অভিজ্ঞতা সবার এক নয়। তারপরও কিছু বিষয় মিলে যায়।
Published : 11 Oct 2022, 08:42 PM
প্রথম গর্ভধারণের আগেই বরং জেনে রাখা ভালো এই সময়ে কেমন লাগতে পারে।
গর্ভধারণ সম্পর্কে সাধারণ ধারণা কমবেশি সবারই থাকে। আর সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা যেদিন থেকে শুরু হয় সেইদিন বা তারও আগে থেকে বিষয়টি নিয়ে আরও বিস্তারিত জ্ঞান অর্জন শুরু করে প্রতিটি দম্পতি।
তবে এই বিষয়ে যতই পরিকল্পনা আর জ্ঞান অর্জন করা হোক না কেনো, নয় মাস একজন গর্ভবতীর কী পরিস্থিতি পার করেন তা শুধু তিনিই বোঝেন।
এক বা একাধিকবার গর্ভধারণ করেছেন এমন মায়েদের অভিজ্ঞতার আলোকে তেমনই কিছু পরিস্থিতি সম্পর্কে জানা যায় ‘দ্য ইনসাইডার ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে।
সীমাহীন ক্লান্তি
গর্ভধারণে পর প্রথম অস্বস্তি হল ক্লান্তি। আর গর্ভাবস্থার সেই ক্লান্তির সঙ্গে কোনো ক্লান্তির যেন তুলনা করা যায় না। জেগে থাকাই যেন এক যুদ্ধ। গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসেই এই ক্লান্তির অনুভূতি সবচাইতে বেশি।
‘মর্নিং সিকনেস’ শুধু সকালেই হয় না
গর্ভাবস্থায় সকালবেলা প্রচণ্ড বমিভাব ও বমি হয় মায়ের, এজন্য তাকে নাম দেওয়া হয় ‘মর্নিং সিকনেস’। তবে সমস্যা হল ‘মর্নিং’ ফুরিয়ে গেলেও সেই ‘সিকনেস’ ফুরায় না।
সারাদিনই ওই বমিভাব গর্ভবতী নারীকে অস্বস্তিতে ভোগায়। কিছু মানুষের বমি হয় না বললেই চলে, সেটা সৌভাগ্যের ব্যাপার। তবে একই নারী প্রথমবার গর্ভবতী অবস্থায় বমি না হলেও দ্বিতীয়বার গর্ভধারণের পর প্রচণ্ড বমি করেন এমন নজির বিরল নয়।
খাবার যেন পেটে ধরে রাখাই যায় না। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মাফিক বমি আটকানোর ওষুধ খাওয়া জরুরি।
প্রচুর তরল নিঃসরণ হয়
গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই নিম্নাংগ অতিরিক্ত আর্দ্র মনে হবে। ব্যাপারটা এমন যে হঠাৎ দৌড়ে বাথরুমে যাওয়ার ইচ্ছে জাগবে, এই ভেবে যে অন্তর্বাস রক্তে ভেসে যাচ্ছে।
এর মাঝে কখনও আবার ‘ডিসচার্জ’য়ের মাত্রা এতই বেশি হবে যে মনে হবে ঋতুস্রাব হচ্ছে।
এত গেল শুরুর দিকের কথা। গর্ভাবস্থার মাঝামাঝি অবস্থায় এর মাত্রা আরও বাড়বে। এতোটাই যে মনে হবে যেন কাপড়েই মূত্রত্যাগ হয়ে গেল।
পরনের কাপড়টা বোধহয় পুরোটায় ভিজে গেছে। তখন প্রাণপনে দৌড়ে বাথরুমে গিয়ে হয়ত দেখবেন তেমন কিছুই না, শুধুই ‘ডিসচার্জ’।
‘হেমোরয়েডস’ বা পায়ুপথে মাংস বেড়ে যাওয়া
যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের জরিপ বলে, প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ গর্ভাবস্থায় কিংবা সন্তান প্রসবের পর ‘হেমোরয়েডস’ দেখা দেয়।
তারপরও গর্ভাবস্থা নিয়ে জ্ঞান অর্জন করতে দিয়ে খুব কম মানুষই একথা জানতে পারেন। আবার প্রথম সন্তান ধারনের সময় যদি এই সমস্যা না হয় তবে পরেরবার এই রোগ দেখা দিলে, অনেকেই একে গর্ভধারনের সঙ্গে সম্পর্কিত হিসেবে দেখেন না।
এই সমস্যা যদিও সন্তান প্রসবের পর সেরে যায়, তবে যতদিন থাকে ততদিনে এর অস্বস্তির মাত্রা অনেক বাড়তে পারে।
অস্বস্তি কমাতে চেয়ারে বালিশ দিয়ে বসা যায়। ‘সিটজ বাথ’ খুব আরাম দেবে। গামলায় কুসুম গরম পানি নিয়ে তাতে নিতম্ব ও জননাঙ্গ ডুবিয়ে বসে থাকা হল ‘সিটজ বাথ’।
পানিতে কিছু যোগ করতে হবে কি-না সে ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
দুধ আসার আগেই স্তন বড় হয়
গর্ভাবস্থায় শারীরিক বিভিন্ন পরিবর্তন আসে। বিশালাকার একটা পেটের কথাই হয়ত সবার আগে মাথায় আসবে। কিন্তু প্রথম পরিবর্তন চোখে পড়বে স্তনে।
দুধ আসার আগেই স্তন বড় হতে শুরু করে, যা প্রায় গর্ভধারনের ঠিক পরপরই শুরু হয়ে যায়।
আরেকটি আশ্চর্যজনক বিষয় হল, স্তনের আকারের সঙ্গে কতটুকু দুধ তৈরি হবে তার কোনো সম্পর্ক নেই। বিশাল স্তন থেকে যেমন অল্প দুধ আসতে পারে, তেমনি তুলনামূলক ছোট স্তন থেকেও বেশি দুধ পাওয়া যেতে পারে।
গ্যাসের ব্যথাকে মনে হতে পারে প্রসব যন্ত্রণা
গর্ভাবস্থায় গ্যাসের ব্যথা মারাত্মক তীব্র হয়। বিশেষ করে শেষের দিকে এই গ্যাসের ব্যথা এতটাই তীব্র হতে পারে যে, মনে হবে প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়েছে, আজই প্রসব করবেন।
অথচ একটা গ্যাসের বড়ি খেয়েই দেখবেন সবশেষ। আর গ্যাসের সঙ্গে আসবে ‘বায়ুনির্গত’র ঘটনা।
আর গর্ভাবস্থায় সেই বাতাস আটকে রাখার ক্ষমতাও আপনার অনেকাংশেই থাকবে না। তাই এটাও মাথায় রাখতে হবে।
আরও পড়ুন
গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন খাবার খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা