“চরিত্রের মোহে আমি কাজগুলো কীভাবে কখন করে ফেলেছি, টেরই পাইনি,” বিউটি সার্কাসে অভিনয়ের অভিজ্ঞতায় বলছিলেন জয়া।
Published : 18 Sep 2022, 10:50 AM
সবার আগে ‘বিউট সার্কাস’ দেখে তারপর অন্য সিনেমা দেখতে দর্শকদের প্রতি আহ্বান রেখেছেন সার্কাসকন্যা ‘বিউটি’ চরিত্রের অভিনেত্রী জয়া আহসান।
আসছে ২৩ সেপ্টেম্বর মুক্তি পাচ্ছে বিউটি সার্কাস। তার আগে শনিবার রাতে এক ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এলেন জয়া।
তিনি বললেন, “সেদিন অন্য সিনেমাও মুক্তি পাবে। আপনারা সবার আগে বিউটি সার্কাস দেখবেন, তারপর অন্য সিনেমা দেখবেন।“
ইমপ্রেস টেলিফিল্মের প্রযোজনায় এবং সরকারি অনুদানে নির্মিত চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন মাহমুদ দিদার। জয়া আহসান ছাড়াও বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফেরদৌস আহমেদ, তৌকির আহমেদ, এবিএম সুমন, শতাব্দী ওয়াদুদ, গাজী রাকায়েত, হুমায়ূন সাধু, মানিসা অর্চি।
নির্মাতা ও অভিনয় শিল্পীরা তাদের কাজের অভিজ্ঞতা এবং প্রত্যাশা তুলে ধরলেন মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে।
নির্মাতা মাহমুদ দিদার বললেন, “সবার সম্মিলিত পরিশ্রমের ফল বিউটি সার্কাস। আপনার হলে আসবেন। সিনেমাটা দেখবেন। অনুভূতির কথাটা সামাজিক মাধ্যমে লিখবেন।”
অভিনয় শিল্পীদের নিয়ে প্রশংসাও করলেন দিদার। বললেন, “জয়া আপা খুব ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাকে ভিজতে ভিজতে শুটিং করতে হয়েছে। ফেরদৌস ভাইও অনেক পরিশ্রম করেছেন। “
সম্প্রতি ‘বিউট সার্কাস’ সিনেমার ট্রেলার প্রকাশ পেয়েছে, সেখানে সার্কাসকন্যা বিউটি চরিত্রে নজর কেড়েছেন জয়া আহসান।
গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী মেলা, সার্কাস, জাদুর পাশাপাশি সেখানে মিলেছে প্রেম, প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের ইঙ্গিত।
কাজটি ‘চ্যালেঞ্জিং’ ছিল জানিয়ে জয়া আহসান বলেন, “এই ছবিটি করতে গিয়ে আমি অসাধারণ কিছু অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছি। এখানে সার্কাসের অনেক খেলা আমাকে খেলতে হয়েছে। সেগুলো অনেক রিস্কি ছিল।
“আমি এত কিছু দেখে কাজ করিনি। মূলত চরিত্রের মোহে আমি কাজগুলো কীভাবে কখন করে ফেলেছি, টেরই পাইনি। এখন মনে হচ্ছে বিষয়টা ছিল অনেকটা না বুঝেই রোলার কোস্টারে চড়ে বসার মত!”
তবে সিনেমার কাজে শিল্পীদের ঝুঁকি থাকেই, সে কথাও জয়া বললেন।
“সার্কাস বলুন, আর সিনেমা, ঝুঁকি আমাদের থাকেই। যেখানে আসলে নিরাপত্তার বালাই নেই। এর মধ্য দিয়েই আমাদের কাজগুলো করতে হয়।”
‘বিউটি’ চরিত্রটিকে ‘অসাধারণ’ আখ্যায়িত করে পরিচালক দিদারের প্রশংসা করেন এই নায়িকা।
“বরাবরই আমি নতুন নির্মাতাদের সঙ্গে থাকার চেষ্টা করি। সেটা আমার ক্যারিয়ারগ্রাফ দেখলেই আপনারা মেলাতে পারবেন। দিদার অসাধারণ একজন আইডিয়াবাজ। ওর যে কোনো কাজের সঙ্গে আমি থাকি বা রাখার চেষ্টা করে আমাকে। ও আমার জন্য অসাধারণ একটা চরিত্র লিখেছে। এটা আমার জন্য অনেক সম্মানের বিষয়।”
শৈশবে সার্কাস দেখার কোনো স্মৃতি আছে কি না, এই প্রশ্নের জবাবে জয়া বলেন, “খুব ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে কলাবাগানে সার্কাস দেখেছি। সেটা ছিল রাশিয়ান সার্কাস। অনেক প্রাণী ছিল। রাশিয়ান মেয়েরা ছিল। আসলে সেটা অনেক ছোটোবেলায়। খুব ভালো মনে নেই।”
চিত্রনায়ক ফেরদৌস বলেন, “আমাদের জীবন থেকে সার্কাস হারিয়ে গেছে। সিনেমা যেন না হারায়। এগুলো আমাদের সংস্কৃতির অংশ।… তারপরও সার্কাস কেন হারিয়ে যাবে?”
‘বিউটি সার্কাসে’ ফেরদৌস আছেন ‘নবাব’ চরিত্রে। তার ভাষায়, “এমন চরিত্রে আর কখনোই হয়তো আমাকে দেখা যাবে না। কেন যাবে না সেটা সিনেমা দেখলেই বুঝবেন।”
আর অভিনেতা এবিএম সুমন বললেন, “আমরা সবাই অনেক সীমাবদ্ধতা নিয়ে কাজ করেছি। সিনেমাটা করতে গিয়ে আমরা মানিকগঞ্জ, নওগাঁর প্রত্যন্ত অঞ্চলে গেছি। কাজ করে ভালো লেগেছে। দর্শক খুবই মজা পাবেন সিনেমাটা দেখে।”
মিট দ্য প্রেসে বিউটি সার্কাস সিনেমাটির পরিবেশক, প্রযোজক, কলাকুশলীরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চিরকুট ব্যান্ডের শারমিন সুলতানা সুমি।
কয়েকদিন আগে চিরকুট ব্যান্ডের সংগীত আয়োজনে ও সুমির গাওয়া এ চলচ্চিত্রের প্রথম গান ‘বয়ে যাও নক্ষত্র’ প্রকাশ হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এ সিনেমায় ব্যবহৃত বাকি দুটি গান গেয়েছেন অ্যাশেজ ব্যান্ডের ইভান ও টুনটুন বাউল।
২০১৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি নওগাঁর সাপাহার ও মানিকগঞ্জে দুইশ জন নির্মাণসঙ্গী নিয়ে প্রায় দুই হাজার গ্রামবাসীর অংশগ্রহণে চিত্রধারণের কাজ শুরু করেন নির্মাতা। এর জন্য বিশাল সার্কাস প্যান্ডেল নির্মাণ ও গ্রাম্যমেলার আয়োজন করা হয়।
চলচ্চিত্রটির ব্যাপ্তি ও নির্মাণের বৃহৎ আয়োজনের কারণে কাজ শেষ করতে প্রায় পাঁচ বছর সময় লাগে। এরপর করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে পিছিয়ে যায় মুক্তি।