“ভিউ দৌরাত্ম্য থেকে বেরিয়ে এসে’ দিবসকেন্দ্রিক নতুন নাটক প্রচারে টেলিভিশন স্টেশনগুলোর মনোযোগী হওয়া উচিত”
Published : 21 Feb 2025, 02:29 PM
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বেসরকারি টেলিভিশন স্টেশনগুলো সাধারণত নতুন নাটক নিয়ে আসে দর্শকদের জন্য। ভাষা আন্দোলনের ৭৩তম বছরে এসে বাংলাভিশন, এনটিভি, দীপ্ত এবং এটিএন বাংলাসহ বিভিন্ন স্টেশন কিছু অনুষ্ঠানের আয়োজন রাখলেও রাখেনি একুশের নাটক।
আর মাছরাঙা, দুরন্ত, বৈশাখী এবং আরটিভি একুশের পুরনো নাটক দেখিয়ে দায় সারছে।
একুশের নতুন নাটক তৈরিতে টেলিভিশন স্টেশন কর্তৃপক্ষের ‘অনাগ্রহ’ আছে জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সীমান্ত সজল, তুহিন হোসেনসহ কয়েকজন পরিচালক।
এই নির্মাতাদের ভাষ্য, বিশেষ দিবসের নাটক নিয়ে তাদের কাজ করার ষোলআনা ইচ্ছা থাকলে ‘নেই পৃষ্ঠপোষকতা’।
অন্যদিকে টেলিভিশন স্টেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, পর্দায় প্রচারের পাশাপাশি নাটকগুলো স্টেশনের ইউটিউব চ্যানলেও দেওয়া হয়; তাদের পর্যবেক্ষণ হল সোশাল মিডিয়ায় দিবসকেন্দ্রিক নাটকের দর্শক দিন দিন কমছে। এছাড়া অর্থলগ্নিকারী এবং বিজ্ঞাপনের সংখ্যাও কমে যাওয়ায় নতুন নাটক তৈরি লাভজনক বলে মনে করছে না কর্তৃপক্ষ।
একুশের নতুন নাটক না হওয়ায় খেদের কথা জানিয়েছেন অভিনয় শিল্পীরা। তাদের কথায়, জাতির অংহকারের এমন দিবসের চেতনা ধরে রাখতে চাইলে একুশের নাটক তৈরি হওয়া প্রয়োজন।
‘ভিউ দৌরাত্ম্য থেকে বেরিয়ে এসে’ দিবসকেন্দ্রিক নতুন নাটক প্রচারে টেলিভিশন স্টেশনগুলোর মনোযোগী হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন অভিনয়শিল্পীরা।
ভাষা আন্দোলনের গল্পভিত্তিক নাটকগুলোর প্রসার কমে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন দর্শকরাও।
মাছরাঙা টেলিভিশনের বিশেষ অনুষ্ঠানমালায় রাত সাড়ে ১০টায় প্রচার হবে নাটক ‘বর্ণমালার মিছিল’।
ছয় বছর আগে ২০১৯ সালে প্রচারে আসা নাটকটি রচনা ও পরিচালনা করেছিলেন সীমান্ত সজল।
নাটকের পুনঃপ্রচার করার খবর জানেন না নির্মাতা সজল। আক্ষেপ প্রকাশ করে গ্লিটজকে তিনি বলেন, "নাটকটি পুনঃপ্রচার হচ্ছে আমি এখন জানলাম, চ্যানেল থেকে জানালে হয়ত একটু প্রচারণা করা হত। ‘বর্ণমালার মিছিল' নাটকের গল্পটি মানুষ দেখে ফেলেছে, সেটি পুনঃপ্রচার হওয়ার চেয়ে নতুন নাটক নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।"
বিশেষ দিবসের নাটক নির্মাণের আগ্রহ থাকলেও প্রযোজক পাওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন সজল।
তার কথায়, "ভাষা দিবস নিয়ে কাজ করার আগ্রহ আমার বরাবরই রয়েছে। ‘বর্ণমালার মিছিল' নাটক দিয়ে আমার নাট্যাঙ্গনে যাত্রা শুরু। আমি নিজ অর্থায়নে নির্মাণ করে টেলিভিশনে দিয়েছিলাম। এখন আরও পরিপক্ক হয়েছি, আরও সুন্দর নাটক নির্মাণের ইচ্ছা থাকলেও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে তা হয় না।“
