ন্যায়পাল পদের মূল উদ্দেশ্য হলো সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে কাজের সমতা, সততা ও স্বচ্ছতা বিধান এবং সুনির্দিষ্টভাবে প্রশাসনের যে কোনো ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের গতিবিধির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ।
Published : 26 Aug 2024, 05:48 PM
গত ৮ অগাস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরে সুনির্দিষ্টভাবে কয়েকটি দাবি জানিয়েছিলাম। এর মধ্যে দুটি ছিল এরকম:
১. যেহেতু আগের সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের প্রধান অভিযোগ বা ক্ষোভ ছিল লাগামহীন দুর্নীতি (বিশেষ করে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের) এবং অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে যারা নিয়োগ পেয়েছেন, তারা সমাজে দুর্নীতিমুক্ত মানুষ হিসেবে পরিচিত— অতএব তারা নিজেদের সম্পদের বিবরণটা প্রথমে প্রকাশ করবেন, যাতে তারা চলে যাওয়ার পরে মিলিয়ে দেখা যাবে যে, দায়িত্বে থাকাকালীন তাদের সম্পদ কী পরিমাণ বেড়েছে। যদি কারও বিবরণ সন্দেহজনক মনে হয় তা নিয়ে অনুসন্ধান হবে।
এরপর লিখেছিলাম যে, ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী আইন অনুযায়ী প্রত্যেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিতে যোগদানের শুরুতেই এবং প্রতি বছর তাদের নিজেদের এবং পরিবারের সদস্যদের (স্বামী-স্ত্রী-সন্তান) সম্পদের বিবরণ প্রকাশ করতে হবে। এটা আইনত বাধ্য করতে হবে। কেননা সম্পদের হিসেব দেয়ার বিষয়ে আইনি বাধ্যবাধকতা না থাকায় ১৯৭৯ সালের ওই আইনের বিধান কেউ প্রতিপালন করেননি। কোনো সরকারই এই বিধানটি কার্যকর করার ক্ষেত্রে আন্তরিক ছিল না।
২. সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী একজন ‘ন্যায়পাল’ নিয়োগ দিতে হবে— যাতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের ক্ষমতার রাশ টেনে ধরা সম্ভব হয়। অর্থাৎ যাতে তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা যায়।
আশার সংবাদ হলো, রোবার (২৫ অগাস্ট) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এই দুটি বিষয় উল্লেখ করে বলেছেন যে, অন্তর্বর্তী সরকারের সব উপদেষ্টা দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের সম্পদের বিবরণ প্রকাশ করবেন। পর্যায়ক্রমে এটি সব সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রেও নিয়মিত এবং বাধ্যতামূলক করা হবে। দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদে প্রতিশ্রুত ন্যায়পাল নিয়োগে অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা হবে।
স্মরণ করা যেতে পারে, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ন্যায়পাল পদ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিল। ১৯৯৮ সালের জুনে প্রস্তাবও তৈরি করা হয়। ন্যায়পাল ও তার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, অফিস খরচ, গাড়ি ও আনুষঙ্গিক খাতে ব্যয়সংবলিত আর্থিক প্রস্তাব পাঠানো হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ে। ন্যায়পালের দপ্তরের জন্য ১২৭টি পদের প্রস্তাব করা হয়। অর্থ ও সংস্থাপন মন্ত্রণালয় ৩৫টি পদ অনুমোদন করে। কিন্তু সংসদ সচিবালয় দীর্ঘ ছয় মাস ফাইলটি আটকে রাখার পর আইন মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠায়। সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব নোটে উল্লেখ করেন, ‘উল্লিখিত আইনটি প্রণয়নের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত কোনো বিবৃতি নেই। