একটি রিট আবেদনে আদালতের এই আদেশ। আবেদনকারীর দাবি, হিন্দি সিনেমা আমদানিতে হুমকিতে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র।
Published : 29 Aug 2023, 12:17 AM
পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা না করে উপমহাদেশের চলচ্চিত্র আমদানির অনুমতির বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশ জারির ব্যাখ্যা চেয়েছে হাই কোর্ট। একইসঙ্গে আমদানি নীতির একটি ধারা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তাও চেয়েছে জানতে।
বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মো. শওকত আলী চৌধুরীর বেঞ্চ এ রুল জারি করে।
চলতি বছরের ১০ এপ্রিল জারি করা তথ্য মন্ত্রণালয়ের একটি অফিস আদেশ এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি নীতির একটি ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থে সম্প্রতি একটি রিট মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কাজী শোয়ায়েব হাসান।
রোববার তার শুনানি নিয়ে আদালত রুল দেয়। রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আমিনুল হক হেলাল, কাজী শোয়ায়েব হাসান ও নাজিম উদ্দিন।
শোয়ায়েব হাসান বিডিনিউজ টোয়োন্টিফোর ডটকমকে বলেন, উপমহাদেশের অন্য ভাষার চলচ্চিত্র আমদানির অনুমতি দিয়ে জারি করা তথ্য মন্ত্রণালয়ের অফিস আদেশ কেন বে-আইনি ঘোষণা করা হবে না এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২০২৪ এর অনুচ্ছেদ ২৫ (৩৬) (গ) কেন বাতিল করা হবে না তা জনতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট।
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে বলে শোয়ায়েব জানান।
অ্যাডভোকেট শোয়ায়েব বলেন, গত ১০ এপ্রিল বিনিময় শর্তে বাংলাদেশে উপমহাদেশীয় ভাষার চলচ্চিত্র আমদানির অনুমতি দিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় অফিস আদেশ জারি করেছে। জাতীয় আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২৪ এর ২৫ এর ৩৬ (গ) ধারা অনুযায়ী এই আদেশ জারি করা হয়।
“এই অফিস আদেশ ও আমদানি নীতির ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেছি।”
আদালতে শুনানির বরাতে শোয়ায়েব বলেন, কোনো সুনির্দিষ্ট এবং পরিপূর্ণ নীতিমালা তৈরি না করে এই ধরনের অনুমতি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জন্য মোটেও কল্যাণকরণ নয়। হিন্দি ছবির বিপরীতে বাংলাদেশের যে চলচ্চিত্র রপ্তানি করা হচ্ছে তার গুণগতমান এবং রপ্তানি করা চলচ্চিত্র ভারতে কতগুলো হলে প্রদর্শিত হলো এবং বাংলাদেশের চলচ্চিত্রগুলো ব্যবসা সফল হচ্ছে কি না– এই বিষয়ে দেখভাল করার কোনো কর্তৃপক্ষ তৈরি করা হয়নি; যার ফলে কম মানসম্পন্ন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র রপ্তানি দেখিয়ে ভারতের বড় বাজেটের চলচ্চিত্র বাংলাদেশ আমদানি করে কিছু ব্যক্তি লাভবান হচ্ছে। এতে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।
ভারত থেকে সদ্য আমদানি করা হিন্দি চলচ্চিত্র ‘পাঠান’ ও ‘কিসি কা ভাই কিসি কা জান’ এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আদালতকে আইজীবী বলেন, এসব চলচ্চিত্র আসার কারণে বাংলাদেশের অনেক মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি সঠিক সময়ে হলে প্রদর্শিত হতে পারছে না এবং হল মালিক বাংলাদেশের চলচ্চিত্র প্রদর্শন করতে অনীহা প্রকাশ করছেন।
শোয়ায়েব জানান, আদালত শুনানি শেষে পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা তৈরি না করে হিন্দি সিনেমা আমদানির অনুমতি দিয়ে জারি করা অফিস আদেশ কেন বে-আইনি ঘোষণা করা হবে না এবং আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২০২৪ অনুচ্ছেদ ২৫ (৩৬) (গ) কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না – তা তথ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চার সপ্তাহের মধ্যে ব্যাখ্যা করতে বলেছে।