প্রযোজকদের ‘অনাগ্রহ’ নিয়ে সজল বলেন, “গল্প নিয়ে প্রযোজক বা টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে যোগাযোগ করলে দেখা যায় তারা বলে দেন এই বিশেষ দিবসের নাটক এখন আর কেউ করতে চায় না, ভিউ হয় না। আমরা কিন্তু প্রযোজকদের ধারে ধারে ঘুরে ফিরে আসি।"
দুরন্ত টিভিতে প্রচার হচ্ছে নাটক ‘ঝুটুম পাখির কথা’; এই নাটকটিও প্রচার হয়েছিল ২০১৯ সালে। এরপর আরও কয়েকবার প্রচার হয় নাটকটি।
এছাড়াও বৈশাখী টেলিভিশনে প্রচার হবে ২০১৭ সালের নাটক ‘ভাষা ও ভালোবাসা’, আরটিভিতে ২০২১ সালের 'বর্ণ' নাটক।
পুরনো নাটক ফের প্রচার করার বিষয়টি চোখে পড়েছে কী না জানতে চাইলে নির্মাতা মনিরুল হোসেন শিপন গ্লিটজকে বলেন, "দুরন্ত টিভিতে নতুন প্রোগ্রামের পাশাপাশি পুরাতন নাটকও রাখা হয়। আর নাটকের গল্পটাও সমসাময়িক। সেই জায়গা থেকে নাটকটি আবারও প্রচার হচ্ছে।"
ভাষা নিয়ে নাটক নির্মাণের অনেক বিষয়বস্তু থাকলেও চ্যানেলগুলো এই ধরনের নাটক নির্মাণে চাহিদা ‘দেখায় না’ বলে মন্তব্য করেছেন শিপন।
তিনি বলেন, "চ্যানেলগুলো ঈদ কেন্দ্রিক নাটকের আগ্রহই বেশি দেখায়, দিবসকেন্দ্রিক নাটক নির্মাণের আগ্রহ চ্যানেলগুলোর কখনোই ছিল না। তবে নাটক বাড়ানো উচিত বলে আমি মনে করি।"
নির্মাতা তুহিন হোসেন নাটক তৈরি করছেন প্রায় ১৪ বছর ধরে; ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই তিনি ভাষা দিবসের নাটক বানিয়ে আসছেন বলে জানিয়েছেন এই পরিচালক।
তুহিন জানিয়েছেন, এবারই প্রথম ভাষা দিবস নিয়ে তার কোনো নাটক নেই।
দিবসকেন্দ্রিক নাটক নির্মাণে চ্যানেলগুলোর অবহেলার কথা তুলে এই নির্মাতা বলেন, "এ বছর নাটক নির্মাণ করতে না পারার মনকষ্ট তো আছেই। শুধু ভাষা দিবসের নাটক না, বিজয় দিবসেও নতুন নাটক তৈরি হচ্ছে না। এই দিবসকেন্দ্রিক নাটকের অবহেলা আমাদের চোখেও পড়ছে। একুশের চেতনা মানুষের মধ্যে প্রবাহমান রাখার জন্য অবশ্যই একুশ নিয়ে নাটক নির্মাণ বাড়ানো উচিত।"
প্রযোজকদের কাছে থেকে এ ধরনের নাটক নির্মাণের প্রস্তাব আসে কী না প্রশ্নে তুহিন বলেন, “আসলে তো অবশ্যই করতাম, টেলিভিশন চ্যানেলগুলো এখন বেশিরভাগ ইউটিউব কেন্দ্রিক। তাদের ব্যবসা ভিউয়ের উপর নির্ভর করে। তাদের ধারণা এই কনটেন্টগুলো যদি আমরা ইউটিউবে আপলোড করা হয় তাহলে তাদের টার্গেট দর্শক সেগুলো দেখবে না।”
সরকারের পক্ষ থেকে দিবসকেন্দ্রিক নাটক নির্মাণ বাধ্যতামূলক করে দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
যা বলছেন টেলিভিশনের অনুষ্ঠান আয়োজক ও প্রযোজকরা
ভাষা দিবসে পুরাতন নাটক প্রচার করা হচ্ছে কেন জানতে চাইলে মাছরাঙা টেলিভিশনের অনুষ্ঠান বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক রিয়াদ শিমুল অর্থলগ্নির বিষয়টিকে কারণ হিসেবে তুলে ধরেছেন।
