তীব্র বাতাস ত্বকে পোড়াভাব আনে

ঠাণ্ডা বাতাসে ত্বকে খসখসেভাব, লালচে বা কালচে বর্ণ ধারণ করলে সারিয়ে তোলার রয়েছে উপায়।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2023, 10:07 AM
Updated : 29 Jan 2023, 10:07 AM

শুধু রোদের কারণে নয়, ঠাণ্ডা বাতাসেও ত্বক পুড়তে পারে।

ফলে ত্বক অনেকসময় লালচে এমনকি কালচে বর্ণের হয়ে যায়।

নিউ ইয়র্ক’য়ের ত্বক বিশেষজ্ঞ ডা. ডেন্ডি এঙ্গেলম্যান ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “অধিকাংশ মানুষই মনে করেন, শীতে ত্বক কালো হয়ে গেছে। এই ধারণা সব সময় সত্যি না-ও হতে পারে। জোরে বাতাসের কারণে ও তীব্র ঠাণ্ডায় ত্বকে পোড়াভাব দেখা দেয়, যা ‘উইন্ডবার্ন’ নামে পরিচিত।”

‘উইন্ডবার্ন’ বলতে যা বোঝায়

ফুরফুরে মৃদু মন্দ বাতাস আরাম অনুভব করায়। তবে দমকা বাতাস বিশেষত কম তাপমাত্রায় তা ত্বকে পোড়াভাবের সৃষ্টি করে।

ডা. এঙ্গেলম্যান বলেন, “কম তাপমাত্রা ও কম আর্দ্র পরিবেশে বাতাসের কারণে পোড়াভাব দেখা দেয়। এতে ত্বক লালচেভাব ও জ্বলুনি অনুভূত হয়।”

তিন ব্যাখ্যা করেন, “ঠাণ্ডা ও শুষ্ক বাতাসের সংমিশ্রণে ত্বকের সুরক্ষক প্রাকৃতিক তেলের ক্ষয় হয়। ফলে ত্বকের সুরক্ষক স্তর থেকে আর্দ্রতা শুষে নিয়ে একে শুষ্ক, লালচে ও অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলে।”

‘উইন্ডবার্ন’ রোধ করার পন্থা

প্রথম ধাপ হল খুব বেশি ভারী বাতাসের সংস্পর্শে না যাওয়া।

ড. এঙ্গেলম্যান বলেন, “তাপমাত্রা যত কম হবে বিশেষত যখন হিমাংকের দিকে যাবে ততই ‘উইন্ডবার্ন’ বা বাতাসের কারণে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা বাড়তে থাকবে।”

বাতাসের পোড়াভাবের কারণে হওয়া বর্ণের অস্বস্তিকর পরিবর্তন প্রতিরোধের কয়েকটি উপায় রয়েছে।

ডা. এঙ্গেলম্যান বলেন, “ত্বকের প্রতিরক্ষার স্তরকে শক্তিশালী করে এবং বাইরের আবহাওয়া থেকে ত্বককে সুরক্ষিত রাখে এমন পোশাক পরিধান করে ‘উইন্ডবার্ন’ প্রতিরোধ করা যায়।”

তিনি আরও পরামর্শ দেন, “ত্বক সুস্থ ও শক্তিশালী রাখে এমন পরিচর্যার রুটিন অনুসরণ করে ‘উইন্ডবার্ন’ থেকে সুরক্ষিত থাকা সম্ভব।”

এক্ষেত্রে তিনি সেরামাইড, পেপটাইড, এপিডার্মাল গ্রোথ ফ্যাক্টর (ইজিএফ), নন-কমেডোজেনিক উপকরণ সমৃদ্ধ এবং ত্বক মসৃণ রাখে এরকম প্রসাধনী ব্যবহারের কথা বলেন।

তিনি ব্যাখ্যা দেন, “এই ধরনের উপকরণ ত্বকের আর্দ্রতার মাত্রা বজায় রাখে এবং ‘ট্রান্সএপিডার্মাল’ স্তরের পানির ক্ষয় কমাতে সহায়তা করে।”

সুরক্ষিত রাখতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে এমন পণ্য ব্যবহারের পরামর্শ এই চিকিৎসক।

“দ্রুত এবং সহজে উইন্ডবার্ন কমানোর উপায় হল প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরা, যেন বাইরের তাপমাত্রা ও বাতাসের শুষ্কতা থেকে সুরক্ষিত থাকা যায়”, বলেন তিনি।

শীতে যখন বাইরে যাওয়া হয় তখন গরম পোশাক পরা, হাত মোজা, স্কার্ফ ও টুপি পরে দেহকে যতটা সম্ভব আবৃত রাখলে ঠাণ্ডার পোড়াভাব থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

ডা. এঙ্গেলম্যানের মতে, এসবের পাশাপাশি যতটা সম্ভব বৈরি আবহাওয়াতে বাইরে না যাওয়া ত্বককে উইন্ডবার্ন থেকে সুরক্ষিত রাখে।

উইন্ডবার্ন প্রতিকারের উপায়

ত্বকে ঠাণ্ডার কারণে পোড়াভাব দেখা দিলে দুশ্চিন্তার কিছু নেই, এটা সারিয়ে তোলা যায়।

ডা. এঙ্গেলম্যান বলেন, “পোড়াভাব প্রতিকার করতে ত্বক প্রচুর পরিমাণে আর্দ্র রাখতে হবে। আক্রান্তস্থানে প্রতিরক্ষামূলক স্তর সৃষ্টি করার পাশাপাশি আর্দ্রতা যেন হ্রাস না পায় ও জ্বালাপোড়া এবং অস্বস্তি কমে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।”

সবচেয়ে ভালো বিষয় হল দুয়েকদিনের মধ্যে ‘উইন্ডবার্ন’ ভালো হয়ে যায়। ত্বক খুব বেশি খসখসে, ব্যথাদায়ক এবং দিন শেষে লালচে দেখালে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

এতে ত্বককে ভবিষ্যত ক্ষতি থেকে রক্ষা করা যাবে বলে মনে করেন ডা. এঙ্গেলম্যান।

ছবির মডেল: সালমিন। ছবি কৃতজ্ঞতায়: ই স্টুডিও।

আরও পড়ুন

Also Read: শীতে চুল ভালো রাখার ঘরোয়া পন্থা

Also Read: ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনার পন্থা

Also Read: সাধারণ পোড়ার ঘরোয়া সমাধান