“সুপেয় পানি প্রদানের মাধ্যমে এই সরকারকে প্রমাণ করতে হবে যে তারা কোনো ফ্যাসিস্টের আওতায় পড়ে নাই,” বলেন তিনি।
Published : 25 Apr 2025, 07:12 PM
গণঅভ্যুত্থানের পরে যে রকম জনপ্রত্যাশা তৈরি হয়েছে সরকার সেরকম হয়নি বলেন মন্তব্য করেছেন লেখক ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার।
শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও গণসমাবেশ কর্মসূচিতে তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের পরে আমরা যেমন প্রত্যাশা করেছিলাম সরকার তেমন হয়নি।
“গণঅভ্যুত্থানের পরে যে পূর্ণ ক্ষমতাসম্পন্ন সরকার দরকার ছিল, সেটা আমরা পাইনি। না পাওয়ার কারণে নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে এবং গণঅভ্যুত্থানের সুফল পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছি আমরা।”
গত ৫ অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর নোবেল জয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়।
ফরহাদ মজহার বলেন, “আমরা ড. ইউনূসকে বলতে চাই, তার যে সীমাবদ্ধতা এবং বাংলাদেশের রাজনীতির যে সীমাবদ্ধতা, এটা আমরা বুঝতে পারি। অবশ্যই আমরা তার সঙ্গে একশ ভাগ রয়েছি। কিন্তু কিছু কিছু কাজ তাকে অবিলম্বে শুরু করতে হবে। এখানে কোনো টালবাহানার সুযোগ নেই।”
গরিব শ্রমজীবী মানুষের জন্য বিনামূল্যে রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিশুদ্ধ নিরাপদ পানির দাবিতে আয়োজিত এই মানববন্ধন ও গণসমাবেশ কর্মসূচিতে তিনি বলেন, “নদীমাতৃক দেশে পানি সম্পদ, পানি অর্থনৈতিক বিকাশের ভিত্তি। বাংলাদেশের আগামী উন্নয়নের নীতিতে গোড়াতে থাকবে নদী। পানি জনগণের সম্পদ… এ সম্পদে কারও একচ্ছত্র অধিকার নেই।”
বিনামূল্যে সুপেয় পানি পাওয়া জনগণের অধিকার দাবি করে ফরহাদ মজহার বলেন, সরকারকে আমরা সহযোগিতা করবো, যেন ঢাকা শহরের মানুষ বিনা পয়সায় সুপেয় পানি পায়। বিনা পয়সায় পানি পাওয়ার অধিকার শহরের জনগণের রয়েছে।
“যারা সুপেয় পানি বিভিন্নভাবে নষ্ট করছে, এদের ক্রিমিনালের আওতায় ফেলে দিতে হবে।”
অবিলম্বে পানি কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “সুপেয় পানির নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। সুপেয় পানি প্রদানের মাধ্যমে এই সরকারকে প্রমাণ করতে হবে যে, তারা কোনো ফ্যাসিস্টের আওতায় পড়ে নাই।”
ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে এই রাষ্ট্রচিন্তক বলেন, “যারা কথায় কথায় ধর্মের কথা বলেন, তারা যদি সত্যিকারের ইসলামিক রাজনীতি করতেন, তাহলে সুপেয় পানির ব্যাপারে কথা বলতেন।
“যে সরকার পানির অধিকার কোম্পানির কাছে ইজারা দেয়, এমন সরকার আমাদের দেশে দরকার নাই।”
যারা বিভিন্নভাবে পানি দূষিত করছেন তাদের ফৌজদারি দণ্ডবিধির আওতায় শাস্তির পাশাপাশি কৃষি ও মৎস্য খাতে বিভিন্ন রাসায়নিক সার ব্যবহার বন্ধের দাবি তোলেন তিনি।
‘ভাববৈঠকি’, ‘জুলাই কমিউনিটি এলায়েন্স মিরপুর’ ও ‘গণঅভ্যুত্থান সুরক্ষা মঞ্চ’ নামে তিনটি সংগঠনের যৌথ এই কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন ‘সচেতন নাগরিক সমাজ’ এর সদস্য সচিব অবসরপ্রাপ্ত মেজর আহমেদ ফেরদৌস, কবি মোহাম্মদ রোমেল ও কবি ইকতিজা আহসান।