ব্যায়ামের পাশাপাশি চর্বি গলানোর প্রক্রিয়াতে সাহায্য করতে পারে কিছু পানীয়।
Published : 09 Jan 2023, 03:05 PM
পেটের মেদ কমাতে কিছু পানীয় পান থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়।
এরকম পানীয়’র মধ্যে আছে- বিভিন্ন ধরনের কোমল পানীয়, অ্যালকোহল আর চিনি দেওয়া নানান ধরনের শরবত কিংবা স্মুদি।
তবে যারা পেট কমানোর যাত্রায় নেমেছেন, তাদের ক্ষেত্রে ব্যায়াম ও ডায়েটের পাশাপাশি কয়েকটি পানীয় পেটের মেদ কমানোর ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
এই বিষয়ে নিউ ইয়র্ক’য়ের পুষ্টিবিদ র্যাচেল ডাইকম্যানের ভাষ্য হচ্ছে, “মেদ কমানোর কোনো জাদুকরী পানীয় নেই।”
ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “বিজ্ঞাপন দিয়ে পেটের মেদ কমানোর নানান ধরনের পানীয়র কথা বলা হয়। তবে সেগুলো কোনোটাই কার্যকর হয় না। কারণ কোনো কিছু খেয়ে চর্বির ক্ষয় সাধন করা যায় না।”
এক্ষেত্রে তিনি পরামর্শ দেন যে, “কৌশল একটাই- এমনভাবে পানীয় পান করতে হবে যেন সেসব থেকে দেহে অতিরিক্ত মেদ জমতে না পারে। আর মেদ না জমলেই তো মেদ বাড়বে না।”
স্মুদি: বেশিরভাগ সময় মিষ্টি ধরনের কিছু খেতে ইচ্ছে করলে বা খিদা লাগার মানে হল দেহে চিনির চাহিদা তৈরি হচ্ছে। যে কারণে কোমল পানীয়, কফিতে আলাদাভাবে নানান উপাদান মিশিয়ে গ্রহণ করতে বেশ লাগে। পাশাপাশি নানান ধরনের মুখরোচক খাবার খেতে ইচ্ছে হয়।
অথচ এই খাবারগুলো দেহে মেদের আস্তর বাড়াতেই থাকে।
তাই ডাইকম্যান বলেন, “মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে কমাতে পান করা যায় চিনিহীন স্মুদি। নানান ধরনের ফল, সবুজ শাক, বাদামের সঙ্গে পছন্দের দুধ দিয়ে ব্লেন্ডারে মিশিয়ে ঘরেই তৈরি করা যায় মজাদার স্মুদি। এত পেটও যেমন ভরা থাকবে তেমনি চিনি গ্রহণের ইচ্ছাও কমবে।”
ক্যালরি-ফ্রি বেভারেজ: কোমল পানীয় যে চর্বির পরিমাণ বাড়ায় এই কথা নতুন করে বলার কিছু নাই। তাই পেটে যাতে অতিরিক্ত মেদ না জমে সেজন্য এসব গ্রহণ বাদ দিতে হবে।
এভাবে পরামর্শ দিয়ে একই প্রতিবেদনে, ক্যালিফোর্নিয়ার ‘হার্বাললাইফ নিউট্রিশন’য়ের জ্যেষ্ঠ পরিচালক ও পুষ্টিবিদ সুসান বাওয়ারম্যান বলেন, “ক্যালরি ফ্রি পানীয় মানে, স্রেফ সাধারণ পানি পানের কথা বলছি।”
‘জার্নাল অফ দি ক্লিনিকাল এন্ডোক্রিনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজম’য়ে প্রকাশিত জার্মানির ‘শারিটি, হামবোল্ট-ইউনিভার্সিটি’র করা গবেষণার বরাত দিয়ে এই পুষ্টিবিদ জানান, পানী পানের পরিমাণ বাড়ালে বিপাক প্রক্রিয়ার উন্নতি হয় ফলে দেহ আরও কার্যকরভাবে চর্বি গলাতে পারে।
গ্রিন টি: এই চা থেকে একই সঙ্গে মিলবে ক্যাফেইন ও ক্যাটেকিন্স।
ডাইকম্যান বলেন, “এই দুই উপাদান ‘ফ্যাট অক্সিডেশন’য়ের পরিমাণ বাড়াতে পারে। মানে চর্বি পোড়ানোর মাত্রা বাড়ে।”
তবে এটাও মনে রাখতে হবে, দুতিন বেলা গ্রিন টি পানে রাতারাতি চর্বি কমবে না ঠিক, তবে পেটের মেদ কমাতে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে।
দুধ চিনি ছাড়া চা: গ্রিন টি ভালো না লাগলে বেছে নেওয়া যেতে পারে ‘ব্ল্যাক টি’। মানে সাধারণ চায়ে কোনো চিনি বা দুধ না মিশিয়ে পান করার উপকারিতা বেশি।
চা’তে থাকা ফ্লাভানয়েডস হৃদযন্ত্রের জন্যেও উপকারী। কমাতে পারে উচ্চ রক্তচাপ। আর এই উপাদানই মেদ কমাতে ভূমিকা রাখে।
‘ফুড অ্যান্ড ফাংশন’ সাময়িকীতে প্রকাশিত নরওয়ের ‘ইউনিভার্সিটি অফ অসলো’র করা এক পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণায় দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যারা দৈনিক তিনকাপ করে চা তিন মাস ধরে পান করেছেন তাদের কোমরের মাপ কমেছে অন্যদের তুলনায় বেশি।
কফি: ক্যাফেইন যুক্ত পানীয় পানে অনেকেরই রুচি কমে। ফলে কম খাওয়ার কারণে ক্যালরি গ্রহণ কম হয়, যা কিনা পেটের মাপ কমাতে ভূমিকা রাখে।
ডাইকম্যান বলেন, “কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে ক্যাফেইন ‘থার্মোজেনেসিস’য়ের গতি বাড়াতে পারে। এই প্রক্রিয়াতে দেহ আরও তাপ উৎপাদন করতে সক্ষম হয় ফলে ক্যালরি ও শক্তি খরচ হয় বেশি।”
পাশাপাশি অন্ত্রের সুস্থতার ওপর প্রভাব রাখে কফি। যা কিনা বিপাক প্রকিয়াকে উন্নত করে। আর বিপাক প্রক্রিয় বৃদ্ধি পেলে চর্বি খরচের মাত্রাও বাড়ে। ফল স্বরূপ পেটের মেদ গলে বেশি।
তবে অবশ্যই হতে হবে কালো কফি।
আরও পড়ুন