“তার সাদা কুর্তা রক্তে এতটাই ভিজে গিয়েছিল যে পুরোটা লাল হয়ে গিয়েছিল,” বলেন অটোরিকশা চালক ভজন সিং।
Published : 18 Jan 2025, 10:45 PM
গভীর রাতে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতের শিকার হয়ে রক্তে ভেসে যাচ্ছিলেন বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খান, হাতের নাগালে কোনো গাড়ি প্রস্তুত না থাকায় হাসপাতালে রওনা দেন অটোরিকশাতে করেই।
সারা শরীরে রক্ত দেখে অটোরিকশা চালক ভজন সিং রানা ভেবেছিলেন কোনো চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা। দ্রুত রিকশা চালিয়ে যান হাসপাতালে, যদিও আহত সাইফকে তখনও তিনি চিনতে পারেননি।
মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় বুধবার রাত আড়াইটার সেই ঘটনা অটোরিকশা চালক ভজন সিংয়ের বর্ণনায় লিখেছে পিঙ্কভিলা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, সাইফকে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে পৌঁছে দেন অটোরিকশা চালক ভজন সিং। বান্দ্রার রাস্তায় এক নারীর চিৎকার শুনে তিনি ছুটে গিয়ে রক্তাক্ত একজনকে দেখতে পান।
ভজন সিং বলেন, “প্রথমে চিনতেই পারিনি যে আহত ব্যক্তি সাইফ আলি খান। তার সাদা কুর্তা রক্তে এতটাই ভিজে গিয়েছিল যে পুরোটা লাল হয়ে গিয়েছিল। তার সঙ্গে সাত-আট বছরের একটা বাচ্চা ছিল, অল্পবয়সী এক তরুণও ছিলেন। আমি ভেবেছি, চারদিকে যেমন চুরি-ছিনতাইয়ে হেনস্তার ঘটনা ঘটে, তেমনই কিছু হবে।”
তিনি বলেন, “আঘাত পাওয়ার পরও তিনি সম্পূর্ণ শান্ত ছিলেন। নিজেই উঠে অটোতে বসেন। যদিও তাদের আলাপের ইংরেজি আমি বুঝতে পারিনি, আমি তড়িঘড়ি করেই হাসপাতালে পৌঁছালাম।
“এরপর তিনি (সাইফ) হাসপাতালের রক্ষী আর কর্মীদের উদ্দেশে বললেন, ‘দ্রুত স্ট্রেচার আনুন, আমি সাইফ আলি খান। আমাকে টিটেনাস শট দিন’।”
এ অভিনেতাকে ছুরিকাঘাত করা হয় বুধবার রাত আড়াইটার দিকে। তার বাড়িতে প্রবেশ করা এক ব্যক্তি তাকে ছুরি মেরে পালিয়ে যান। পরে তার ছবিও এসেছে সংবাদমাধ্যমে। ধারণা করা হচ্ছে হামলাকারী ‘চুরি করতে’ ওই বাড়িতে ঢুকেছিলেন।
হামলার পর তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য একটি গাড়িও বাড়িতে প্রস্তুত ছিল না। উপায় না পেয়ে তাকে অটোরিকশায় করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান ছেলে ইব্রাহিম আলী খান। সঙ্গে ছিল ছোট তৈমুরও।
পাঁচ ঘণ্টার অস্ত্রোপচার শেষে সাইফের শরীর থেকে ভাঙা ছুরি আড়াই ইঞ্চি টুকরা বের করেন চিকিৎসকরা।
অভিনেতাকে আইসিইউ থেকে বিশেষ কেবিনে স্থানান্তরের তথ্য দিয়ে লীলাবতী হাসপাতালের চিকিৎসক নীতিন নারায়ণ বলেন, “অস্ত্রোপচার তো বটেই, মেরুদণ্ডের ক্ষতের কারণে আগামী এক সপ্তাহের জন্য শুভাকাঙ্ক্ষীদের চলাচল সীমিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “সাইফ ভালো আছেন। অস্ত্রোপচারের পর আমার তাকে হাঁটিয়েছি। তিনি সুন্দর স্বাভাবিকভাবে হেঁটেছেন। তেমন একটা ব্যথা এখন নেই। বড় কোনো সমস্যাও আমরা দেখছি না।
হাসপাতালের সিইও নীরাজ উত্তমানী বলেন, “সাইফ আলী খান হেঁটে হাসপাতালে ঢুকেছেন, স্ট্রেচার ব্যবহার করেননি। তিনি সিংহের মত হেঁটে এসেছিলেন। সত্যি, তিনি একজন আসল নায়ক।
“তবে তিনি ভাগ্যবান। ওই ছুরিটি যদি মেরুদণ্ডের কাছের ওই জায়গায় আর মাত্র ২ মিলিমিটার ঢুকে যেত, তাহলে তার আঘাতের ভয়াবহতার কোনো সীমা থাকত না।”
অ্যানেসথেসিয়ার চিকিৎসক নিশা গান্ধী বলেন, “সাইফের মেরুদণ্ডের আঘাত খুবই গভীর ছিল। অল্পের জন্য বেঁচে গেছে তিনি।”
আরও পড়ুন-
সাইফের হামলাকারীকে দেখা গেছে বান্দ্রা স্টেশনে
সিসিটিভির ব্যক্তি কী সাইফের হামলাকারী? পুলিশের অভিযান জোরদার
আর যদি ২ মিলিমিটার গভীরে ঢুকত ছুরি
গাড়ি না পেয়ে রক্তাক্ত সাইফকে অটোতে হাসপাতালে নেন ইব্রাহিম
গভীর রাতে নিজের বাড়িতে ছুরিকাহত বলিউড তারকা সাইফ আলী খান
আড়াই ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের পর আইসিউতে সাইফ