“এমন মুহূর্ত যেকোনো নাট্যঅভিনেতার জন্য আনন্দের ও গর্বের,” বলেন বর্ষীয়ান এ অভিনেতা।
Published : 06 Dec 2024, 06:04 PM
অভিনেতা-নির্দেশক মামুনুর রশীদ যখন মঞ্চে এসে দাঁড়ালেন, তখন করতালিতে মুখর পুরো মিলনায়তন।
ঢাকার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায়র মঞ্চে বৃহস্পতিবার দেখা গেছে এমন দৃশ্য।
সেদিন আরণ্যক প্রযোজিত 'কম্পানি' নাটকে অভিনয় করেছেন মামুনুর রশীদ। এই নাটকটি রচনার পাশাপাশি নির্দেশনাও দিয়েছেন বর্ষীয়ান এই অভিনেতা।
সম্প্রতি শিল্পকলার মঞ্চে মামুনুর রশীদকে ‘কিছুদিন অভিনয় না করতে’ পরামর্শ দিয়েছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ। এই পরামর্শের পেছনে দেশের ‘বর্তমান বাস্তবতাকে’ কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছিলেন মহাপরিচালক।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন অধ্যাপক জামিল আহমেদ।
অনেকটা ‘প্রতিবাদ হিসেবেই’ আরণ্যক নাট্যদল মামুনুর রশীদকে নিয়ে শিল্পকলার মঞ্চে নাটক মঞ্চস্থ করেছে। আর হল ভর্তি দর্শকও তুমুল করতালিতে মামুনুর রশীদকে অভিবাদন জানিয়েছেন।
নাটক দেখতে আসা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক কামালউদ্দিন কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "শ্রদ্ধেয় ও প্রিয় নাট্যজন মামুনুর রশীদ তার রচিত ও নির্দেশিত নাটক ‘কম্পানি’র শেষ দৃশ্যে অভিনেতা হিসেবে মঞ্চে প্রবেশমাত্র হলভর্তি দর্শক করতালিসহ উল্লাস করছিলেন। এ এক অভূতপূর্ব দৃশ্য।"
এমন মুহূর্ত যেকোনো নাট্যঅভিনেতার জন্য আনন্দের ও গর্বের বলে মন্তব্য করেছেন মামুনুর রশীদ।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "কেউ নাটক বন্ধ করতে পারবে না। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও নাটক হয়েছে।
“সামনেও আমরা নাটক অব্যহত রাখব। বিভিন্ন সময় নাটক বন্ধের চেষ্টা অনেকেই করেছেন, কিন্তু নাটক বন্ধ হয়নি।"
অভিনয়শিল্পী ও নাট্যনির্দেশক জয়িতা মহলানবীশ ফেইসবুকে লেখেন, "আশাবাদী দিন। ভাঙন ধরানো যাবে না মহাজন। মামুনুর রশীদ আমাদের, জামিল আহমেদও আমাদের।
“ভাঙন ধরানো যাবে না মহাজন। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকব। আমাদের মধ্যে ভাঙন ধরানো যাবে না বাচ্চারা।"
'কম্পানি' নাটকে ২৫০ বছরের বেশি পুরনো সময়ের ঘটনা উঠে এলেও বর্তমান সময়ের সঙ্গে রয়েছে এর প্রাসঙ্গিকতা।
যুদ্ধের দামামায় ক্লাইভের কাছে পরাজিত হতে হয় বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে। ফলে বাংলা হারায় তার স্বাধীনতা। এ সময়ের মধ্যে বহুমুখী ষড়যন্ত্র এবং উত্থান-পতনসহ নানা কিছু দেখা যায় এ নাটকে।
নাট্যকার মামুনুর রশীদ বলেন, "ঔপনিবেশিক আমলের সেই পরিস্থিতির অনেক কিছুই এখনো বদলায়নি। এ কারণেই নাটকটি একইসঙ্গে ইতিহাসনির্ভর ও সমকালীন।"
সেদিন নাটকটির দশম প্রদর্শনী হয়েছে বলে আরণ্যক নাট্যদল জানায়।