ভিডিওতে দেখা গেছে, বুধবার রাত ২টা ৩৩ মিনিটে সাইফের বাড়ির সিঁড়ি দিয়ে এক যুবক দ্রুত নেমে যাচ্ছেন।
Published : 17 Jan 2025, 10:34 AM
ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ভিডিওতে ধরা পড়া এক যুবকের ছবি প্রকাশ করে মুম্বাই পুলিশ বলছে, তিনিই সম্ভবত ভারতীয় অভিনেতা সাইফ আলী খানের হামলাকারী।
এই ছবি ধরেই হামলাকারীকে ধরতে মুম্বাই পুলিশ অভিযান জোরদার করেছে বলে লিখেছে এনডিটিভি।
পুলিশ জানিয়েছে, আপৎকালীন জানালা ব্যবহার করে ওই যুবক সাইফের বান্দ্রার বাড়িতে প্রবেশ করেছিলেন। আর নামার সময় অ্যাপার্টমেন্টের পেছনের সিড়ি ব্যবহার করেছিলেন ওই ব্যক্তি।
পুলিশের প্রকাশ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, বুধবার রাত ২টা ৩৩ মিনিটে সাইফের বাড়ির পেছনের সিঁড়ি দিয়ে দ্রুত এক যুবক নেমে যাচ্ছেন। তাকে সিসিটিভির দিকেও তাকাকে দেখা গেছে। সেই ব্যক্তি সাদা কলারের কালো টি শার্ট পরেছেন। গলার কাছে ঝুলছে গামছা, পরনে জিনস। কাঁধে একটি ব্যাগও রয়েছে।
অভিনেত্রী স্ত্রী কারিনা কাপুর, দুই ছেলে তৈমুর আলী খান ও জাহাঙ্গীর আলী খানকে নিয়ে সাইফ বান্দ্রার ‘সৎগুরু শরণ’ নামের ১২ তলা অ্যাপার্টমেন্টের চারতলায় বিশাল একটি ফ্ল্যাটে থাকেন। ওই বাড়িতে তিনজন গৃহকর্মীও থাকেন।
মুম্বাই পুলিশ আগে জানিয়েছিল ‘চুরির’ উদ্দেশেই ওই ব্যক্তি সাইফের বাড়িতে ঢুকেছিল।
‘চোর’কে দেখার পর গৃহকর্মী ইলিয়ামা ফিলিপস ওরফে লিমা চিৎকার শুরু করে। তাতেই ঘুম ভাঙে পতৌদির নবাব পরিবারের ছেলে সাইফের। সে সময় 'চোর ' লিমার সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়ায় এবং আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে এক কোটি টাকা দাবি করে বলে ভাষ্য ওই পরিচারিকার।
চিৎকার শুনে ঘুম ভেঙে গিয়ে সাইফ সেখানে হাজির হলে তাকে দেখে ওই ‘চোর’ অভিনেতার ছোট ছেলে জাহাঙ্গীরের ঘরে ঢুকে পড়ে। বাধা দিতে গেলে সাইফের সঙ্গে ‘চোরের’ ধস্তাধস্তি হয় এবং তাকে ছুরিকাঘাত করে।
গুরুতর আহত অবস্থায় সাইফকে হাসপাতালে নেওয়ার পর লীলাবতী হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলেছিলেন ছয়টি গভীর ক্ষত রয়েছে সাইফের শরীরে, যার মধ্যে মেরুদণ্ডের খুব কাছে ছুরির আঘাতটি বিপজ্জনক।
বৃহস্পতিবার আড়াই ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচারের পর সাইফ আলী খানকে ‘শঙ্কামুক্ত’ বলেছেন চিকিৎসকরা।
লীলাবতী হাসপাতালের সিইও নীরাজ উত্তমানী বলেন, “সাইফকে আমরা এখন বিপদমুক্ত বলতে পারছি। তার অবস্থা স্থিতিশীল। অভিনেতার মেরুদণ্ডের কাছে দুইটি গভীর ক্ষত এবং ঘাড়ে চারটি ক্ষত ছিল। তার শরীরে নিউরোসার্জারি এবং একটি প্লাস্টিক সার্জারি করা হয়েছে।“
অস্ত্রোপচারের পর সাইফকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র-আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
পুলিশ কী বলছে?
এখন পর্যন্ত ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ২৫-৩০টি ভিডিও দেখেছে পুলিশ। সেটা দেখেই পুলিশের অনুমান, হামলার আগে থেকেই অভিযুক্ত ব্যক্তি বাড়ির ভেতরে উপস্থিত ছিল।
মুম্বাই পুলিশের ডেপুটি কমিশনার দীক্ষিত গেডাম বলেন, “আমরা ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ভিডিও স্ক্যান করেছি। হামলাকারী আগেই হয়ত দুপুরে কোনো এক সময় বাড়িতে ঢুকেছিলেন।“
বাড়ির তিন গৃহকর্মীকে থানায় নিয়ে জেরা করেছে পুলিশ এবং পরিচারিকা লিমাকে সন্দেহের আওতায় রেখেছে তদন্তকারী দল।
এছাড়া ফরেনসিক টিম গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছে বান্দ্রার বাড়ি থেকে।
অভিযুক্তকে ধরতে মাঠে নেমেছে মুম্বাই পুলিশের ২০টি টিম। এছাড়া স্পেশাল ক্রাইম ব্রাঞ্চও আলাদাভাবে এই ঘটনার তদন্ত করছে। শিগগিরই ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে আশা করছে পুলিশ।
তবে কেবল চুরির উদ্দেশেই ওই ব্যক্তি বাড়িতে ঢুকে সাইফকে আঘাত করেছেন কী না সেটি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এই পরিস্থিতিতে দুই ছেলের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কারিনা। এরি মধ্যে তাদের বান্দ্রার বাসভবনেও পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে।
গাড়ি না পেয়ে রক্তাক্ত সাইফকে অটোতে হাসপাতালে নেন ইব্রাহিম
গভীর রাতে নিজের বাড়িতে ছুরিকাহত বলিউড তারকা সাইফ আলী খান