শরীরে বাইরের অংশে ফুটে ওঠা চর্বিগুলো নিয়েই আমাদের দুশ্চিন্তা বেশি থাকে। তবে অভ্যন্তরীণ চর্বি ‘ভিসেরাল ফ্যাট’ হল আসল হুমকি।
Published : 25 Jul 2022, 05:27 PM
শরীরে বাইরের অংশে ফুটে ওঠা চর্বিগুলো নিয়েই আমাদের দুশ্চিন্তা বেশি থাকে। তবে অভ্যন্তরীণ চর্বি ‘ভিসেরাল ফ্যাট’ হল আসল হুমকি।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ব্যালান্সড ওয়ান সাপ্লিমেন্টস’য়ের পুষ্টি-বিশেষজ্ঞ ট্রিস্টা বেস্ট ‘ইটদিস নট দ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “ভিসেরাল ফ্যাট’ থাকে শরীরের সামনের দিকে। ফলে হৃদযন্ত্র ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ওপর প্রচুর চাপ পড়ে। হৃদরোগ, স্ট্রোক ও অন্যান্য দূরারোগ্য ব্যাধির ঝুঁকি বাড়ায় এই চর্বি। আর দীর্ঘদিন ধরে থাকলে এই চর্বি শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোকে আবৃত করে ফেলে। আর সেই অবস্থা থেকে চর্বি ঝরানো অত্যন্ত কঠিন।”
তাছাড়া শরীরের ভেতর অন্ত্রে জড়িয়ে থাকা এসব চর্বি চিহ্নিতও করা যায় না। তাহলে যে চর্বি দেখা যাচ্ছে না সেটা কমানোর উপায় কী?
পুষ্টিবিদরা বলছেন, উপায় হল খাবার। তবে সব খাবার নয়, কিছু খাবার ‘ভিসেরাল ফ্যাট’ কমাতে কার্যকর ভূমিকার রাখে।
জিরা: রান্নার পদে স্বাদ যোগ করবে এবং পাশাপাশি ‘ভিসেরাল ফ্যাট’ও কমাবে এমন একটি মসলা হল জিরা।
বেস্ট বলেন, “দীর্ঘসময় ধরে রান্নায় জিরা ধারাবাহিক ব্যবহার শরীরের বিভিন্ন স্থানে চর্বি জমার সম্ভাবনা কমায়। ইন্সুলিন’য়ের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে কাজটি করে জিরা। আর ইন্সুলিন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে কারণ কোষ যখন অতিরিক্ত শর্করা গ্রহণ করে তখন বাড়তিটুকু পরিণত হয় চর্বিতে। ইন্সুলিন পর্যাপ্ত মাত্রায় থাকলে এই সমস্যার সমাধান করা যাবে।”
কাঁচা কলার ময়দা: যুক্তরাষ্ট্রের ‘আপলিফ্ট ফুড’য়ের প্রতিষ্ঠাতা কারা ল্যান্ডাও বলেন, “সাধারণ সাদা ময়দার বদলে খাদ্যাভ্যাসে যোগ করতে পারেন কাঁচা কলা থেকে তৈরি করা ময়দা।”
বেস্ট জানান, “অন্ত্রের জন্য উপকারী ‘প্রিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ’ মেলে কাঁচা কলার ময়দা থেকে। এই উপাদান কোষকে ইন্সুলিনের প্রতি আরও বেশি সক্রিয় করে তোলে, ফলে অতিরিক্ত ইন্সুলিন থেকে চর্বি জমার সম্ভাবনা কমে। স্মুদি, ওটমিল এমনকি কফির সঙ্গে যোগ করা যায় এই ময়দা।”
গাঁজানো খাবার: টক দই, ‘খিমচি’, ‘সাওয়ারক্রাউট’ ইত্যাদি ‘ফার্মেন্টেড’ বা গাঁজানো পদ্ধতিতে তৈরি করা খাবার খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি ‘ভিসেরাল ফ্যাট’ দূর করতেও অসাধারণ।
যুক্তরাষ্ট্রের মিয়া নিউট্রিশন’য়ের কর্ণধার ইসা কুইয়াস্কি বলেন, “অন্ত্রের উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার মাত্রা বাড়ায় এই গাঁজানো খাবারগুলো। ফলে হজমক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, স্বাভাবিক ওজন বজায় রাখা সহজ হয়, পেটের চর্বির মাত্রা কমে।”
চর্বিযুক্ত মাছ: কুইয়াস্কি বলেন, “চর্বিযুক্ত মাছ থেকে পাওয়া যায় ‘ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড’ যা হৃদযন্ত্রের জন্য অত্যন্ত জরুরি। আবার ‘ভিসেরাল ফ্যাট’ ঝরাতেও এটি সহায়ক। স্যামন, সার্ডিনস এই মাছগুলো ‘ওমেগা থ্রি’ ও ভিটামিন ডি দুটোতেই ভরপুর। আর এই দুটি উপাদান শরীরের বেশি থাকলে ‘ভিসেরাল ফ্যাট’ কম থাকে।”
গাঢ় সবুজ সবজি: পালং শাক আর পাতাকপি ভোজ্য আঁশের দারুণ উৎস। এছাড়াও ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য উপকারী পুষ্টি উপাদানও যোগায় এই দুটি সবজি। সেই সঙ্গে দূর করতে পারে ‘ভিসেরাল ফ্যাট’।
কুইয়াস্কি বলেন, “গাঢ় সবুজ রংয়ের এই সবজিগুলো সেসব হরমোনের মাত্রা কমায় যেগুলো শরীরে চর্বি জমতে সাহায্য করে।”
আরও পড়ুন