Published : 04 Dec 2024, 08:29 PM
একটু চোখের আড়াল হয়েছেন, অমনি রান্নাতো পুড়েছেই সেই সাথে পাত্রে পড়েছে পোড়া আস্তর।
এরকম অভিজ্ঞতা প্রায় সবারই হয়। বিশেষ করে যারা রান্নাবান্না করেন। আর পাত্র থেকে পোড়া দাগ তুলতে গিয়ে হতে হয় গলদঘর্ম।
রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে পরিষ্কার-বিষয়ক মার্কিন বিশেষজ্ঞ ম্যারি মার্লো লেরেটি বলেন, “কাস্ট আয়রন, স্টেইনলেস স্টিল, কপার, অ্যালুমিনিয়াম বা ‘নন-স্টিক’ আবরণ- পাত্রের ধরনের ওপর একেক পদ্ধতি কার্যকর।”
“তবে ‘অ্যাব্রেইসিফ ক্লিনার’ বা ঘষামাজা হয় এমন পরিষ্কারক বা খসখসে মাজুনি দিয়ে ‘নন-স্টিক’ পাত্রের দাগ ওঠাতে ব্যবহার করা যাবে না”- পরামর্শ দেন তিনি।
কাস্ট আয়রন’য়ের পাত্রে পোড়া লাগলে দীর্ঘ সময় ধরে ভিজিয়ে রাখা যাবে না।
পোড়া লাগলে প্রথমে খাবার উঠিয়ে পাত্র যথেষ্ট পরিমাণে গরম পানি দিয়ে পূর্ণ করতে হবে, যাতে পোড়া অংশটা ডুবে থাকে। কোনো সময় ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করা যাবে না।
আর এইভাবে পাত্রের পোড়া দাগ ওঠানোর প্রথম পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বেইকিং সোডা ও লেবু
সব ধরনের পাত্রই এই মিশ্রণ দিয়ে পরিষ্কার করা যায়। আর এই পরিষ্কারক স্টেনলেস স্টিল এবং কপারের পাত্র আরও চকচকে করে।
প্রথমে, সাবান মিশ্রিত গরম পানি দিয়ে স্পঞ্জ দিয়ে ভালো মতো ঘষে লেগে থাকা খাবার যতখানি সম্ভব তুলে ফেলতে হবে।
এবার একটি কাপের চার ভাগের একভাগ পরিমাণ বেইকিং সোডা পোড়া-ভেজা জায়গায় দিতে হবে। একটি লেবু অর্ধেক করে সেটা দিয়ে পাত্রটি ঘষতে থাকুন। বেশ খানিকটা ফেনার মতো হবে যা পোড়া দাগ তুলতে সাহায্য করবে।
এবার ভালো মতো ধুয়ে নিন। দরকার হলে বাকি অর্ধেক লেবু দিয়ে পুনারায় পরিষ্কার করা যেতে পারে।
বাসন ধোয়ার সাবান
পাত্র থেকে খাবার তুলে ফেলার মতো জোরালো উপাদান থাকে যে কোনো বাসন ধোয়ার সাবানে। তবে এই পদ্ধতি নন-স্টিক বা কাস্ট আয়রন পাত্রে ব্যবহার করা যাবে না।
প্রথমে, পোড়া পাত্রটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি নিয়ে, এতে বাসন ধোয়ার সাবান যোগ করতে হবে। তারপর মাঝারি আঁচে গরম করতে হবে যতক্ষণ না পানি ফুটতে থাকে। এভাবে দুই মিনিট ফোটাতে হবে।
এবার চুলা বন্ধ করে ঠাণ্ডা হতে দিন। তারপর পানি ফেলে নায়লনের নরম ব্রাশ বা মাঝার স্পঞ্জ দিয়ে ঘষে নিন। তারপর গরম পানি দিয়ে ভালোমতো ধুয়ে নিতে হবে।
বেইকিং সোডা এবং ভিনেগার
প্রথমে সম পরিমাণ পানি ও ভিনিগার পোড়া পাত্রে নিয়ে চুলার আগুনে ফোটাতে হবে। তারপর সাবধানে পানিটুকু ফেলে ভেজা পাত্রে এক কাপের চারভাগের একভাগ বেইকিং সোডা ও একই পরিমাণ ভিনিগার ছিটিয়ে দিন।
যখন বুদবুদ ওঠা বন্ধ হয়ে যাবে তখন ঘষার স্পঞ্জ বা নায়লনের মাজুনি দিয়ে ঘষে নিতে হবে। এরপর গরম সাবান পানি দিয়ে ভালো মতো ধুয়ে নিতে হবে।
‘ড্রায়ার শিট’য়ে ভেজানো
ওয়াশিং মেশিনের ড্রায়ারে কাপড় শুকাতে ‘ড্রায়ার শিট’ ব্যবহার করা হয়। এতে সিলিকনের আবরণ থাকে যা কাপড় নরম করতে সাহায্য করে। এই সিলিকন পাত্রে লেগে থাকা পোড়া খাবার ওঠাতে ভালো কাজ করে।
পোড়া খাবার যাতে ডুবে থাকে এমন পরিমাণ ফুটন্ত পানি পাত্রে ঢেলে ‘ড্রায়ার শিট’ দিয়ে দিতে হবে। বড় পাত্র হলে দুটি ‘শিট’ ব্যবহার করতে হবে।
এবার ঘণ্টা খানেক বা সারারাত ভিজিয়ে রেখে পানি ফেলে ড্রায়ার শিট দিয়ে খাবার মুছে নিতে হবে। তারপর পাত্রটি কুসুম গরম পানি দিয়ে ভালো মতো ধুয়ে শুকালেই হবে।
আলকা-সেলৎজার বা অ্যাস্পিরিন ট্যাবলেট বা সিট্রিক অ্যাসিড পাউডার
হজমের সমস্যায় এই ধরনের ট্যাবলেট খাওয়া হয়। তবে এটা পোড়া দাগ ওঠাতেও কার্যকর।
পাত্রে গরম পানি নিতে হবে যাতে পোড়া অংশ ভালো মতো ডুবে থাকে। এতে ছয়টি অ্যাস্পিরিন ট্যাবলেট বা এক কাপের চারভাগের একভাগ পরিমাণ সিট্রিক অ্যাসিড পাউডার দিতে হবে।
ঘণ্টা খানেক অপেক্ষা করে, মিশ্রণটি ফেলে নরম ব্রাশ দিয়ে ঘষে নিতে হবে। তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে নিন।
অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল এবং লবণ
উপরের পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করার পর চূড়ান্তভাবে দাগ তুলতে ভালো কাজ করে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল এবং লবণ। তবে কাস্ট আয়রন এবং নন-স্টিক পাত্রে এটা ব্যবহার করা যাবে না।
প্রথমে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল বলের মতো গোলাকার করে নিতে হবে। এবার পোড়া দাগ পড়া পাত্র ভিজিয়ে লবণ ছিটিয়ে ফয়েল দিয়ে তৈরি বল দিয়ে ভালো মতো ঘষতে হবে।
আরও পড়ুন
যেভাবে ইয়ারবাডস পরিষ্কার করতে হয়