হুন্ডি-হাওলার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রায় আয় দেশেও আসছে আবার বাইরেও যাচ্ছে। যে অর্থ দেশে আসছে তা নিয়ে আমাদের অত ক্ষোভ নেই। ক্ষোভ বেশি হলো হুন্ডি-হাওলার মাধ্যমে যে অর্থ বিদেশে যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে।
Published : 20 Mar 2024, 10:40 PM
ডলার, মানে মার্কিন ডলার বেশ গুরুত্বপূর্ণ আমাদের কাছে। এর চাহিদা ব্যাপক। আন্তর্জাতিক লেনদেনের লোভনীয় মুদ্রাটি নিয়ে সম্প্রতি বেশ হৈ-চৈ। দেশে প্রচণ্ড চাহিদার জন্য ডলারের দাম বাড়ছে তো বাড়ছেই। দেশের অর্থনৈতিক গতিপথকে স্বাভাবিক থাকতে দিচ্ছে না মার্কিন ডলার। এর সংকট আমাদের মূল্যস্ফীতিকে উসকে দিচ্ছে। মূল্যস্ফীতির ৫০ শতাংশ কারণ মার্কিন ডলারের উচ্চমূল্য। আমদানি বাণিজ্যনির্ভর অর্থনীতির দেশে বিদেশি বিক্রেতাকে অধিকাংশ মূল্যই মার্কিন ডলারে পরিশোধ করতে হয়। রপ্তানি ও প্রবাসী আয় যা আনুষ্ঠানিকভাবে দেশে আসে, তা বাংলাদেশ ব্যাংকের কোষাগারে জমা হয়। আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি ও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ এবং এর সুদ মেটাতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যেন মুহূর্তেই শেষ হয়ে যায়। আমদানি ব্যয় অত্যধিক হওয়ায় বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) প্রভাব পড়ে। এতে করে ঘাটতি বড় হচ্ছে দিন দিন।
দেশের ইংরেজি একটি দৈনিক পত্রিকার গত ১৭ জানুয়ারি প্রথম পৃষ্ঠার বড় একটি চমকে যাওয়ার মতো খবর হচ্ছে— দেশের বৈদেশিক ঋণের বার্ষিক সুদ-আসলে কিস্তি পরিশোধ তিন বছরে ৬৩ শতাংশ বেড়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে যাবে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সুদ-আসলে কিস্তি পরিশোধ দাঁড়াবে ৪ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলারে। বিশ্ব ব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক ও এআইআইবির (এশিয়ান ইনফ্রাক্টাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক) মতো আন্তর্জাতিক ঋণদান সংস্থার পাশাপাশি জাপান, রাশিয়া, চীন ও ভারত এখন বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের অন্যতম প্রধান সূত্রে পরিণত হয়েছে। ১২ বিলিয়ন ডলার রাশিয়ান ঋণে ২০২৫ সালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার কথা থাকলেও এরই মধ্যে এ ঋণের বার্ষিক সুদ ৩৩০ মিলিয়ন ডলার ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকেই পরিশোধ করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। ঋণের আসল পরিশোধ শুরু হবে ২০২৬-২৭ অর্থবছর থেকে। তখন ঋণের বার্ষিক কিস্তি পরিশোধ করতে হবে ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৫৩১ মিলিয়ন ডলার, ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ৫১৯ মিলিয়ন ডলার এবং ২০২৮-২৯ অর্থবছরে ৫০৭ মিলিয়ন ডলার।
১০ বছর ধরে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে যেভাবে ‘সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট’ গ্রহণের হিড়িক চালিয়েছে; তার ফলে ২০২৮-২৯ অর্থবছর পর্যন্ত সুদাসলে ঋণের কিস্তি পরিশোধ অর্থনীতিতে কি বিপদ ডেকে আনতে যাচ্ছে তা অননুমেয়। দেশ থেকে ২০২৩ সালে ১৩ লাখেরও বেশি মানুষ বিদেশে গেছে। দেশের ১ কোটি ৫৫ লাখ মানুষ বিদেশে অভিবাসী থাকলেও তাদের অধিকাংশই হুন্ডি পদ্ধতিতে দেশে রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে। মার্কিন ডলারের দাম নির্ধারণ বাজারের হাতে ছেড়ে দিলেই এ সমস্যার সমাধান মিলবে না, কারণ হুন্ডি ডলারের চাহিদা কাঠামো শক্তিশালী থাকলে বাজারে ডলারের দাম যতই থাকুক হুন্ডি পদ্ধতিতে ডলারের দাম তার চেয়ে ৭-৮ টাকা বেশি পাওয়া যাবেই। দেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচারকারীরাই এই হুন্ডি ডলারের চাহিদাকে শক্তিশালী রাখছে, যেজন্য দেশ থেকে বিদেশে পুঁজি পাচার এখন দেশের ‘এক নম্বর সমস্যায়’ পরিণত হয়েছে।