গ্লিটজকে তিনি বলেন, "বিশেষ দিবসগুলোতে আমরা চেষ্টা করে থাকি নতুন নাটক করার, প্রতি বছরই হয়ত সম্ভব হয় না নানান কারণে। তার মধ্যে একটা বড় কারণ হচ্ছে বিশেষ দিবসের এই আয়োজনগুলোতে আগে বড় বড় স্পন্সর পাওয়া যেত। এখন স্পন্সর কমে গেছে, বিজ্ঞাপন কমে গেছে। যার জন্য একটা গ্যাপ তৈরি হয়েছে।
"বাণিজ্যিক কারণেই আসলে সম্ভব হয়ে উঠে না। বছরে তো অনেকগুলো দিবস থাকে প্রত্যেক দিবসের জন্যই আলাদা আলাদা নাটক নির্মাণ করা থাকে। একটা বছর হয়ত নতুন যায়, আরেক বছর পুন: প্রচার করা হয়। তবে দিবসকেন্দ্রিক নাটক নির্মাণ কম হওয়া এটা আমাদের জন্যও বেদনার।"
এই ধরনের নাটক নির্মাণে ভালো শিল্পীর কথা ভাবা হলে বাজেটও বড় হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন শিমুল।
শিমুল বলেন, “ভিউ ভালো এমন কিছু শিল্পী আছেন যাদের দর্শক চাহিদা বেশি, তাদের নিয়ে কাজ করতে গেলে বাজেটটা বেশি পড়ে যায়। তাদের পারিশ্রমিকও বেশি, এই ধরনের নাটক তো ভিউ হওয়ার বিষয় না। সেটা আশাও করিনা। বাজেট বেড়ে যায়, অনেকের শিডিউল পাওয়া যায় না। শিল্পীদের ধারণা থাকে এসব নাটক দর্শক দেখবে না ভিউয়ের একটা প্রতিযোগিতা আছে।”
নাটকের ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা ‘কিছুটা খারাপ’ জানিয়ে টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টেলিপ্যাব) সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজু মুনতাসীর বলেন,"গত সাত আট মাস ধরেই কিন্তু নাটকের ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা কিছুটা খারাপ। নাটক অনেক কম নির্মাণ হচ্ছে, বর্তমান পরিস্থিতির কারণে স্পন্সরের ক্রাইসিস দেখা দিয়েছে, যেটার প্রভাব ইউটিউব চ্যানেল, টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে রয়েছে।
"এই স্পন্সর কমে যাওয়ার কারণ দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং স্পন্সরদের অনেক বাজেট চলে যাচ্ছে ক্রিকেট খেলায়। এসব কারণে টেলিভিশন চ্যানেল বা প্রোগ্রামগুলোতে নতুন নাটক বা প্রোগ্রামে নতুনত্ব নেই।"
প্রযোজকদের এই নেতা বলেন, "নাটক যেগুলো প্রচার হচ্ছে সেগুলো আগের নাটক, ধারাবাহিক নাটক। এবার ভালোবাসা দিবসেও তেমন নাটক নির্মাণ হয়নি, একটা সময় ভালোবাসা দিবসে প্রচুর নাটক থাকত। ক্লোজআপ কাছে আসার গল্পেই সাত থেকে আটটা নাটক নির্মাণ হত। সেগুলো আলচনায় থাকত।"
"বাজারে বিনিয়োগকারী নেই, আমরাও আশাহত" বলছিলেন মুনতাসীর।
দিবসকেন্দ্রিক নাটক বাড়াতে করণীয় কী প্রশ্নে সাজু বলেন, "দিবসকেন্দ্রিক নাটক বাড়ানোর উপায় হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে যদি নিয়ম করে দেওয়া হয় একুশে ফেব্রুয়ারি,স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসে চ্যানেলগুলো একটি করে হলেও নতুন নাটক প্রচার করতে হবে। কারণ টেলিভিশন চ্যানেলের মালিকরা তো কেউ গরীব না, একটা নাটক স্পন্সর ছাড়া তো চালাতে পারবে না ?"
