“নতুন বাংলাদেশে’ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এর ‘দোসরদের‘ নিষিদ্ধ করতে হবে”, বলেন তিনি।
Published : 16 Oct 2024, 06:09 PM
প্রবল গণ আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে বিএনপি, জামায়াতসহ সব দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর। দলটির সাবেক সংসদ সদস্য ‘সাবের হোসেন চৌধুরীকে দিয়ে’ আওয়ামী লীগ গঠনের চেষ্টাতেও জনগণ সমর্থন করবে না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
বুধবার দুপুরে গাজীপুরের শ্রীপুরের এক পথসভায় এ কথা বলেন নূর।
গণ অধিকার পরিষদের নেতা বলেন, “আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করতে ভারতসহ নানা দেশ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, দেশের ভেতরেও নানা লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি সাবের হোসেনকে জামিন দেওয়ার সাথে এর একটি তৎপরতা আছে।
“আমাদের শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকতে আওয়ামী লীগকে কোন ঠাঁই দেয়া হবে না, এর ‘দোসরদের’ ঠাঁই দেওয়া হবে না।”
আওয়ামী লীগকে ‘ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থা’ কায়েম করে দেশকে ধ্বংস করেছে অভিযোগ এনে নূর বলেন, “তাই ‘নতুন বাংলাদেশে’ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এর ‘দোসরদের‘ নিষিদ্ধ করতে হবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর হত্যা মামলায় দলটির সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের মধ্যে যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাদের মধ্যে দুই জন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
ঢাকা-৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবেক হোসেন চৌধুরীকে একটি হত্যা মামলায় গত ৬ অক্টোবর গ্রেপ্তারের পরদিন তাকে রিমান্ডে পাঠানো হয়। তবে ৮ অক্টোবর ছয়টি মামলাতেই তিনি জামিন পেয়ে যান। রিমান্ডে থাকা আসামির জামিনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা আছে।
জামিন পেয়েছেন সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানও। গত ১৯ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জে নিজ বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার হন তিনি। জামিন পেয়ে গত ১০ অক্টোবর তিনি সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তিনি বাড়ি ফেরেন।
আরও পড়ুন-
৬ মামলায় জামিনের পর হাজত থেকেই মুক্ত সাবের হোসেন চৌধুরী
মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে ‘শুধু নির্বাচনের জন্য’ বসানো হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, “রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক কাঠামো দিয়ে সংস্কার করে নির্বাচন দেবেন।
“জন-আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী কাজ করলে দেশের মানুষের সমর্থন পাবেন। আর যদি সাবের হোসেন চৌধুরীকে মুক্তি দিয়ে ‘তৃণমূল আওয়ামী লীগ’, ‘ভুইফোঁড় আওয়ামী লীগ’ বানাতে চান, তাহলে দেশের মানুষ আপনাদের সহযোগিতা করবে না।”
আওয়ামী লীগ শাসনামলে দেশে নির্বাচন ও মুক্ত চিন্তা করার অধিকার ছিল না বলে অভিযোগ এনে নূর বলেন, “সন্ত্রাস, লুটপাট চাঁদাবাজি, নৈরাজ্য রাজনীতিকে একটি দুর্বৃত্তায়নের হাতিয়ারে পরিণত করেছিল। আমরা এ অবস্থার পরিত্রাণ ঘটাতে পেরেছি। কিন্তু আমাদের সতর্ক থাকতে হবে সজাগ থাকতে হবে যাতে আওয়ামী লীগের মত আর কোনো ‘ফ্যাসিবাদ’ যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে।”
১৯৭১ সালে দেশের কৃষক শ্রমিক সাধারণ মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা এনেছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, “স্বাধীনতার পরে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার’ নামে একটি লুটেরা শ্রেণি, একটি ‘মাফিয়ার’ উদ্ভব হয়েছিল। তারা রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে সেই সময়ে জিম্মি করেছিল। মুক্তিযোদ্ধাদেরকে হত্যা করেছিল। দেশের একটা নৈরাজ্য কায়েম করেছিল, একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল।
“যখন ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসেছিল, আমরা ভেবেছিলাম তাদের কিছুটা পরিবর্তন হয়েছিল। মনে করেছিলাম অতীতের প্রায়শ্চিত্ত করে মনে হয় একটু ভালো হবে। কিন্তু তারা হয়নি।”
বিএনপির উদ্দেশে নুর বলেন বলেন, “আপনারা আদালতে জিপি, পিপি, এপিপি বিচারক নিয়োগে প্রতিযোগিতা করছেন, অথচ ‘গণহত্যাকারীদের’ আদালতে ঠেকাতে পারছেন না কেন?”
প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে দাবি করে খাদ্যপণ্যে ভর্তুকি অব্যাহত রাখার দাবিও করেন তিনি।
গণঅধিকার পরিষদের গাজীপুর জেলার আহ্বায়ক পাঠান আজহারের সভাপতিত্বে পথসভায় দলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।