সময়ের মধ্যে আয়কর বিবরণী জমা না দিলে এবার জরিমানার পরিমাণ বেশি।
Published : 19 Nov 2023, 12:15 PM
কর দিবসের মধ্যে আয়কর রিটার্ন বা বিবরণী দাখিল করতে ব্যর্থ হলে গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ হারে জরিমানা দিতে হবে।
তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করে বাড়তি জরিমানা পরিহার করার যায়।
এই বিষয়ে কর পরামর্শক, প্রশিক্ষক ও ‘ট্যাক্স রিটার্ন প্রিপারেশন: কমপ্লিট গাইড ২০২৩’ বইয়ের লেখক জসীম উদ্দিন রাসেল বলেন, “আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ বাতিল হয়ে এ বছর থেকে আয়কর আইন ২০২৩ বাস্তবায়ন হয়েছে এবং এর ফলে ব্যক্তি করদাতার আয়কর গণনাসহ ট্যাক্স রিটার্ন জমার ক্ষেত্রে উল্লেখ্যযোগ্য কিছু পরিবর্তন এসেছে।”
আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি করদাতা যদি কর দিবস অর্থাৎ ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে ব্যর্থ হতেন তাহলে মাসিক ২% সুদ দিতে হতো। এই সুদ বকেয়া করের ওপর গণনা করে রিটার্ন দাখিল করার সময় চালানের মাধ্যমে জমা দিতে হত।
তবে আয়কর আইন ২০২৩ অনুযায়ী এই বছর থেকে ২% এর পরিবর্তে মাসিক ৪% করে সুদ দিতে হবে।
এখানে উল্লেখ্য, কোনো মাসের ভগ্নাংশও এক মাস হিসেবে বিবেচিত হবে। যেমন- কোনো করদাতা ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করতে পারেননি। পরে তিনি ডিসেম্বর মাসের ০৭ তারিখে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন। এক্ষেত্রে এক মাসের জন্য ৪% করে সুদ দিতে হবে।
আবার ধরুন, কোনো করদাতা জানুয়ারি মাসের ১৬ তারিখে রিটার্ন দাখিল করেছেন তাহলে দুই মাসের জন্য ৪% করে বকেয়া করের ওপর সুদ দিতে হবে।
এখানে একটা প্রশ্ন জাগতে পারে, আগের আইন অনুযায়ী কর দিবসের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করতে না পারলে বর্ধিত সময়ের জন্য উপকর কমিশনারের কাছে আবেদন করতে হত। এখনও কি আবেদন করতে হবে?
রাসেল বলেন, “না, এখন থেকে আর আবেদন করার প্রয়োজন নেই। যে কোনো সময় রিটার্ন দাখিল করা যাবে ৪% সুদ দিয়ে।”
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করতে না পারলে আরেকটা বড় যে আর্থিক ক্ষতি হতে পারে তাহল- কোনো করদাতার যদি কর অব্যাহতিজনিত কোনো আয় থাকে তাহলে তা বাতিল হয়ে যাবে এবং উক্ত আয়ের ওপরেও নিয়মিত হারে কর প্রযোজ্য হবে।
যেমন- একজন ব্যক্তি করদাতা যদি এমন কোনো আইটি সেবা দিয়ে থাকেন যা আয়কর আইনে কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া আছে তাহলে কর দিবসের মধ্যে রিটার্ন দাখিল না করার জন্য ওই আয় এখন থেকে সম্পূর্ণ করযোগ্য আয় হিসেবে গণ্য হবে।
অর্থাৎ কর দিবসের পরে তিনি যদি রিটার্ন দাখিল করেন তাহলে কর অব্যাহতি বাতিল হয়ে সম্পূর্ণ আয়ের ওপর নিয়মিত হারে কর দিতে হবে।
তাই আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে কর দিবসের পূর্বে আয়কর রিটার্ন দাখিল করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। এতে জরিমানার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।