ভাষাদিবসে পুরনো নাটক পুনঃপ্রচার হওয়া 'কষ্টের'
ছয় বছর আগে নির্মিত হওয়া ‘বর্ণমালার মিছিল’ নাটকে অভিনয় করেছেন অভিনেতা তারিক আনাম খান।
ভাষা দিবসের নতুন আর কোনো নাটকে দেখা যায়নি এই অভিনেতাকে। বিশেষ দিবসে নতুন নাটক হওয়া উচিত কী না জানতে চাইলে তারিক আনাম খান বলেন, "নতুন নাটক অবশ্যই হওয়া উচিত, ভাষা দিবস আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য, আমাদের অহংকার ও গর্বের বিষয়। পৃথিবীর কোনো জাতি ভাষার জন্য প্রাণ দেয়নি, রক্ত দেয়নি। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই এই দিনটা উদযাপনের পাশাপাশি সুন্দর গল্পের নাটক প্রচার হওয়া দরকার।"
ছয়, সাত বছর আগের নাটক ফের প্রচার হওয়ার বিষয়টি একজন শিল্পীর জন্যও ‘কষ্টের’ বলে মন্তব্য করেছেন তারিক আনাম।
টেলিভিশন স্টেশনগুলোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, “দিন দিন চ্যানেলগুলোর শৈল্পিক মনোভাব ভয়ঙ্করভাবে হারিয়ে যাচ্ছে। চ্যানেলগুলো ব্যবসায়িক চিন্তা করতে গিয়ে হয়ত এই উদ্যোগটা নিচ্ছেন না। ভিউ দৌরাত্ম্য থেকে বেরিয়ে এসে দিবসকেন্দ্রিক এক দুইটা নাটকে সবারই আরও মনোযোগী হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।"
দিবসকেন্দ্রিক নাটকের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছেন ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ দেখা অভিনেত্রী দিলারা জামান।
মনোবেদনার কথা জানিয়ে এই বর্ষীয়ান অভিনেত্রী বলেন, “বিনোদনের তো এখন অনেক চ্যানেল, অনেক শাখা আছে। অনেক প্রসারিত, কিন্তু নাটক কম হচ্ছে এটা শুনলে আমাদের হৃদয়ে কষ্ট হয়। দিবসকেন্দ্রিক চেতনা নতুনদের মধ্যে তৈরি করা উচিত।“
এই অভিনেত্রী মনে করেন, জাতীয় দিবস ঘিরে মানুষের ভেতরে আবেগ জাগাতে নাটক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
“বিশেষ দিবসের প্রতি ভালোবাসা, আবেগ তৈরি করতে নাটক গুরুত্বপূর্ণ। নির্মাতাদের চিন্তাধারা হয়ত অন্যরকম বা তাদেরও কিছু কথা রয়েছে। আমি অভিনয়শিল্পী হিসেবে বলতে পারি এসব দিবস ধরে গল্পপ্রধান কাজ প্রয়োজন।“
বিশেষ দিবস ঘিরে নাটকের আগ্রহকে ‘অতীত’ বলে বর্ণনা করেছেন মামুনুর রহমান হৃদয় নামের এক দর্শক
বিশ্ববিদ্যালয় হৃদয় গ্লিটজকে বলেন, "একটা সময় ছিল টিভিতে নাটক দেখার অপেক্ষায় থাকতাম, বিশেষ দিবসগুলো ঘিরে সেই অপেক্ষা আরও বাড়ত। এখন তা যেন অতীত। মোবাইল আর ইন্টারনেটের ভিড়ে হারিয়ে গেছে সেই অনুষ্ঠানগুলো। ছোটবেলায় দেখা ভাষা আন্দোলনের গল্পভিত্তিক নাটকগুলোর প্রসার কমে গেছে, মনে হয় কিছু একটা হারিয়ে গেছে। শেষ কবে আবেগমাখা নাটক দেখেছি মনে করতে পারছি না।"
একই ধরনের কথা বলেছেন উদ্যোক্তা নিশাত তৃপ্তি।
তৃপ্তি বলেন,"একসময় শহীদ দিবসে হয় বাসা থেকে বের না হলেও টিভির সামনে বসে অনুষ্ঠান দেখা হত। খবর থেকে নাটক সব কিছুতে একটা আবেগ চলে আসত। এখন তেমন নাটক চোখে পড়ে না, দেখা হয় না। সময়টা যেন কেমন অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।"
তবে ভাষা দিবস নিয়ে নতুন নাটক এসেছে বাংলাদেশ টেলিভিশন-বিটিভিতে। রাত ৯টা ৫ মিনিটে প্রচার হবে নাটক ‘বর্ণমালার গান’।
জামিউর রহমান লেমনের রচনায় এটি প্রযোজনা করেছেন গোলাম মোর্শেদ। অভিনয় করেছেন নাজিয়া ফারহা, কবির হোসেন, জেবা জান্নাত, গাজী ফারুকসহ অনেকে।