সাধুমেলার প্রতিপাদ্য ছিল ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’।
Published : 14 Jan 2025, 11:52 PM
মানবিকতা ও ঐক্যের শাশ্বত বার্তা সমাজের প্রতিটি হৃদয়ে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাধুমেলা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ শিরোনামে একাডেমির নন্দনমঞ্চে এই আয়োজন হয়।
বাউলদের উপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদ অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে জানান শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ।
তিনি বলেন, “মরমী গানের ভেতরে একেবারে মাঝখানে আছেন আমাদের মধ্যমণি লালন সাঁইজি। লালন শাহ আমাদের উদ্বুদ্ধ করেন, জীবনের চেতনা দান করেন, আমাদের দিকনির্দেশ করেন।
“সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মানুষকে ভালোবাসার কথা বলেন। আর সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হচ্ছে এদের ওপরই আক্রমণটা বেশি হয়। আমরা শিল্পকলা একাডেমির পক্ষ থেকে এর প্রতিবাদ জানাই এবং এগুলো বন্ধের আহ্বান জানাই।”
সাধুমেলা দেখতে পরিবারসহ এসেছিলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। এছাড়াও এসেছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসস এর প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান।
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ বাউল শিল্পীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, “আমি আপনাদের কাছ থেকে শিখেছি যে কাজের মধ্যেও সাধনা করা যায় কীভাবে। আমার জীবনের লক্ষ্যটা কী, আমি কোথায় যেতে চাই, কী করতে চাই সেটা আপনি আপনার গান গাওয়ার ভেতরে, গান চর্চার ভেতরে খুঁজছেন।”
সাধুমেলায় শুরুতেই বিখ্যাত লালনগীতি ‘ধন্য ধন্য বলি তারে’ ‘দৈন্য গান’ পরিবেশিত হয়। এরপর বাউল গান পরিবেশন করেন কহিনুর আক্তার গোলাপী। মো. জাহিদুল ইসলাম পরিবেশন করেন ‘কেন ডুবলি নে মন মনরে’। উপমা আক্তার বৃষ্টি পরিবেশন করেন ‘হে করুনা সিন্ধু’ এবং লালনসংগীত ‘আমি ওই চরণ দাসের যোগ্য নই’ গানটি পরিবেশন করেন মো. মিরাজ সিকদার।
তারপর পরিবেশনা উপস্থাপন করেন দিল আফরোজ রেবা ও আব্দুল মান্নান তালুকদার। তারা শোনান ‘বিনা কার্যে ধন উপার্জন’ এবং ‘এই মানুষে মিলতো মানুষ যদি’।
শাহ নেওয়াজ সজীব পরিবেশন করেন ‘চিরদিন পুষলাম এক অচিন পাখি’, ফারজানা আফরিন ইভা পরিবেশন করেন ‘মন ব্যাথার ব্যথিত মেলে না’ এবং লালনগীতি ‘যদি ত্বরিতে বাসনা থাকে’ পরিবেশন করেন তাসলিমা আক্তার।
এছাড়াও ছিল বলাই শাহ জামাল উদ্দিন টুনটুন ফকির, বিদ্যুৎ শীল ও শ্রী ভজন কুমার ব্যাধ-এর পরিবেশনা।
আফসানা হক ইমু পরিবেশন করেন ‘আমি কারে দিবো দোষ নাহি পরের দোষ’। সবশেষে সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয় জনপ্রিয় লালনসংগীত ‘মিলন হবে কত দিনে’।