স্থূলতা যেমন শিশুর জন্য বিপজ্জনক, অতিরিক্ত কম ওজনও সমান ঝুঁকিপূর্ণ।
তাই শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করতে তার ওজন সম্পর্ক সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
টাইমসঅবইন্ডিয়া ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতের অবস্থিত ‘অ্যাস্টার আরভি’ হাসপাতালের শিশু-বিষয়ক হরমোন-জনিত রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নম্রতা উপাধ্যয়া ‘কম ওজন’ শব্দটা শিশুর চিকন বা অবকাঠামোগত ভাবে শুকনা বলে সংজ্ঞায়িত করেন।
শিশুর ওজন, তার বয়স ও লিঙ্গ অনুযায়ী বিএমআই ইনডেক্সের চেয়ে পাঁচ শতাংশ কম হলে বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন, তিনি।
স্থূলতার মতো শিশুর কম ওজনও দুশ্চিন্তাজনক। শিশুরা প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকে তাই তাদের বৃদ্ধি সঠিক হারে হচ্ছে কি-না তা পর্যবেক্ষণ করার পরামর্শ দেন ডা. উপাধ্যয়া।
অপুষ্টি
ডা. উপাধ্যয়া বলেন, “অস্বাস্থ্যকর খাবার, পর্যাপ্ত ক্যালরির অভাব, স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কে সচেতনতার অভাব, পুষ্টির চাহিদা বা পুষ্টি শোষণের অভাবে শিশুর ওজন কম হতে পারে।”
তার মতে, অপুষ্ট শিশু দেখতে অনেক চিকন হয়। গাল, বাহু, নিতম্বে চর্বি হারাতে থাকে। আর সুস্থ শিশুর তুলনায় দেখতে মলিন ও কম প্রাণচঞ্চল লাগে।
খেতে না পারা, দীর্ঘদিন ডায়রিয়া, বমি, পেট ফোলা, দীর্ঘমেয়াদী ঠাণ্ডা, শ্বাসকষ্ট, থাইরয়েড বা আড্রিনাল গ্রন্থি সম্পর্কিত হরমোনের সমস্যা, ডায়াবেটিস বা স্নায়ুবিক জটিলতা ইত্যাদির কারণে খেতে না পারা, গিলতে বা চিবিয়ে খেতে সমস্যা হওয়ার কারণে অপুষ্টিতে ভুগতে পারে শিশু।
অভিভাবকের কারণে
শিশুর কম ওজন নিয়ে জন্মানোর পেছনে অনেকক্ষেত্রে বাবা মায়ের বিশেষত মায়ের স্বাস্থ্য ভূমিকা রাখে।
মা সুস্থ না থাকলে শিশু অপরিপক্ক বা কম ওজন নিয়ে জন্মায়।
ডা. উপাধ্যয়া ব্যাখা করেন, “যেমন- গুরুতর কোনো অসুস্থতা থাকলে সাধারণত শিশুর ওজন সম্পর্কে প্রথম দুই বছরের মধ্যেই ধারণা পাওয়া যায়। তবে অনেকের বংশগত কোনো জটিলতা থাকলে, প্রথম অবস্থায় বোঝা যায় না।”
বংশগতি
অনেকক্ষেত্রে শিশুর কোনো গুঢ় কারণ ছাড়াই ওজন কম হতে পারে।
এই চিকিৎসক বলেন, “যদিও শারীরিক বৃদ্ধি বংশগতির ওপর নির্ভর করে। তবে অনেক ক্ষেত্রে শিশু অজ্ঞাত কারণেও চিকন হতে পারে। বিষয়টা উদ্বেগজনক মনে হলে শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ভালো। এতে করে সহজে শিশুর রোগ নির্ণয় করা যাবে।”
বলা হয়, কোনো শিশু একই বয়সের অন্যান্য শিশুদের তুলনায় বৃদ্ধি কম, দীর্ঘস্থায়ী রোগ, প্রায় অসুস্থ থাকা, অপ্রাপ্ত বয়সে জন্মানো বা কম ওজন নিয়ে জন্মে থাকে তাহলে তার বৃদ্ধি সঠিক মূল্যায়ণ ও সুস্থ নিশ্চিত করতে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
পরামর্শ দিয়ে ডা. উপাধ্যয়া বলেন, “নিয়মিত শিশুকে ডাক্তার দেখানো ও তার বৃদ্ধি তালিকাভুক্ত করে রাখা জরুরি। শিশুর কম ওজন যদি অপুষ্টির কারণে হয়ে থাকে তাহলে শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে খাবার তালিকা মেনে চলতে হবে।”
আর যদি কোনো অসুস্থতার কারণে ওজন কম হয়, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তার চিকিৎসা চালাতে হবে।
আরও পড়ুন