সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানাবেন আয়োজকরা।
Published : 14 Oct 2022, 03:31 PM
জাতীয় জাদুঘরে আপত্তি জানালেও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে কবীর সুমনের গানের অনুষ্ঠানে সবুজ সংকেত দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) এ কে এম হাফিজ আক্তার শুক্রবার দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জাদুঘর কেপিআই এলাকা। নিরাপত্তার কথা ভেবে সেখানে অনুমতি দেওয়া হয়নি। আয়োজকরা পরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুমতি চাইলে আমরা তা অনুমোদন করি।"
বিখ্যাত অ্যালবাম ‘তোমাকে চাই’ এর তিন দশক পূর্তিতে ঢাকায় ‘সুমনের গান’ শিরোনামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে পিপহোল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট। শনিবার থেকে তিন দিনের এ আয়োজনে গান গাইতে বৃহস্পতিবার সকালেই ঢাকা পৌঁছেছেন ভারতের বাংলা গানের জনপ্রিয় শিল্পী সুমন।
৩০ বছর আগে ‘তোমাকে চাই’ অ্যালবামের মাধ্যমেই বাংলা গানের জগতে এক নতুন ধারার সূচনা হয়। সেই ধারার পুরোধা সুমন ১৩ বছর পর ঢাকায় এসেছেন, ফলে বাংলাদেশে তার অগুনতি ভক্তদের মধ্যে রয়েছে তুমুল আগ্রহ।
পিপহোলের কর্মকর্তা মীর আরিফ বিল্লাহ এক সংক্ষিপ্ত বার্তায় জানিয়েছেন, সন্ধ্যায় শিল্পকলায় সংবাদ সম্মেলন করে তারা অনুষ্ঠান নিয়ে বিস্তারিত বলবেন।
কথা ছিল ১৫ অক্টোবর জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে আধুনিক বাংলা গান গাইবেন সুমন। ১৮ অক্টোবর আধুনিক বাংলা খেয়াল পরিবেশনার পর ২১ অক্টোবর আধুনিক বাংলা গান দিয়ে আয়োজন শেষ করার কথা ছিল।
তিন দিনের এই অনুষ্ঠানের টিকেট বিক্রি হয়েছে আগেই। বুধবার ঢাকার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে এক সংবাদ সম্মেলনে আয়োজক প্রতিষ্ঠান পিপহোল বলেছিল, তাদের সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত। বিদেশি শিল্পীকে নিয়ে এই আয়োজনের সব অনুমতিই নেওয়া আছে।
কিন্তু ঢাকা মহানগর পুলিশ সায় না দেওয়ায় জাদুঘরে এই গানের অনুষ্ঠান নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়।
ঢাকার পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জাতীয় জাদুঘর একটি কেপিআই, কেপিআইয়ের ভেতর জনসমাবেশ বা এধরনের কোনো অনুষ্ঠান করার সুযোগ নেই।”
আয়োজকরা বৃহস্পতিবারও জাদুঘরের আয়োজন নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, জাতীয় জাদুঘর কর্তৃপক্ষও বলছিল, অনুষ্ঠানটি তাদের মিলনায়তনে হচ্ছে। কিন্তু পুলিশের ভাষ্য আসার পর নতুন ভেন্যু খুঁজতে শুরু করে পিপহোল।
তাদের কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে যান বরাদ্দের বিষয়ে কথা বলতে।
ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট কর্তৃপক্ষ তাদের জানায়, গানের অনুষ্ঠান করার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ওই মিলনায়তনে নেই। সাউন্ড সিস্টেমও ভালো না। এর আগে দেশের একটি শীর্ষ ব্যান্ডদল মিলনায়তন বরাদ্দ নিয়েও পরে সাউন্ড সমস্যার কারণে শো করেনি।
তবে আয়োজকরা সব অনুমতি নিয়ে নিয়ম মেনে অনুষ্ঠান করতে চাইলে মিলনায়তন বরাদ্দ দিতে যে আপত্তি নেই, সে কথাও কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়।
ঢাকায় তিন দিন গান শোনাবেন কবীর সুমন
‘এই বুড়োর গান শুনতে মানুষের আগ্রহ আনন্দ দেয়’
পিপহোলের কর্মকর্তারা এরপর অনুমতি নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন। তবে পুলিশের অনুমতি পাওয়ার আগে তারা আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দিতে চাইছিলেন না।
শুক্রবার সকালে আরিফ বিল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, "জাতীয় জাদুঘরে ভেন্যু হিসেবে সরকারের একটা মত আছে, এই মতের সাথে আমাদেরও পূর্ণ সম্মান আছে। এখন বিকল্প কোথায় করা যায়, চেষ্টা করছি।
“আমরা কবীর সুমনের অনুষ্ঠানটি করতে চাই। সবার সহযোগিতা চাই।”
কবীর সুমন শেষবার ঢাকায় এসেছিলেন ২০০৯ সালের অক্টোবরে। তখন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে গান পরিবেশনে বাধা পেয়ে কলকাতায় ফিরেছিলেন।
মাঝে এক যুগ কেটে গেলেও আর ঢাকায় আসেননি তিনি। এক সাক্ষাৎকারে অভিমানের সুরে বলেছিলেন, বাংলাদেশে আর কখনও আসবেন না তিনি।
এবারের অনুষ্ঠানটি ঘিরে তরুণদের উৎসাহ দেখে ঢাকার আসার আগে এক ভিডিও বার্তায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে কবীর সুমন বলেছিলেন, “আমার ৭৩ বছর চলছে। আর বেশি দিন তো নেই। আরো অনেক বছরও যদি বাঁচি, এই গলাটা তো আর থাকবে না। সুর তো থাকবে না। তাই যতদিন আছি, সকলে যদি শোনেন আমার খুব ভালো লাগবে।”