খালেদা জিয়া লন্ডনে থাকায় এবার জিয়ার কবর জিয়ারত ছাড়া ঈদের দিন বিএনপির ভিন্ন কর্মসূচি নেই।
Published : 30 Mar 2025, 08:35 PM
রোজার ঈদ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তারেক রহমান বলেছেন, যে কোনো মূল্যে ‘পলাতক স্বৈরাচার’ আর তাদের দোসরদের বিচারের মুখোমুখি করার মাধ্যমে দেশে আইন ও ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে এবার ঈদের অঙ্গীকার।
লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোববার অভিনন্দন বার্তায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য দোয়া কামনা করেছেন।
রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানে ’ফ্যাসিবাদের’ পতনের পর এবার ঈদ আনন্দের উচ্ছ্বাস- উদ্দীপনায় নতুন মাত্রা যোগ হওয়ার কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, “তবে মানুষের মনে পবিত্র আনন্দ- উচ্ছ্বাসের এমন এক বাধাহীন ঊর্মিমুখর সময়েও অনেক মায়েদের মনে আনন্দ নেই। অনেক পরিবারে নেই উৎসবের আমেজ। কারণ ফ্যাসিবাদের দীর্ঘ দেড় দশকের গুম, খুন, অপহরণ, জুলুম নির্যাতনে সন্তান স্বজনহারা লাখো পরিবারে নেমে এসেছিল জাহেলিয়াতের অন্ধকার।”
তিনি বলেন, আন্দোলনে হতাহতদের পরিবারগুলোতে ঈদ উৎসবের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস নেই। ঈদের দিনেও হয়ত সন্তানহারা কোনো মায়ের চোখে অশ্রু। এই আনন্দঘন সময়েও স্বজনদের হৃদয়ে আপনজন হারানোর নিঃশব্দ কান্না।
”মাফিয়া চক্রের নির্মমতায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত প্রিয় মানুষটির কাছে বসেই অনেককে ঈদ আনন্দের এই দিনটি কাটাতে হচ্ছে আশা নিরাশা আর হতাশায়।”
তারেক বলেন, ‘‘দীর্ঘ দেড় দশক ধরে ফ্যাসিবাদী শাসন চালাতে গিয়ে যারা মানুষের ঈদ উৎসবের আনন্দকে ধ্বংস করে দিয়েছে, যারা অস্ত্রের জোরে মায়েদের বুক থেকে তাদের প্রিয় সন্তানদের কেড়ে নিয়েছে, যারা দেশের অসংখ্য অগণিত সন্তানকে পিতৃহারা-মাতৃহারা করেছে, এই বাংলাদেশে তাদের বিচার হতেই হবে।
”যে কোনো মূল্যে পলাতক স্বৈরাচার আর তাদের দোসরদের বিচারের মুখোমুখি করার মাধ্যমে দেশে আইন ও ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা করে সন্তানহারা মায়েদের মনে স্বজন হারা শোকসন্তপ্ত পরিবারে একটু হলেও সান্ত্বনার বার্তা দেয়া হবে। এবারের ঈদে এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।”
বিবৃতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘ঈদুল ফিতর নির্মল আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ মর্মবাণী মানবজাতির কাছে পৌঁছে যায় তা হচ্ছে ‘সকলের তরে সকলে আমরা’। এই মর্মবাণী মানসিক কদর্য, অন্যায়, অবিচার ও নিষ্ঠুর সামাজিক অসাম্যকে অতিক্রম করে এক নিবিড় ভ্রাতৃত্ববোধের প্রেরণা জাগায়।”
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
ঈদের নামাজের পর জিয়ার কবর জিয়ারত করবে বিএনপি
ঈদের দিন নামাজের পরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করবেন বিএনপির নেতারা।
দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, ঈদের দিন বেলা ১১টায় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করে ফুল দেবেন।
আগে প্রতি ঈদে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া স্বামী জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুর্নীতি মামলার রায়ে খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর থেকে দলের মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এ ধারাবাহিকতা অনুসরণ করছেন।
অপরদিকে প্রতিবছর সন্ধ্যায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা‘য় গিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করতেন। এবার তিনি লন্ডনে অবস্থান করায় বিএনপির আর ভিন্ন কোনো কর্মসূচি নেই।