অন্ত্রে চর্বি জমার কারণ

শুধু পেটে নয়, অন্ত্রের বিভিন্ন অংশেও জমতে পারে মেদ।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 July 2022, 06:21 AM
Updated : 15 July 2022, 11:35 AM

যকৃত কিংবা নাড়িভুঁড়ির বিভিন্ন অংশে জমা চর্বি শরীরের জন্য মোটেই ভালো বিষয় নয়। পেটের গভীরে অন্ত্রের বিভিন্ন অংশে জমা এই চর্বিকে বলা হয় ‘ভিসেরাল ফ্যাট’।

পেটে চিমটি দিয়ে ধরে এই চর্বির হদিস মেলে না। হৃদরোগ, ‘ফ্যাটি লিভার’, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগের পেছনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা থাকে এই চর্বির।

কেনো এই চর্বি এত ক্ষতিকর সে বিষয়ে ‘ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে অস্ট্রেলিয়ান ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটি’র ‘ম্যারি ম্যাককিলোপ ইন্সটিটিউট ফর হেল্থ রিসার্চ’য়ের বিশেষজ্ঞ ইভেলেন পার বলেন, “ভিসেরাল ফ্যাট’ থেকে প্রচুর পরিমাণে নিঃসৃত হয় ‘এডিপোকাইন্স’ নামক জৈব রাসায়নিক উপাদান। এটি শরীরে প্রদাহ হওয়ার আশঙ্কা বাড়ায় এবং রক্তে ‘ফ্যাটি অ্যাসিড’য়ের মাত্রাও বেড়ে যায়। যে কারণে এই চর্বিকে বলা হয় ‘অ্যাক্টিভ ফ্যাট’।”

“পা এবং পেটের অভ্যন্তরিন উপরিভাগে থাকা ‘সাবকিউটেনাস ফ্যাট’ নিজের মধ্যে ‘ফ্যাটি অ্যাসিড’ জমিয়ে রাখে, অল্প মাত্রায় রক্তে রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করে এই চর্বিগুলো। সেজন্য এই চর্বিকে বলে ‘প্যাসিভ ফ্যাট’।”

পেটের এই চর্বি কি ক্ষতিকর?

যুক্তরাষ্ট্রের স্যান হোজে’র চিকিৎসক জুলি চেন বলেন, “পেটের চর্বির মাত্রা বোঝার জন্য কোমরের বেড় মাপা কার্যকর। গজ ফিতা নিয়ে নাভি থেকে শুরু করে পুরো কোমর ঘুরিয়ে আবার নাভিতে আসতে হবে। পুরুষের কোমরের বেড় যদি ৪০ ইঞ্চি বা তারও বেশি হয় তবে তার ‘ভিসেরাল ফ্যাট’য়ের মাত্রা বেশি। নারীর জন্য তা হবে ৩৫ ইঞ্চি।”

ঘুম কম হলে বাজে চর্বি জমে

প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম না হলে চর্বি ঝরানো অত্যন্ত কঠিন, বিশেষ করে পেটের চর্বি।

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যায়াম প্রশিক্ষক ক্যাথি ফ্রেডরিক বলেন, “ঘুম কম হলে তা ‘গ্রোথ হরমোন’কে দাবিয়ে রেখে পেটের চর্বি বাড়ায়। এই হরমোন হল একটি ‘অ্যানাবোলিক’ হরমোন যার কাজ হল পেশির মাত্রা বাড়ানো। আবার এটি চর্বি ঝরাতেও সহায়ক। ঘুম যখন গভীর হয় তখন এই হরমোন নিঃসৃত হয়। তাই ঘুম কম তো ‘গ্রোথ হরমোন’ কম। ফলে পেশি কমবে আর চর্বি বাড়বে।”

শরীরচর্চা

‘ভিসেরাল ফ্যাট’ নিয়ন্ত্রণে রাখার দারুণ একটা হাতিয়ার হলো শরীরচর্চা।

হার্ভার্ড হেল্থ বলছে, “শরীরের ওজন আর চর্বি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করতে হবে। কমপক্ষে আধা ঘণ্টা, এক ঘণ্টা হলে আরও ভালো। ভারোত্তলন ব্যায়ামও চর্বি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেশ কার্যকর।”

‘স্পট এক্সারসাইজ’- যেমন উঠবস করা পেটের পেশিকে শক্তিশালী করে। তবে ‘ভিসেরাল ফ্যাট’য়ের ওপর কোনো প্রভাব ফেলে না।”

খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন

ওজন কমানোর জন্য ক্যালরি গ্রহনের মাত্রা কমানোই সব নয়। খাদ্যাভ্যাসে প্রক্রিয়াজাত খাবার, চিনি, ‘জাঙ্ক ফুড’ বেশি থাকলে ক্যালরি যতই নিয়ন্ত্রণ করা হোক কেনো ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে না।

‘ক্লিনিকাল অ্যান্ড রিসার্চ ফিজিওলজি অ্যাট জন হপকিনস’য়ের পরিচালক কেরি স্টুয়ার্ট বলেন, “ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। সেখানে ‘কার্বোহাইড্রেইট’ থাকতে হবে কম। আর অস্বাস্থ্যকর খাবারেই চিনি ও কার্বোহাইড্রেইট বেশি থাকে। আর কম থাকে ভোজ্য আঁশ। খেতে হবে ফল, সবজি আর স্বাস্থ্যকর মাংস যাতে থাকবে প্রোটিন, ভোজ্য আঁশ উচ্চমাত্রায়।”

আরও পড়ুন