“নির্বাচনে চৌদ্দ দলের অনেকে প্রার্থী দিয়েছিল, নির্বাচন করেছে, আর নির্বাচনে জেতা না জেতা আলাদা কথা, কিন্তু আমাদের এই জোট থাকবে,” বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
Published : 02 May 2024, 03:12 PM
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচনে ১৪ দলের কে জয় পেল, আর কে পেল না, সেটা বিবেচ্য নয়; তাদের এই আদর্শিক জোট অটুট আছে।
থাইল্যান্ড সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে বৃহস্পতিবার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এসে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই ১৪ দল নিয়ে প্রশ্ন আসে।
একজন সাংবাদিক বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর চৌদ্দ দলীয় জোটের কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না । এমন কি অনেকে বলছেন, চৌদ্দ দল থাকবে না। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সভাপতির ভাষ্য জানতে চান সেই সাংবাদিক।
জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “চৌদ্দ দল তো অবশ্যই আছে। থাকবে না কেন? তাদের সাথে আমাদের সব সময়ই যোগাযোগ আছে। যোগাযোগ নেই তা তো না।
“এখন দু-চারজন বিক্ষিপ্তভাবে কী বলছে আমি জানি না। আমাদের যিনি সমন্বয় করেন, আমির হোসেন আমু সাহেবের ওপর দায়িত্ব দেওয়া আছে দলের পক্ষ থেকে। তিনি যোগাযোগ রাখেন।”
শেখ হাসিনা বলেন, “নির্বাচনে চৌদ্দ দলের অনেকে প্রার্থী দিয়েছিল, নির্বাচন করেছে, আর নির্বাচনে জেতা না জেতা আলাদা কথা, কিন্তু আমাদের এই জোট থাকবে। এটুকু বলতে পারি, জোট শেষ হয়ে গেছে কে বলল?”
বিএনপি নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের মধ্যে ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট গঠিত হয়। ২০০৮ সাল থেকেই ১৪ দল ও আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করে আসছে।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জোট শরিকদের ১৬টি আসনে ছাড় দিলেও হলেও এবার তা কমিয়ে ৭টি করা হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদ তিনটি করে এবং জাতীয় পার্টি-জেপি একটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচন করে।
ওই নির্বাচনে ২২৫টি আসনে জয় পেয়ে টানা চতুর্থবারের মত সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। তবে চৌদ্দ দলের শরিকরা জয় পান কেবল দুটি আসনে। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার মত নেতা হেরে যান।
ভোটের পর নিজের পরাজয়ের জন্য ‘প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তাকে’ দায়ী করেছিলেন জাসদ নেতা ইনু। আওয়ামী লীগের ‘ডামি প্রার্থীর’ কৌশল নিয়ে প্রকাশ্যেই কথা বলেছিলেন শরিক নেতাদের কেউ কেউ। ৭ জানুয়ারির ভোটের পর জোটের কোনো বৈঠক এ পর্যন্ত হয়নি।
তবে ‘শিগগিরই’ চৌদ্দ দলের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “কার্যনির্বাহী বৈঠক করেছি, আমাদের উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করব এবং আমি চৌদ্দ দলের সাথেও বসব। তাছাড়া অনেকের সাথে আমার নিজেরও যোগাযোগ আছে। আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক সবার সাথে যোগাযোগ রাখেন। যিনি সমন্বয়কারী তার সাথে তো যোগাযোগ আছেই।”
আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন বড় আকারে
আওয়ামী লীগের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এবার বড় আকারে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলেছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “আমরা আমাদের পঁচাত্তর বছর উদযাপন করব খুব ব্যাপকভাবে। সেখানে আমরা আলোচনা করছি, বিশ্ব পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আমরা দেখব, কোন কোন দেশকে আমরা আমন্ত্রণ জানাতে পারি বা কারা আসতে পারে সেটাও আমাদের আলাপ আলোচনায় আছে।
“সেই বিষয়েও আমরা কর্মসূচি নিচ্ছি। আমরা বিভিন্ন উপ কমিটি করে দিচ্ছি। আরও সুন্দরভাবে যাতে আমরা সব করতে পারি। কারণ আমাদের দল উপমহাদেশে একটা বড় দল, যেটা ৭৫ বছর উদযাপন করছে, এটা তো কম কথা না।”