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং নেই। এমনকি মন্ত্রীর স্বাক্ষরও নেই। অতএব ফাইলটি ফেরত পাঠানো হলো।’ এরপর আর ন্যায়পাল নিয়োগ-সংক্রান্ত কার্যক্রম এগোয়নি। এরপর ২০১৮ সালে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করার সময় দুর্নীতি দমন কমিশনও দেশের স্বার্থে ন্যায়পাল প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছিল। কিন্তু সেটিও আর আলোর মুখ দেখেনি।
প্রশ্ন হলো ন্যায়পাল কী, কে হবেন দেশের প্রথম ন্যায়পাল এবং ন্যায়পালের কাজ কী? তার আগে একটু পেছনে যেতে হবে।
১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদে গৃহীত প্রথম সংবিধানেই ন্যায়পালের বিধান যুক্ত করা হয়। সংবিধান প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সাচিবিক দায়িত্ব পালনকারী অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান তার আত্মজীবনীতে (‘বিপুলা পৃথিবী’) লিখেছেন, কীভাবে Ombudsman শব্দের বাংলা ন্যায়পাল করা হয়েছিল।
মূলত সংবিধানের খসড়া প্রণয়নের জন্য গঠিত ৩৪ সদস্যের কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, খ্যাতিমান আইনজীবী এ. কে মোশাররফ হোসেন আকন্দ সংবিধানে ‘ন্যায়পাল’ পদ সৃষ্টির বিধান যুক্ত করার পরামর্শ দেন। তার ছেলে মাসুদ আলম আকন্দ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আব্বাকে বলেছিলেন, আকন্দ সাহেব আপনি হবেন আমার প্রথম ন্যায়পাল।’
কী আছে সংবিধানে?
সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে: (১) সংসদ আইনের দ্বারা ন্যায়পালের পদ-প্রতিষ্ঠার জন্য বিধান করিতে পারিবেন। (২) সংসদ আইনের দ্বারা ন্যায়পালকে কোনো মন্ত্রণালয়, সরকারি কর্মচারী বা সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের যেকোনো কার্য সম্পর্কে তদন্ত পরিচালনার ক্ষমতাসহ যেরূপ ক্ষমতা কিংবা যেরূপ দায়িত্ব প্রদান করিবেন, ন্যায়পাল সেইরূপ ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করিবেন। (৩) ন্যায়পাল তাহার দায়িত্বপালন সম্পর্কে বাৎসরিক রিপোর্ট প্রণয়ন করিবেন এবং এই অনুরূপ রিপোর্ট সংসদে উপস্থাপিত হইবে।
বাস্তবতা হলো, সংবিধানে এই বিধান যুক্ত করার গত ৫২ বছরেও একজন ন্যায়পাল নিয়োগ করা সম্ভব হয়নি। উপরন্তু জাতীয় সংসদে ১৯৮০ সালে ন্যায়পাল আইন পাস হয়েছিল। কিন্তু সেখানে ন্যায়পালকে এমন একজন দুর্বল ব্যক্তিতে পরিণত করা হয়েছে যে, কার্যত তার পক্ষে সংবিধানের বিধান মেনে কোনো দায়িত্ব পালনই সম্ভব নয়। যে কারণে এখন সরকার যে ন্যায়পাল পদ সৃষ্টির কথা বলছে, সেটি করতে হলে আগে ওই আইনটি বাতিল করতে হবে এবং অধ্যাদেশ জারি করে ন্যায়পালকে সত্যিই একজন ক্ষমতবান ব্যক্তিতে পরিণত করতে হবে।
ন্যায়পাল কী?