সংখ্যায় দেশ থেকে পুঁজি পাচারকারী কয়েক হাজারের বেশি হবে না। বাংলাদেশি সমাজের উচ্চ মধ্যবিত্ত, উচ্চ বিত্তশালী ও ‘এলিট’ অংশে তাদের বেশিরভাগের অবস্থান। অর্থনৈতিক টানাপড়েনের কারণে তারা দেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচার করতে বাধ্য হচ্ছে বলা যাবে না। এ দেশে তাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ‘এলিট’ গোষ্ঠীর মধ্যে অবস্থান সত্ত্বেও আরও বেশি সুখ-শান্তির আশায় তারা দেশত্যাগে উদ্যোগী হচ্ছে। তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠই দুর্নীতিবাজ আমলা, ব্যবসায়ী-শিল্পপতি (উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গার্মেন্টস মালিক), প্রকৌশলী ও রাজনৈতিক নেতা। তাদের বেশিরভাগের বৈশিষ্ট্যগত ‘কমন ফ্যাক্টর’ হলো তাদের সিংহভাগ ‘কালো টাকার মালিক’, ভালো মানের শহুরে সম্পত্তির মালিক কিংবা শিল্প-কারখানা-ব্যবসায়ের মালিক হওয়ায় দেশের ব্যাংক ঋণ পাওয়ার ক্ষমতা রাখে। এরা দেশ অর্থনীতি ও জাতির প্রধানতম দুশমন। তারা দেশের ব্যাংকিং সিস্টেমকে অপব্যবহার করে ব্যাংক ঋণ নিয়ে তা বছরের পর বছর ফেরত না দিয়ে বিদেশে পাচার করে চলেছে। তারা ব্যাংকগুলোর ‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ হিসেবে ঋণ লুটপাটকারীর ভূমিকা পালন করছে। তারা রাজনৈতিক পরিচয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লুণ্ঠন করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ার অংশগ্রহণকারী। ৫৩ বছরের স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের ‘এক নম্বর সমস্যা’ দুর্নীতি ও পুঁজি লুণ্ঠনের মাধ্যমে তারা কালো টাকার মালিক হয়ে তাদের দুর্নীতিলব্ধ ও লুণ্ঠনকৃত অর্থ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া কিংবা দুবাইয়ে পাচার করছে। এরাই কানাডার টরন্টোর বেগমপাড়া এবং মালয়েশিয়ার সেকেন্ড হোম বানাচ্ছে। সুইস ব্যাংকে বড় বড় আমানতকারী এরাও। এদের সংখ্যা বাড়ছে দিনে দিনে। দেশে দ্বৈত নাগরিকত্বের সুবিধাও এরা গ্রহণ করছে। এরা পুঁজি পাচার করেই দেশের অর্থনীতিকে টালমাটাল অবস্থায় নিয়ে গেছে।
টাকার অবমূল্যায়ন অর্থাৎ মার্কিন ডলারের মূল্য বৃদ্ধি অর্থনীতিকে টালমাটাল করার পেছনে একটি অন্যতম কারণও। রপ্তানিকারকদের সুবিধার দেয়ার নামে টাকার অবমূল্যায়ন বারবার অব্যাহত থেকেছে। রপ্তানি যা হয় তার পুরো অর্থ কি দেশে আসে? অতি লাভ প্রাপ্তির জন্য কৌশল অবলম্বন করে থাকে দেশের রপ্তানিকারকরা। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রপ্তানি আয় দেশে না এসে আটকে পড়ে থাকে বিদেশে। দেশে এখনও আসেনি রপ্তানি আয়ের সাড়ে ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশের রপ্তানি আয়ে প্রতি অর্থবছরে বড় ধরনের পার্থক্য দেখা যায়। কয়েক বছর ধরে এ পার্থক্য বেড়ে চলেছে। গত অর্থবছর রপ্তানি আয়ে পার্থক্য ছিল প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার। আর চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) পার্থক্য দাঁড়িয়েছে সাড়ে আট বিলিয়ন ডলারের বেশি। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে এ চিত্র পরিলক্ষিত হয়।
