূপ নেয়।
সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দেওয়া হয়, ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করা হয় আরো ডজনখানেক যানবাহন। হামলা করা হয় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে।
ওই ঘটনায় রমনা মডেল থানার তৎকালীন এসআই মফিজুর রহমান বাদী হয়ে বিএনপির ৭২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা করেন। পরে মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাসসহ ১১ জনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তদন্ত শেষে গত ২৮ অক্টোবর ফখরুলসহ ৮৩ জনের অব্যাহতি চেয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।
সেখানে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, মামলার সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা বলেন, আসামিরা ওই ঘটনায় জড়িত কি না, তা তারা জানেন না। অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রতীয়মান হলেও এজাহারে নাম থাকা ও গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
ভবিষ্যতে কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে কিংবা ঘটনা প্রমাণের মত কোনো তথ্য উপাত্ত পাওয়া গেলে কিংবা ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত আসামিদের নাম, ঠিকানা সংগ্রহ করে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করার কথা বলা হয় তদন্ত প্রতিবেদনে।
নাশকতার আরও এক মামলায় ফখরুলসহ ৩৭ জনকে অব্যাহতি
পুলিশের কাজে বাধা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর করা আরেক নাশকতার মামলায় মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির ৩৭ নেতাকর্মীকে অব্যাহতি দিয়েছেন একই আদালত।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী সোহেল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামালও এ মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।
শাহবাগ থানার পুলিশের তৎকালীন উপপরিদর্শক মো মতিউর রহমান বাদী হয়ে এ মামলাটি করেছিলেন। তদন্ত শেষে গত ২৮ অক্টোবর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ।
গত ১২ নভেম্বর আদালত চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে আসামিদের অব্যাহতি দেয় আদালত।