বাংলায় ন্যায়পাল বলা হলেও এটি নেওয়া হয়েছে সুইডিশ শব্দ Ombudsman থেকে। যার সহজ অর্থ প্রতিনিধি বা মুখপাত্র। অর্থাৎ ন্যায়পাল হচ্ছেন এমন একজন মানুষ যিনি অন্যের জন্য কথা বলেন বা অন্যের প্রতিনিধিত্ব করেন।
ন্যায়পাল ধারণার উৎপত্তির পেছনে রয়েছে নাগরিক অধিকারকে প্রশাসনের দুর্নীতির হাত থেকে মুক্তি দেয়া। অর্থাৎ সরকারি কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা ও সশস্ত্র বাহিনী এবং বিচার বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা দেশের আইন সঠিকভাবে পালন করছেন কিনা; নাগরিকরা তাদের দ্বারা কোথাও হয়রানির শিকার হচ্ছেন কিনা ইত্যাদির ব্যাপারে অভিযোগ তদন্তকারী দপ্তর হিসেবে কাজ করার জন্যই ন্যায়পাল ধারণার সৃষ্টি।
মূলত আমলা ও সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ন্যায়পাল থাকেন স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও অভিগম্য বা যার কাছে সহজে পৌঁছানো যায়। বিভিন্ন ধরনের অভিযোগের তদন্ত এবং সে সম্পর্কে রিপোর্ট পেশ করার ক্ষমতা ন্যায়পালের ওপর অর্পিত থাকে।
ন্যায়পালের কার্যাবলির মধ্যে রয়েছে বেসরকারি প্রশাসন ও আদালতগুলোর কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করা। তাকে বেআইনি কার্যকলাপ, কর্তব্যে অবহেলা ও ক্ষমতার অপপ্রয়োগের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্ত করতে হয়। বিশেষভাবে প্রতারণামূলক অপরাধ ও ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ন্যায়বিচারের পরিপন্থী কার্যকলাপের প্রতি তাকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হয়। যেকোনো দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সংবিধানের বিধি বা দেশের আইন লঙ্ঘন কিংবা প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিধিবদ্ধ নিয়মকানুন ভঙ্গ করলে ন্যায়পাল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।
সাধারণভাবে ন্যায়পাল পদের মূল উদ্দেশ্য হলো সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে কাজের সমতা, সততা ও স্বচ্ছতা বিধান এবং সুনির্দিষ্টভাবে প্রশাসনের যেকোনো ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের গতিবিধির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ; সরকারি কর্মকর্তারা যাতে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে নীতিবিচ্যুত না হন তার প্রতি দৃষ্টি রাখা। একটি সৎ দক্ষ কর্মপরায়ণ নির্বাহী বিভাগ গঠন করতে ন্যায়পাল বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারেন।
ন্যায়পাল কে হবেন?
ন্যায়পালের কয়েকটি বিশেষ গুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকা প্রয়োজন। যেমন তাকে হতে হয় স্বাধীনচেতা, সাহসী, সৎ, দলনিরপেক্ষ, সরকার তথা রাষ্ট্র কাঠামো সম্পর্কে গভীর জ্ঞানের অধিকারী এবং প্রশাসনিক দক্ষতাসম্পন্ন। প্রশ্ন হলো এমন মানুষ আমরা কোথায় পাব? অথবা ১৮ কোটি লোকের দেশে কি এমন একজন মানুষ নেই যাকে ন্যায়পাল বানানো যায়?
ন্যায়পালের যে কাজ, তাতে এই পদে নিয়োগ দিতে হবে এমন একজন মানুষকে যিনি দলমত নির্বশেষে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য; যার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের কোনো গুরুতর অভিযোগ নেই; যিনি রাষ্ট্রকাঠামো তথা প্রশাসনিক পদ্ধতিগুলো জানেন এবং ন্যায়পাল যেহেতু একজন বিচারক—অতএব তিনি হবেন এমন একজন ব্যক্তিত্ব যিনি দলমত এমনকি আত্মীয়-পরিজন নির্বিশেষে সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সক্ষম। এমন মানুষ কি আমাদের দেশে নেই?