ইপিবির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ২৭ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের উপাত্ত বলছে, এ সময় রপ্তানি আয় ছিল ১৮ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ছয় মাসে রপ্তানি আয়ে পার্থক্য দাঁড়িয়েছে আট দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার। ডলারের বিনিময় হার ১১০ টাকা ধরলে রপ্তানি আয়ে পার্থক্যের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯৪ হাজার ২৭০ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিনটি পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয়ের সমান অর্থ ছয় মাসে দেশে আসেনি।
হুন্ডি-হাওলার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রায় আয় দেশেও আসছে আবার বাইরেও যাচ্ছে। যে অর্থ দেশে আসছে তা নিয়ে আমাদের অত ক্ষোভ নেই। ক্ষোভ বেশি হলো হুন্ডি-হাওলার মাধ্যমে যে অর্থ বিদেশে যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে। আমরা এভাবে অর্থ বিদেশে যাওয়াকে অর্থপাচার বলছি, কিন্তু আমরা কমই ভেবে দেখেছি, কেন বাংলাদেশের লোকেরা কথিত এ অবৈধ পথে বিদেশে অর্থপাচার করছে। অর্থের ধরন দুই ধরনের। একটা হলো বৈধ অর্থ বা বৈধ আয় থেকে লব্ধ অর্থ। অন্যটি হলো অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ। অবৈধ অর্থকে আবার দুভাগে ভাগ করা হয়। একটা হলো অবৈধ উৎস থেকে। যেমন কেউ মাদক বিক্রয় করে যে অর্থ পাচ্ছে সেটা অবৈধ। অন্য অবৈধ অর্থ হলো উৎসটা বৈধ বটে, তবে সেই আয়ের বিপরীতে কর্তৃপক্ষকে কর দেওয়া হয়নি। তবে কর নথিতে প্রদর্শিত অর্থ সংজ্ঞা অনুযায়ীই বৈধ অর্থ। ধরে নিলাম, অবৈধ উৎস থেকে অর্জিত অর্থ বা আয় যেহেতু স্বীকৃত অর্থ বা আয় নয়, সেটা বৈধ পথে বাইরে নেওয়ার অনুমোদন দেওয়ার প্রশ্নই আসে না, কিন্তু বৈধভাবে অর্জিত অর্থকে কর দিয়ে হলেও বৈধ পথে বাইরে নেওয়ার অনুমোদন দেয়া উচিত বলে আমাদের মনে হয়। আর কর নথিতে প্রদর্শিত অর্থকে বিনা বাধায় বৈদেশিক মুদ্রায় বাইরে নেওয়ার অধিকার আয়ের মালিককে দেওয়া উচিত।
ব্যক্তির অর্থ ব্যক্তি কীভাবে কোথায় ব্যয় করবে এটা সম্পূর্ণ তার অধিকারের বিষয়। এখন আমরা যদি বৈধ পরিশোধিত কর অর্থকে নানা নিয়মকানুনে বা বিধিনিষেধ আরোপ করে আটকাতে চাই সেটা রীতিমতো অন্যায়। শেষ পর্যন্ত সৎ লোকগুলো তাদের সৎভাবে অর্জিত অর্থকে হুন্ডি-হাওলা করে বাইরে নিতে বাধ্য হয়। তাতে তাদের খরচও বেশি হয়। যে অর্থনীতিতে তারা সেই অর্থ নিচ্ছে সেই অর্থনীতিও ওই পাঠানো অর্থ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে। এক্ষেত্রে ব্যক্তির বৈধ আয়ও মানি লন্ডারিংয়ের বিধিনিষেধের আওতায় এসে যেতে পারে। আমাদের মধ্যে একটা ধারণা আছে, অর্থকে আইন করে আটকানো যায়। কিন্তু সত্য হলো, অর্থকে আইন করে আটকানো যায় না। বরং অর্থের অবাধ প্রবাহ আয়-রোজগারকে সহায়তা যেমন করে তেমনি যেসব অর্থনীতি অর্থের আসা-যাওয়াকে স্বাধীনতা দেয় ওসব অর্থনীতিতে বেশি অর্থ আসে। বাংলাদেশি যারা বিদেশ থেকে অর্থ প্রেরণ করে, তারা যদি মনে করে তারা চাইলেই সে অর্থ বিনা জিজ্ঞাসায় আবার বাইরে নিয়ে যেতে পারবে তাহলে তারা বৈধ পথেই বেশি অর্থ দেশে প্রেরণ করবে। কিন্তু তারা যখন বৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ দিয়ে দেশে একটা বাড়ি কেনে, পরে সেই বাড়ি বিক্রয় করে বিক্রয়লব্ধ অর্থ কি তারা বৈদেশিক মুদ্রায় বিনা বাধায় দেশের বাইরে পাঠাতে পারে?
