আসলেই কি ত্বকের যত্নে টোনার ব্যবহারের প্রয়োজন আছে?
Published : 07 Feb 2024, 10:44 AM
ত্বকের যত্নে প্রধান কয়েকটি ধাপ হল- ফেইস ওয়াশ, ময়েশ্চারাইজার ও সানস্ক্রিন ব্যবহার। এই তিন ধাপ নিয়মিত মেনে চললে বাহ্যিক দূষণ ও ক্ষতি থেকে ত্বককে বাঁচানো যায়।
এছাড়াও ত্বকের যত্নে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হল- টোনার ব্যবহার।
ত্বকের টোনারের কাজ
একসময় টোনার অনেকটা ‘অ্যাস্ট্রিনজান্ট’ হিসেবে ত্বকের যত্নে ব্যবহার করে পরে ধুয়ে ফেলতে হত। বর্তমানে এর ব্যবহার ও উপকারিতায় পরিবর্তন এসেছে।
এই বিষয়ে নিউ ইয়র্ক সিটি’র বোর্ড প্রত্যয়িত ত্বক বিশেষজ্ঞ এবং ‘টিআরএনআর স্কিন’য়ের সহকারী প্রতিষ্ঠাতা ডা. রায়ান টার্নার বলেন, “সময়ের সাথে সাথে আর্দ্রতা রক্ষাকারী এবং সক্রিয় উপাদান যোগ করে টোনারকে উন্নত করা হয়েছে।”
রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই ত্বক-বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, “আগে কেবল তৈলাক্ত ও শুষ্ক ত্বকের পিএইচ’য়ের ভারসাম্য রক্ষায় টোনার ব্যবহার করা হত। বর্তমানে এর কার্যকারিতা অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।”
টোনার ব্যবহারের ধাপ
মুখ ভালো মতো ধোয়ার পরে এবং অন্য কোন ‘ট্রিটমেন্ট’, সেরাম বা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের আগে টোনার ব্যবহার করেতে হয়।
ত্বকে প্রসাধনী ব্যবহারের নিয়ম হল কম ঘনত্বের প্রসাধনী থেকে বেশি ঘনত্বের প্রসাধনী ব্যবহার করা। টোনার সব চেয়ে বেশি পাতলা, অনেকটা পানির মতো, তাই এটা আগে ব্যবহার করতে হবে।
তবে কিছু কিছু টোনার অন্যগুলোর তুলনায় দুধের অথবা ক্রিমের মতো হতে পারে।
ডা. টার্নারের মতে, “টোনারের গঠনের দিকে খেয়াল না করে বরং তাতে ব্যবহৃত উপকরণের দিকে খেয়াল করতে হবে। যেগুলো দ্রুত শোষিত হয় সেগুলো প্রথমে ব্যবহার করতে হবে।”
মার্কিন রূপ-বিশেষজ্ঞ এবং ‘সিলভার মিরর ফেইশল বার’য়ের প্রধান সঞ্চালক অফিসার র্যাচেল গ্যালো একই প্রতিবেদনে বলেন, “টোনার সকাল ও সন্ধ্যার ত্বক পরিচর্যার রুটিনে ব্যবহার করতে হয়।”
মুখ ধোয়ার পরে হাতের তালুতে অথবা তুলার সাহায্যে আলতোভাবে টোনার মুখে মাখতে হবে।
টোনারের ধরন
ত্বক পরিচর্যার অন্যান্য পণ্যের মতো টোনারও ত্বকের ধরন বুঝে ব্যবহার করতে হয়।
“তৈলাক্ত, শুষ্ক অথবা সাধারণ- ত্বকের ধরন বুঝে টোনার বাছাই করতে হবে। একইভাবে ঠাণ্ডা মাসগুলোতে আর্দ্রতা রক্ষাকারী টোনার ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়”- বলেন গ্যালো।
ক্ল্যারিফাইয়িং
ব্রেক আউট ও দাগছোপের বিরুদ্ধে কাজ করে ক্ল্যারিফাইয়িং টোনার। এর প্রধান কাজ হল ত্বকে অস্বস্তি সৃষ্টি না করা। যদি মৃদু ও আর্দ্রতা রক্ষাকারী উপাদান সমৃদ্ধ টোনার ব্যবহার করতে চান যা ব্রণের বিরুদ্ধে কাজ করে তাহলে ক্ল্যারিফাইয়িং টোনার বাছাই করা যায়।
ময়েশ্চারাইজিং
ভারী, মিল্কি, গাঢ় টোনার শুষ্ক ও সংবেদনশীল ত্বকের জন্য উপকারী বলে জানান, ডা. টার্নার।
এগুলো সাধারণত আর্দ্রতা রক্ষাকারী ও ত্বক ভালো রাখে এবং উপাদান যেমন- হায়ালুরনিক অ্যাসিড, উদ্ভিজ্জ তেল ও সেরামাইড দিয়ে তৈরি।
এক্সফলিয়েটিং
কার্যকারিতার ভিত্তিতে এক্সফলিয়েটিং টোনার দৈনিক বা সপ্তাহিক ভিত্তিতে ব্যবহার করতে হয়।
এরা আলতোভাবে ত্বকের উপরিভাগ এক্সফলিয়েট’য়ের মাধ্যমে মৃত কোষ দূর করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
“এক্সফলিয়েটিং টোনার ব্যবহার করতে চাইলে নির্দিষ্ট রাসায়ানিক উপাদানের দিকে নজর দেওয়া উচিত যা ‘এক্সফলিয়েন্ট’ হিসেবে কাজ করবে। যেমন- ল্যাক্টিক অ্যাসিড এবং পিএইচএএস মৃদু এক্সফলিয়েশন করে। অন্যদিকে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ও স্যালিসাইলিক অ্যাসিড কড়াভাবে কাজ করে”- বলেন ডা. টার্নার।
সুদিং
সুদিং টোনার ত্বকের অস্বস্তি ও জ্বলুনি কমাতে সহায়তা করে। এতে থাকে আরামদায়ক উপাদান যেমন- সিসা (সেনটেলা অ্যাসিয়াটিকা), গোলাপ জল বা অ্যালো ভেরা।
টোনার ব্যবহারের কোনো নির্দিষ্ট মাপ নেই। সকাল ও সন্ধ্যার ত্বকের ধরন ও প্রয়োজন বুঝে টোনার ব্যবহার করতে হবে।
ছবি: পেক্সেলস ডটকম
আরও পড়ুন