ন্যায়পাল হওয়ার মতো অনেক মানুষ নিশ্চয়ই আছেন। চট করে আপনার মাথায়ও হয়তো কিছু মানুষের নাম ঘুরপাক খাচ্ছে। আপনি হয়তো ভাবছেন কয়েকজন খ্যাতিমান আইনজীবী, সাবেক বিচারপতি, শ্রদ্ধেয় শিক্ষক—এরকম অনেকের কথা। কিন্তু তাদের কতজন এই পদে আসতেন চাইবেন; তাদের বয়স তথা শারীরিক অবস্থা কতটা চাপ সামলাতে পারবে সেটা যেমন একটা চ্যালেঞ্জ, তেমনি সেই মানুষগুলোকে খুঁজে বের করাও কঠিন। অথবা কঠিন নয়।
অন্তর্বর্তী সরকার ন্যায়পাল ইস্যুতে একটা অধ্যাদেশ জারির পরে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে নাম আহ্বান করতে পারে। একটি নির্দিষ্ট ই-মেইলে নাম জমা দেয়ার জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করে দিতে পারে। তাহলে হয়তো অনেকগুলো নাম পাওয়া যাবে। যেখান থেকে যাচাই-বাছাই করে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা করে প্রত্যেকের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা যায়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের এক সপ্তাহের মধ্যে উল্লিখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে সেগুলো যাচাই বাছাই করে একটি গণশুনানির মধ্য দিয়ে একজনকে ন্যায়পাল নিয়োগ করা যায়।
ন্যায়পাল ইস্যুতে সব সরকার কেন নির্লিপ্ত ছিল?
সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার আলোকে ন্যায়পাল পদ সৃষ্টির জন্য একটি আইন করা হলেও এবং বিভিন্ন সময়ে এই আইনের আলোকে ন্যায়পাল পদ সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হলেও এগুলোকে আসলে ‘আইওয়াশ’ মনে হয়েছে। তাছাড়া বিদ্যমান আইনে প্রদত্ত ক্ষমতা ও এখতিয়ার বলে কোনো ন্যায়পালের পক্ষে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে জবাবদিহির আওতায় আনাও সম্ভব নয়। কেননা এই আইনের প্রয়োগ করে ন্যায়পাল আদতে কোনো ক্ষমতাই প্রয়োগ করতে পারবেন না। সুতরাং ন্যায়পাল পদ সৃষ্টির আগে এই আইন বাতিল বা সংশোধন করে সুইডেন, নরওয়ে এমনকি ভারতের আদলে এমন একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে, যারা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ যে কাউকে জবাবদিহির আওতায় আনতে পারবে। ন্যায়পাল যদি স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে না পারেন, তাহলে এরকম একটি পদ সৃষ্টির কোনো মানে নেই।
আইনজীবী শাহদীন মালিকের ভাষায়, ন্যায়পালের কাজ হলো নির্বাহী বিভাগের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঠিকমতো কাজ করছেন কি না সেটা তদারকি করা। কিন্তু আমাদের দেশের আমলারা এত শক্তিশালী যে, তারা নিজেদের ওপর কারও খবরদারি সহ্য করেন না। আর এ কারণেই গত প্রায় ৫০ বছরেও ন্যায়পাল নিয়োগে উদ্যোগ নেয়নি সরকার। তিনি বলেন, বিষয়টি যেহেতু সময় দিয়ে বাধ্যতামূলক হয়নি তাই এই সুযোগ সরকার নিচ্ছে। আর আমলাতন্ত্রের দাপটের কারণে সরকার এই উদ্যোগ নেবে কি না সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। তিনি বলেন, বিচার বিভাগও তো স্বাধীন হওয়ার কথা, সেটা তো হয়নি (কালের কণ্ঠ, ৩ জুলাই, ২০১৬)।
সবচেয়ে বড় কথা, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান হতে গেলেও বিগত বছরগুলোয় যেরকম দলীয় আনুগত্যের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়েছে, সেখানে ন্যায়পাল নিয়োগের জন্য একজন দলনিরপেক্ষ লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন ছিল। কিন্ত পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে নিশ্চয়ই এমন একজন দক্ষ, সৎ, দেশপ্রেমিক ও নিরপেক্ষ এবং সর্বোপরি সাহসী মানুষকে পাওয়া কঠিন হবে না, যার নেতৃত্বে ‘ন্যায়পাল’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালু করা সম্ভব।
আরও পড়ুন:
কী কী সংস্কার করতে চান মুহাম্মদ ইউনূস