বাংলাদেশে বিদেশ থেকে অর্থ আনা যত সহজ, বিদেশে অর্থ নেওয়া অতটা সহজ নয়। আজকে ব্যাংকিং ব্যবস্থা অনেকটা দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। তারপরও কিছু লোক বাইরে থেকে হুন্ডি-হাওলায় কেন তাদের আয় দেশে পাঠাচ্ছে? কারণ ভালো রেটের প্রাপ্তি আর অতিদ্রুত উপকারভোগীর কাছে অর্থকে পৌঁছে দেওয়ার নিশ্চয়তা। যাই হোক, এ হুন্ডির পরিমাণ হয়তো অত বেশি নয়। কিন্তু সমস্যা হলো, বড় বড় হুন্ডি-হাওলার মাধ্যমে বিদেশে অর্থ নেওয়াকে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংককে অর্থ নেওয়ার পথগুলোকে আরও সহজ করে দিতে হবে। অর্থপ্রবাহকে বাধা দিলে অর্থ কথিত বেআইনি পথে প্রবাহিত হবে। যে অর্থনীতি অর্থপ্রবাহের ক্ষেত্রে যত বেশি বিধিনিষেধ আরোপ করে, সেই অর্থনীতি থেকে অর্থ বাইরে যেতে চাইলে হুন্ডি-হাওলার আশ্রয় নেবেই। আবার সেই অর্থনীতিতে অর্থের আন্তঃপ্রবাহও কম হবে। কোনো অর্থনীতিতে বাইরে থেকে অর্থ বেশি প্রবাহ হয়। আবার কোনো অর্থনীতিতে কম প্রবাহ হয়।
দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী ব্যাংক পিএলসিতে গত ১৮ মার্চ মার্কিন ডলারের বিক্রয় মূল্য ছিল ১১৫ টাকা। বাইরে ১২৭ টাকা পর্যন্ত। মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণ করার মুদ্রানীতি ঘোষণা দিচ্ছে বারবার। অথচ ডলারের মূল্যকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না কেন বাংলাদেশ ব্যাংক?
মার্কিন ডলারের ওপর চাপ কমাতে প্রয়োজন কার্যকর উদ্যোগ। নতুন সরকারের দেশ পরিচালনার তিন মাস সময় অতিক্রম করল। প্রয়োজন চাপের মুখে থাকা দেশ অর্থনীতির সূচকগুলোকে ইতিবাচক অবস্থায় আনতে সত্যিকারভাবে কাজ করা। ডলারের ওপর নির্ভরতা কমতে হবে সবার আগে। এজন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য লেনদেন নিষ্পত্তিতে দ্বিপাক্ষিক মুদ্রার ব্যবহার জরুরি। প্রবাসী বাংলাদেশীদের অর্থ বৈধ পথে পাঠাতে প্রণোদনা বৃদ্ধি করতে হবে। হুন্ডি এবং অর্থপাচার রোধে সতর্কমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ কাম্য। পাচারকৃত দেশের অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেমন প্রয়োজন, তেমনি দোষীদের শান্তি আওতায় আনা জরুরি। দেশের অর্থনীতিতে সুশাসন নিশ্চিতকরণে সভা-সেমিনার হয়। কিন্তু তা কার্যকর হয় না। সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হলেই সমস্যার প্রায় সমাধান হয়ে যায়। তাতে অর্থনীতিও স্বস্তি পায়। ডলার বেশি বেশি আসুক দেশে। কিন্তু অবৈধ পথে যেন তা না চলে যায়। কেননা তা অর্থনীতির জন্য নয় মঙ্গলজনক।