মানসিক কারণেও বেশি খাওয়া হয়; ফলে বাড়ে ওজন।
Published : 09 Feb 2025, 05:12 PM
ওজন কমাতে চাইলে বা স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখতে অতিরিক্ত খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।
আবার হঠাৎ কোনো ‘ক্র্যাশ ডায়েট’ অনুসরণ না করে বুদ্ধিমানের কাজ হবে যে বদভ্যাসগুলো গড়ে উঠেছে সেগুলোকে দূর করা।
এই বিষয়ে মার্কিন অভিজ্ঞ মনোবিজ্ঞানী গ্লেন লিভিংস্টোন ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেন, “করোনা মহামারীর সময়ে করা এক জরিপে আমরা দেখেছি, ঘরে বসে থাকার কারণে অনেক বেশি খাবার খেতেন আর ভাবতেন, মহামারী শেষ হলে ডায়েট করে ওজন কমাবেন।”
তবে সমস্যা হল- মানসিক অস্বস্তি কাটানোর সাথে খাবারকে একবার জুড়ে দিলে যে শক্তিশালী মানসিক বন্ধন তারা তৈরি করেছেন সেটা সহজে তারা ভাঙতে পারেননি।
তাই মনের জোর বাড়াতে বেশ কয়েকটি পন্থার কথা জানান এই মনোবিজ্ঞানী।
লোভনীয় খাবারের মাত্রা বেধে নেওয়া
লিভিংস্টোন বলেন, “এখন থেকে আলুর চিপস এড়িয়ে চলব এমন প্রতিশ্রতি করা আর আজ থেকে সপ্তাহের একদিনই আলুর চিপস খাব, আর এক প্যাকেটের বেশি না- এই প্রতিশ্রুতি কিন্তু এক নয়।”
প্রথম প্রতিশ্রুতিতে কোনো স্থির লক্ষ নেই, সীমাবদ্ধতাও নেই। তাই সেটা মেনে চলতে না পারার সম্ভাবনাই বেশি।
“আর প্রথম প্রতিশ্রুতির আরেকটি সমস্যা প্রতিবার আলুর চিপসের খেতে মন চাইলেই মনের সঙ্গে লড়াই করতে হবে আর একসময় প্রতিশ্রুতি ভাঙতেও বাধ্য হবেন”- বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যকর খাবার দিয়ে পূর্ণ করা
চিপস বা অন্যান্য মুখরোচক খাবার যখন ‘চিট ডে’য়ের জন্য তুলে রাখা হয় তখন পরের ধাপ হল ঘরে প্রচুর স্বাস্থ্যকর খাবার রাখা।
লিভিংস্টোন’য়ের মতে, “কারণ হল ঘরে পর্যাপ্ত খাবার নেই এমনটা মনে হওয়ার সম্ভাবনা না রাখা। আর বুঝতে না পারলেও খাবারের অভাব অনুভব করাটা আসলে সবসময় খাবার নেই তা নয়, বরং পছন্দের মুখরোচক কিন্তু অস্বাস্থ্যকর খাবারটা নেই- সেটাই মনে হয়।”
আর একবার সেটা মেনে নিয়ে বাইরে গেলেই দেখা যাবে, কোনো না কোনো অস্বাস্থ্যকর তেলে ভাজা খাবারই খাওয়া হচ্ছে।
বেশি খাওয়ার কারণটা খুঁজে বের করা
একাকিত্ব, মন খারাপ, মানসিক চাপ ইত্যাদি দূর করতে অনেক সময় খাবারের আশ্রয় নেওয়া হয়। খেতে খেতেই হয়ত ভাবনা খেলে এরপর আর কী খাওয়া যায়!
কারণ যতই খাওয়া হোক একাকিত্ব বোধ তো আর দূর হচ্ছে না।
লিভিংস্টোন বলছেন, “অতিরিক্ত খাওয়ার অভ্যাস মানুষের মানসিক শক্তিকেও দুর্বল করে দেয়। সেসময় খাওয়ার ইচ্ছাগুলো হয়ে ওঠে অদম্য। মানুষ তার জিহ্বার দাসে পরিণত হয়। এভাবে একসময় তারা পুরোপুরি আসক্ত হয়ে যায়। তাই বেশি খাওয়ার এই অভ্যাস পরিবর্তন করতে হলে মানসিক অবস্থা নিয়ন্ত্রণেও চেষ্টা চালাতে হবে।”
পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ
কিছু খেতে মন চাইলেই যে পেট ভরে খেতে হবে তা কিন্তু। খিদা পেটে নয়, মনে।
লিভিংস্টোন বলেন, “কখন খাবেন, কতক্ষণ খাবেন, কতটুকু খাবেন তা কিন্তু আপনার নিয়ন্ত্রণে।”
সামাজিকতায় অংশগ্রহণ
সারাদিন ঘরকুনো হয়ে পড়ে না থেকে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করতে হবে প্রতিদিন।
লিভিংস্টোন বলেন, “সামাজিকতায় অংশগ্রহণ করলে একদিকে খাবার যেমন মনের আড়াল হবে, তেমনি মানসিকভাবেও আপনি খুশি থাকবেন। ফোনে কথা বলার সময় ক্যামেরা চালু করুন। কারণ অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে বেড়ে যাওয়া ওজন যখন মানুষের দেখতে পাওয়ার সুযোগ থাকে না, তখন ওজন পরে কমাবো একথা বলা খুবই সহজ হয়।”
আরও পড়ুন
খাওয়ার পদ্ধতির ওপরে নির্ভর করে স্বাস্থ্যের অবস্থা
খাবার যেভাবে মনের ওপর প্রভাব ফেলে