রণিতের ‘এস সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রোটেকশন এজেন্সি’ অমিতাভ বচ্চন, অক্ষয় কুমার, করণ জোহরের মত বলিউড তারকাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে।
Published : 23 Jan 2025, 03:18 PM
ছুরিকাহত ভারতীয় অভিনেতা সাইফ আলী খান হাসপাতাল ছাড়ার আগে ভেবেছিলেন আবাসন পরিবর্তন করবেন। পরে সেটি আর করেননি, শেষমেষ বান্দ্রার ‘সৎগুরু শরণ’ নামের বহুতল ভবনে নিজের ফ্ল্যাটেই ফিরেছেন নায়ক। তবে বদল এনেছেন তার নিরাপত্তা ব্যবস্থায়। এ কাজে সাইফ ভরসা করছেন অভিনেতা রণিত রায়ের উপরে।
এনডিটিভি লিখেছে, সাইফ ও তার পরিবারের সুরক্ষার দায়িত্ব পড়েছে রণিতের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ‘এস সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রোটেকশন এজেন্সির’ উপরে।
হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়ে মঙ্গলবার সাইফ যখন বান্দ্রায় ফেরেন, তার আগেই ওই ‘সৎগুরু শরণ’ ভবনকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেয় রণিতের টিম।
এছাড়া হাসপাতাল থেকে বাড়ির যাত্রাপথেও এই কোম্পানির কর্মীদের উপস্থিতি ছিল দেখার মত।
রণিত বলেন, “আমরা সাইফের সঙ্গে আছি, তিনি ভালো আছেন। আশাকরি ভালো থাকবেন।“
রণিতের ‘এস সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রোটেকশন এজেন্সি’ অমিতাভ বচ্চন, অক্ষয় কুমার, করণ জোহরের মত বলিউড তারকাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে।
এদিকে পুলিশের জেরার মুখে সাইফকে ছুরিকাঘাত করার ঘটনায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশের শরিফুল ইসলাম শেহজাদ জানিয়েছেন তিনি কীভাবে অভিনেতার ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেছিলেন গত বুধবার।
সাইফের ওপর হামলার ঘটনাটি ‘পুননির্মাণ’ করতে শেহজাদকে সাইফিনার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।এতে পুলিশ জানতে পেরেছে সৎগুরু শরণের মূল ফটক দিয়েই শেহজাদ ভেতরে ঢুকেছিলেন।
মুম্বাই পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেছেন ভেতরে ঢুকে শেহজাদ দেখেছিলেন, ভেতরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দুইজন নিরাপত্তাকর্মী তখন ঘুমাচ্ছিলেন। দুইজনের একজন ছিলেন নিচতলার একটি কক্ষে। আর একজন মূল ফটকের গায়ে হেলান দিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন।
এরপর শেহজাদ পরীক্ষা করে দেখেন সেখানকার ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরাও অচল।
শেহজাদ পুলিশকে বলেছেন, প্রথমে তিনি ভবনের পেছনের সিড়ি দিয়ে এবং পরে পাইপ বেয়ে সাইফ-কারিনার ফ্ল্যাটের পেছনে দেওয়ালে পৌঁছে যান। এরপর শৌচাগারের জানালার কাচ ভেঙে সাইফ ও কারিনা কাপুরের ছেলেদের ঘরে প্রবেশ করেন।
পুলিশ প্রথমে জানিয়েছিল বাংলাদেশের নাগরিক শেহজাদ চার মাস ধরে মুম্বাইয়ে থাকছেন। নাম পাল্টে রাখেন বিজয় দাস। তিনি একটি হাউজিং কোম্পানিতে চাকরি করতেন। এখন পুলিশের ভাষ্য, এক ডান্স বারে কাজ করতেন শেহজাদ।
এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে আসা ছবি দেখে শেহজাদকে শনাক্ত করেছেন ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সালাম।
তিনি বলেন, “২০১৭ সালে মোল্লারহাট স্টিল ব্রিজের কাছে ভাড়ায় মোটরসাইকেলের চালক রফিকুল ইসলামকে হত্যার ঘটনায় রাজাবাড়িয়া গ্রামের মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম শেহজাদকে আসামি করা হয়। এ ঘটনার পরে তিনি এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান।”
এলাকায় থাকার সময় ছিনতাই, চুরি ও মারামারিতে জড়িত থাকারও অভিযোগ আছে শেহজাদের বিরুদ্ধে।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, সাইফ ও কারিনা কাপুরের ছোট ছেলে চার বছরের জাহাঙ্গীর আলী খানকে অপহরণ করে এক কোটি রুপি আদায় করাই ছিল শেহজাদের মূল উদ্দেশ্য।ওই টাকা নিয়ে তিনি বাংলাদেশে ফিরতে চেয়েছিলেন বলেও ভাষ্য মুম্বাই পুলিশের।
মুম্বাই পুলিশ বলছে, সাত মাস আগে মেঘালয়ের ডাউকি নদী পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে আসার পর, ভারতীয় পরিচয়পত্র বানানোর চেষ্টা করেছিলেন শেহজাদ। তিনি প্রথমে যান পশ্চিমবঙ্গে। সেখানো কোনো একজনের আধার কার্ড ব্যবহার করে সিমকার্ড নিয়েছিলেন শেহজাদ।
ওই সিমকার্ডটি খুকুমণি জাহাঙ্গীর নামে পেয়েছে পুলিশ। পরে মুম্বাইয়ে এসে বিজয় দাস নামে নিজের পরিচিতি তৈরি করেন। এছাড়া নিজের জন্য একটি আধার কার্ডও বানাতে চেষ্টা করেছিলেন শেহজাদ, কিন্তু সে কাজে আগাতে পারেননি। তবে ওই সিম থেকে বাংলাদেশের কয়েকটি নম্বরে ফোন করতেন শেহজাদ।
মুম্বাইয়ে আসার পর শেহজাদ প্রথমে ভেবেছিলেন চুরি করবেন, পরে তিনি পরিকল্পনা বদলান।
নতুন পরিকল্পনায় শেহজাদ ঠিক করেন মুম্বাইয়ে অভিজাত এলাকা বান্দ্রায় কিছু একটা করবেন। তাই ঠিক করেন সাইফের বাড়িতে ঢুকে তার কোনো একটি সন্তানকে অপহরণ করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেবেন।
শেহজাদকে সাইফের বাড়ি ঘুরিয়ে এনেছে পুলিশ
প্রথমে চিনতেই পারিনি উনি সাইফ আলী: অটোরিকশা চালক
সিসিটিভির ব্যক্তি কী সাইফের হামলাকারী? পুলিশের অভিযান জোরদার
সাইফের হামলাকারীকে দেখা গেছে বান্দ্রা স্টেশনে
গভীর রাতে নিজের বাড়িতে ছুরিকাহত বলিউড তারকা সাইফ আলী খান
আড়াই ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের পর আইসিউতে সাইফ
আর যদি ২ মিলিমিটার গভীরে ঢুকত ছুরি...
গাড়ি না পেয়ে রক্তাক্ত সাইফকে অটোতে হাসপাতালে নেন ইব্রাহিম