ত্বক ভেজা থাকা ও আঁটসাঁট পোশাকের কারণে র্যাশ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
Published : 05 Mar 2024, 04:19 PM
সাধারণত দেহের আর্দ্র স্থানে বা ত্বকের সাথে ত্বকের ঘন ঘন ঘর্ষণ হয় এমন জায়গায় র্যাশ বা ফুসকুড়ি দেখা দেয়। যেমন- উরুর ভেতরে পাশ অথবা কুঁচকিতে।
ঘর্ষণ ও আর্দ্রতা ব্যাক্টেরিয়া ও ফাঙ্গাসের সংক্রমণ বাড়ায়। ফলে সহজেই র্যাশ দেখা দিতে পারে।
র্যাশ হওয়ার কারণ
হেল্থশটস ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতের ‘ক্লাউড নাইন হসপিটাল’য়ের স্ত্রীরোগ-বিশেষজ্ঞ জ্যেষ্ঠ পরামর্শক ডা. রিতু সেথি উরুতে র্যাশ হওয়ার নানান কারণ সম্পর্কে জানান।
সুগন্ধি পণ্য: লোশন বা সাবানের ব্যবহৃত সুগন্ধি র্যাশ তৈরি অন্যতম কারণ। এতে থাকে কড়া রাসায়নিক উপাদান বা সুগন্ধি ত্বকের সংবেদনশীল অংশে জ্বলুনির সৃষ্টি করে। ফলে লালচেভাব, চুলকানি ও ফুসকুড়ি দেখা দেয়।
ঘর্ষণ: ঘর্ষণের কারণেও উরুর ভেতরের অংশে র্যাশ দেখা দেয়। বিশেষ করে যাদের আঁটসাঁট পোশাক পরার বা ঘন ঘন চলাফেরার প্রবণতা থাকে।
আর্দ্রতা যেমন- ঘাম এই পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে নিয়ে যায়। এতে ফাঙ্গাস ও ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ বাড়ে।
সংবেদনশীল ত্বক: সংবেদনশীলতার কারণেও অভ্যন্তরীণ উরুতে র্যাশ দেখা দেয়। বিশেষ করে আবহাওয়া পরিবর্তনের সময়।
তাপমাত্রার ওঠানামা এবং আর্দ্রতা ত্বকের সুরক্ষা স্তরে বাধা সৃষ্টি করে। যে কারণে ত্বকে জ্বলুনি দেখা দেয়। যাদের ত্বক সংবেদনশীল তারা সাধারণত গরম অথবা আর্দ্র আবহাওয়াতে ঘনঘন র্যাশের সমস্যায় ভোগেন।
অপরিস্কার রেইজর ব্যবহার: অপরিস্কার রেইজর দিয়ে দেহের অবাঞ্ছিত লোম অপসারণ করলে ত্বকে ব্যাক্টেরিয়া ও অন্যান্য অণুজীবের সংক্রমণ বাড়ে। ফলে ত্বকে ছোট ছোট ‘বাম্প’ বা রক্তস্ফোট দেখা দেয়।
আঁটসাঁট পোশাক: আঁটসাঁট পোশাক পরলে ত্বকে ঘর্ষণের সৃষ্টি হয়। যা আর্দ্রতা ধরে রাখে। ফলে অণুজীবের বিস্তার ঘটে এবং জ্বলুনি ও র্যাশ দেখা দেয়। সিন্থেটিক তন্তু যেমন- পলেস্টার বা নাইলনের কাপড় ব্যবহারে ত্বকে আলো বাতাস চলাচল করতে পারে না। যে কারণে এই ধরনের সমস্যার তীব্রতা বাড়ে।
রক্ষা পাওয়ার ঘরোয়া উপায়
অ্যালোভেরা জেল: ব্যাক্টেরিয়া ও প্রদাহনাশক উপাদান সমৃদ্ধ যা চুলকানি ও জ্বলুনি কমিয়ে আরাম প্রদানের সহায়তা করে। এতে ত্বক আরাম পাওয়ার পাশাপাশি দ্রুত আরোগ্য লাভ করে।
নারিকেল তেল: এতে আছে অ্যান্টিসেপ্টিক এবং আর্দ্রতা রক্ষাকারী উপাদান। এটা ত্বকের জ্বলনি ও অস্বস্তি কমাতে সহায়তা করে। আলতোভাবে অল্প পরিমাণে নারিকেল তেল আক্রান্ত স্থানে ব্যবহারে আরাম পাওয়া যায়।
বেইকিং সোডা: এর সাথে পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে র্যাশের ওপর ব্যবহার করা যায়। এতে আছে ব্যাক্টেরিয়া-নাশক উপাদান যা ত্বকের চুলকানি ও প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে।
গোসলের সময় বেইকিং সোডা মেশানো পানি ব্যবহারে ত্বক আর্দ্র থাকে এবং র্যাশের যন্ত্রণা থেকে প্রশান্তি পাওয়া যায়।
টি ট্রি অয়েল: বাহক তেল যেমন- নারিকেল বা জলপাই তেলের সাথে টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে র্যাশের ওপর ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়। এতে আছে ব্যাতেক্টরিয়া নাশক উপাদান যা ত্বকের জ্বলুনি ও প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে।
আরও পন্থা
ঠাণ্ডা-চাপ অথবা বরফের প্যাকেট তোয়ালে দিয়ে পেঁচিয়ে আক্রান্ত স্থানে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ধরলে চুলকানো ও অস্বস্তি হ্রাস পায়।
পর্যাপ্ত পানি পান ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা করে আর দ্রুত সেরে উঠতে সহায়তা করে।
মৃদু সাবান দিয়ে আক্রান্তস্থান পরিষ্কার করে তোয়ালে দিয়ে আলতোভাবে মুছে নিতে হবে।
ঢিলেঢালা ও বায়ু চলাচল করে এমন কাপড়, যেমন- সুতির পোশাক পরা জ্বলুনি কমাতে সহায়তা করে।
গোসলের পরে ট্যালকম পাউডার ব্যবহার বা কর্নস্টার্চ ব্যবহারে বাড়তি আর্দ্রতা শোষণ করে এবং ঘর্ষণের পরিমাণ কমাতে পারে।
সুগন্ধি সাবান বা নির্দিষ্ট তন্তু ব্যবহারে র্যাশ হলে সেগুলো বাদ দিতে হবে।
‘অ্যান্টিফাঙ্গাল’ বা ‘হাইড্রোকর্টিজন’ ক্রিম ব্যবহার র্যাশের চুলকানি ও জ্বলুনি কমাতে পারে।
ছবি: পেক্সেলস্ ডটকম।
আরও পড়ুন