গরম, ঘাম ছাড়াও নানান কারণে ত্বকে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
Published : 31 Jul 2023, 01:35 PM
বাহুমূল চুলকালে ও লালচেভাব দেখা দিলে বুঝতে হবে ‘র্যাশ’ বা ফুসকুড়ি হয়েছে। এটা যেমন অস্বস্তি সৃষ্টি করে তেমনি কষ্টকর।
হেল্থশটস ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতীয় ত্বক বিশেষজ্ঞ ও কসমেটোলজিস্ট ডা. উর্বি পাঞ্চাল এই সম্পর্কে বলেন, “কেবল গরম বা আর্দ্রতাই নয় আরও অনেক কারণেই বাহুমূলে র্যাশ দেখা দেয়।”
ইন্টারট্রাইগো: এই প্রদাহজনক অবস্থা ত্বকে ঘষার ফলে সৃষ্টি হয়। তাপ ও আর্দ্রতা বাড়ার ফলে এর মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং দেখতে লালচে দানার মতো হয়।
ঘামের কারণে আর্দ্রতা ত্বকের উপরিভাগের ভাঁজে আটকে যায় এবং ঘষা লাগার ফলে প্রদাহ ও ক্ষত সৃষ্টি হয়।
ডার্মাটাইটিস: ত্বকে অ্যালার্জি বা জ্বালাপোড়া দেখা দেওয়া ‘কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস’য়ের লক্ষণ। এই অ্যালার্জি কয়েক ঘন্টার মধ্যে বিস্তার লাভ করে এবং ত্বকে চুলকানি, লালচেভাব ও জ্বলুনি দেখা দেয়।
‘কনটাক্ট ডার্মাটাইটিস’য়ের কয়েকটি কারণ- * ডিটারজেন্ট বা সাবান ও ব্যাক্তিগত প্রসাধনী যেমন- ডিওডোরেন্ট ও ট্যালকম পাউডারে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদান * পারিবেশিক অ্যালার্জেন * ওষুধ * পোকামাকড়ের কাপড় বা হুল।
দাদ সংক্রমণ: দাদ বা ‘রিংওয়ার্ম’ সংক্রমণ দেহে ফাঙ্গাসের কারণে হয়ে থাকে। এটা সাধারণত চুলকানিযুক্ত, গোলাকার র্যাশ- যার ভেতরের অংশ পরিষ্কার। এমন গোলার আকারের হওয়ায় এতে কোনো প্রকার কৃমি না থাকার পরেও তা ‘রিংওয়ার্ম’ নামে পরিচিত।
এটা সাধারণত বাহুমূলে দেখা যায় এবং ঘামের কারণেই এমনটা বেশি হয়ে থাকে।
সেবোরিয়েক ডার্মাটাইটিস: এটা ত্বকের ওপরের স্তরের প্রদাহ। এই অবস্থায় ত্বক লালচে ও খসখসে হয়ে যায়।
অনেকসময় এটা বংশগত কারণে হয়ে থাকে। আর হরমোনের পরিবর্তনের কারণে ও ঠাণ্ডা আবহাওয়াতে মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
মিলিয়ারিয়া: এটা সাধারণত ত্বকের সমস্যা যা ‘এক্রাইন’ ঘামগ্রন্থি আবদ্ধ হলে ও প্রদাহের কারণে হয়ে থাকে। এই সমস্যা অধিকাংশ ক্ষেত্রে গরম, আর্দ্র ও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ুতে দেখা যায়।
এটা ‘হিট র্যাশ’ বা ঘামাচি নামে পরিচিত।
হেড্রাডিনাইটিস সুপ্রাটাইভা: এটা ত্বকের এমন অবস্থা যেখানে ব্যথাদায়ক পিণ্ড সৃষ্টি হয় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা বাহুমূলের মতো অংশে দেখা দেয় এটা ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে।
সমাধান
সমস্যা চিহ্নিত করার জন্য ত্বক বিশেষজ্ঞের সহায়তা গ্রহণ করতে হবে। যদি ফাঙ্গাসের কারণে র্যাশ হয়ে থাকে তাহলে ফাঙ্গাস-রোধী ক্রিম ব্যবহার করা যায়।
অ্যালার্জির কারণে এমনটা হয়ে থাকলে সুদিং লোশন’য়ে এর সমাধান পাওয়া যায় বলেন জানান এই বিশেষজ্ঞ।
ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। ডিওডোরেন্ট পরিবর্তনের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়।
সমস্যা এড়াতে
সমস্যার কারণ খুঁজে বের করা ও যতটা সম্ভব অ্যালার্জেন এড়িয়ে চলতে হবে।
সুগন্ধি ও ঘ্রাণমুক্ত প্রসাধনী ব্যবহার।
নিয়মিত কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করা ও যতটা সম্ভব পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা।
গরমে বা শরীরচর্চা করার সময় ‘অ্যান্টি চেইফিং’ পাউডার ব্যবহার।
সঠিক মাপের পোশাক ও অন্তর্বাস পরা জরুরি।
কাপড় ও বিছানার চাদর ঘন ঘন পরিষ্কার করতে হবে।
মাটি, প্রাণী ও গাছপালার স্পর্শের পরে ভালো মতো হাত ধুয়ে নিতে হবে।
বাহুমূলে যে কারও র্যাশ হতে পারে। সমস্যার কারণ খুঁজে এর সমাধানের জন্য সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
আরও পড়ুন
বাহুমূলের নিচের অংশ স্বাভাবিক রাখতে প্রাকৃতিক উপাদান