বাবার আহত হওয়ার খবর ফোনে পেয়ে পতৌদি প্যালেসে ছুটে আসেন ইব্রাহিম।
Published : 16 Jan 2025, 09:43 PM
ভারতের হিন্দি সিনেমার অভিনেতা সাইফ আলী খান ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হওয়ার পর যখন রক্তে ভেসে যাচ্ছিলেন, তখন তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য একটি গাড়িও বাড়িতে প্রস্তুত ছিল না। উপায় না দেখে অটোতে করে বাবাকে মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে নিয়ে যান তার বড় ছেলে ইব্রাহিম আলী খান।
এনডিটিভি লিখেছে, বান্দ্রার বাড়িতে বর্তমান স্ত্রী কারিনা কাপুর, দুই ছেলে তৈমুর আলী খান ও জাহাঙ্গীর আলী খানকে নিয়ে থাকেন সাইফ। এছাড়া ঘরের কাজের জন্য তিনজন কর্মীও থাকেন ওই বাড়িতে।
বাবার আহত হওয়ার খবর ফোনে পেয়ে ওই বাড়িতে ছুটে আসেন সাইফ ও তার প্রথম স্ত্রী অমৃতা সিংয়ের ছেলে ইব্রাহিম আলী খান।
সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, বাবাকে অটোতে তুলেছেন ইব্রাহিম। ওই অটোর পাশে দাঁড়িয়ে কারিনা বাসার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন।
সাইফের বাড়ি থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরেই লীলাবতী হাসপাতাল।
সাইফকে হাসপাতালে নেওয়ার পর লীলাবতী হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলেছিলেন ছয়টি গভীর ক্ষত রয়েছে সাইফের শরীরে, যার মধ্যে মেরুদণ্ডের খুব কাছে ছুরির আঘাতটি বিপজ্জনক।
বৃহস্পতিবার আড়াই ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচারের পর সাইফ আলী খানকে ‘শঙ্কামুক্ত’ বলেছেন চিকিৎসকরা।
লীলাবতী হাসপাতালের সিইও নীরাজ উত্তমানী বলেন, “সাইফকে আমরা এখন বিপদমুক্ত বলতে পারছি। তার অবস্থা স্থিতিশীল। অভিনেতার মেরুদণ্ডের কাছে দুইটি গভীর ক্ষত এবং ঘাড়ে চারটি ক্ষত ছিল। তার শরীরে নিউরোসার্জারি এবং একটি প্লাস্টিক সার্জারি করা হয়েছে।“
অস্ত্রোপচারের পর সাইফকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র-আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টা ধরে তার শারীরিক পরস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক নীরাজ উত্তমানী।
সাইফ ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে ধারণা করছে তার চিকিৎসক টিম।
বুধবার রাত আড়াইটার দিকে এক ব্যক্তি অভিনেতার বান্দ্রার বাড়িতে প্রবেশ করে। সেখানে সাইফকে ছুরিকাঘাত করে সে। ধারণা করা হচ্ছে হামলাকারী চুরি করতেই ওই বাড়িতে ঢুকেছিল।
ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বলছে, ‘চোর’ বাড়িতে ঢোকার পর গৃহকর্মীরা চিৎকার শুরু করে। তাতেই ঘুম ভাঙে পতৌদির নবাব পরিবারের ছেলে সাইফের। সে সময় 'চোর 'এক গৃহকর্মীর সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়ায়। এরপর সাইফ গিয়ে সেখানে পড়লে তাকে দেখে ওই ‘চোর’ অভিনেতার ছোট ছেলের ঘরে ঢুকে পড়ে। বাধা দিতে গেলে সাইফের সঙ্গে ‘চোরের’ ধস্তাধস্তি হয় এবং তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়।
এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে এ ঘটনায় সাইফের বাড়ির তিনকর্মীকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
পতৌদি প্যালেসের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ভিডিও দেখে বুধবার সন্ধ্যা বা রাতে সন্দেহভাজন কাউকে ওই বাড়িতে প্রবেশ করতে দেখা যায়নি বলে জানিয়েছে মুম্বাই পুলিশ।
মুম্বাই পুলিশের ডেপুটি কমিশনার দীক্ষিত গেডাম বলেন, “আমরা ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ভিডিও স্ক্যান করেছি। হামলাকারী আগেই হয়ত দুপুরে কোনো এক সময়বাড়িতে ঢুকেছিলেন।“
বাড়ির গৃহকর্মীর সঙ্গে সাইফকে হামলাকারীর ‘সম্পর্ক আছে’ বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। ‘চুরি’ই বাড়িতে ঢোকার উদ্দেশ্য বলে ধরে নিচ্ছে পুলিশ। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।