বিএনপির সদস্যদের পদত্যাগে শূন্য হওয়া আসনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ ৯টি দলের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে অনেকেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন ছিল বৃহস্পতিবার; এই সময়ে ছয় আসনের বিপরীতে নির্বাচন কমিশনে ৫৩টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এতে বিএনপি থেকে বের হওয়া উকিল সাত্তার যেমন আছেন, ফেইসবুকে বিভিন্নভাবে আলোচিত হিরো আলম প্রার্থী হতে চেয়েছেন দুই আসনে। ফলে মনোনয়নপত্র জমার চেয়ে প্রার্থী হতে ইচ্ছুকের সংখ্যা কমে হয়েছে ৫২।
সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা ইতোমধ্যেই নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাঠিয়ে দিয়েছেন; যাচাই-বাছাই শেষে মনোনয়নের বৈধতা অনুযায়ী তাদের প্রার্থিতা নিশ্চিত হবে।
ইসির যুগ্মসচিব জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান জানান, ঠাকুরগাঁও- ৩ আসনে ৬ জন, বগুড়া- ৪ আসনে ৯ জন, বগুড়া- ৬ আসনে ১৩ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ২ আসনে ১৩ জন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২ ও ৩ আসনে ৬ জন করে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন ৫ জানুয়ারি, বাছাই ৮ জানুয়ারি; প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৫ জানুয়ারি এবং ভোট ১ ফেব্রুয়ারি। সব আসনের ভোট হবে ইভিএমে। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পযন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।
বিএনপির সাত সদস্যের পদত্যাগের পর এই ৬টি আসন শূন্য হয়; একজন ছিলেন সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য। সেই আসনে পরে ভোট হবে। তবে কোনো ভোটেই বিএনপি অংশ নেবে না বলে দলের নেতাদের বক্তব্যে ওঠে এসেছে।
গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গোলাপবাগের সমাবেশে বিএনপির সংসদ সদস্যরা একযোগে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এর পরদিনই ছয় সদস্য সংসদ ভবনে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর দপ্তরে পদত্যাগপত্র জমা দেন; আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের এমপি মো. হারুনুর রশীদ তা জমা দেন ২২ ডিসেম্বর।
তাদের ছেড়ে যাওয়া আসনেই ১ ফেব্রুয়ারি উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে; আর রুমিন ফারহানার পদত্যাগে শূন্য হওয়া সংরক্ষিত নারী আসনের (মহিলা আসন- ৫০) ভোট উপনির্বাচনের পর ফয়সালা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এই ছয় আসনের মধ্যে ৩টিতে প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বাকি ৩ আসনের ২টি ১৪ দলীয় জোট শরিকদের জন্য রেখেছে; অন্যটিতে কোনো প্রার্থী দেয়নি ক্ষমতাসীন দলটি।
প্রার্থী যারা
ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে ৬ প্রার্থী- মো. সিরাজুল ইসলাম- বিএনএফ; হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ- জাতীয় পার্টি; মো. ইয়াসিন আলী- বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (১৪ দল); মো. শাফি আল আসাদ- ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, মো. এমদাদুল হক- জাকের পার্টি এবং গোপাল চন্দ্র রায়- স্বতন্ত্র।
বগুড়া- ৪ আসনে ৯ প্রার্থী- একেএম রেজাউল করিম তানসেন- জাসদ (১৪ দল); শাহীন মোস্তফা কামাল- জাতীয় পার্টি; আব্দুর রশিদ সরদার- জাকের পার্টি; মো. তাজ উদ্দীন মণ্ডল- বাংলাদেশ কংগ্রেস। আর মো. গোলাম মোস্তফা, আলহাজ্ব মো. ইলিয়াস আলী, মো. আশরাফুল হোসেন আলম (হিরো আলম), মো. কামরুল হাসান সিদ্দিকী (জুয়েল) এবং মো. আব্দুর রশিদ স্বতন্ত্র প্রার্থী।
বগুড়া-৬ আসনে ১৩ প্রার্থী- মো. আফজার হোসেন- গণফ্রন্ট; মো. এমদুদুল হক ইমদাদ- জাসদ; মো. নূরুল ইসলাম ওমর- জাতীয় পার্টি; রাগেবুল আহসান রিপু- আওয়ামী লীগ; মোহাম্মদ ফয়সাল বিন শফিক- জাকের পার্টি; মো. নজরুল ইসলাম- বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও মো. মনসুর রহমান- বাংলাদেশ কংগ্রেস। স্বতন্ত্র প্রার্থী- মো. আব্দুল মান্নান, সৈয়দ কবির আহম্মেদ, মো. রাকিব হাসান, মাছুদার রহমান হেলাল, মো. আশরাফুল হোসেন আলম (হিরো আলম) এবং মো. সরকার বাদল।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে ৬ প্রার্থী- মু. জিয়াউর রহমান- আওয়ামী লীগ; মো. নবীউল ইসলাম- বিএনএফ; মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক- জাতীয় পার্টি; মো. গোলাম মোস্তফা- জাকের পার্টি; মু. খুরশিদ আলম ও মোহাম্মদ আলী সরকার স্বতন্ত্র প্রার্থী।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে ৬ প্রার্থী- মো. আব্দুল ওদুদ- আওয়ামী লীগ; মো. মুনিরুজ্জামান- জাসদ; কামরুজ্জামান খান- বিএনএফ; মো. মোস্তাফিজুর রহমান (মুকুল)- জাতীয় পার্টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সামিউল হক ও তাহারিমা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে ১৩ প্রার্থী- মো. আব্দুল হামিদ- জাতীয় পার্টি; জহিরুল ইসলাম জুয়েল- জাকের পার্টি ও মো. রাজ্জাক হোসেন- এনপিপি। স্বতন্ত্র প্রার্থী- মো. আব্দুর রহিম, মো. আশরাফ উদ্দিন, অ্যাডভোকেট মো. জিয়াউল হক মৃধা, আবদুস সাত্তার ভূঞা (উকিল আবদুস সাত্তার), আবু আসিফ আহমেদ, মাহবুবুল বারী চৌধুরী, মো. মঈন উদ্দিন, মো. শাহজাহান আলম, শাহ মফিজ ও মোহন মিয়া।