মিশ্র ঋণেও বাংলাদেশের অগ্রাধিকার দারিদ্র্য কমানো

উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ায় বাংলাদেশ এখন আগের মতো কম সুদে ঋণ পাচ্ছে না

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2022, 03:28 PM
Updated : 23 Nov 2022, 03:28 PM

দাতাদের কাছ থেকে মিশ্র ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রেও দারিদ্র্য হ্রাস, স্বাস্থ্য, প্রাথমিক শিক্ষা এবং গ্রামীণ অবকাঠামোই বাংলাদেশের প্রধান অগ্রাধিকার বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

বুধবার মিশ্র অর্থায়ন নিয়ে রাজধানীর শেরে বাংলানেগরের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি এ বিষয়ে কথা জানান।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “ব্লেন্ডেড ফাইন্যান্সিংয়ের (মিশ্র সুদের অর্থায়ন) ক্ষেত্রেও আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার হচ্ছে দারিদ্র্য হ্রাস, স্বাস্থ্য, প্রাথমিক শিক্ষা এবং বিদ্যুৎ। সবুজ অর্থায়ন অবশ্যই আমাদের অগ্রধিকারে রয়েছে। কিন্তু আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার আমাদের প্রান্তিক মানুষ এবং তাদের আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে জীবন মান উন্নয়ন করা।”

গত বছর নভেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম বৈঠকের ৪০তম প্লেনারি সভায় বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের বিষয়ে প্রস্তাব গৃহীত হয়।

একইসঙ্গে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ১ হজার ২৩০ ডলারের বেশি (বর্তমানে ২ হজার ৮২৪ ডলার) হওয়ায় দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে আগের মত সস্তা ঋণ পাচ্ছে না। বর্তমানে কিছু সস্তা আর কিছু বেশি সুদ মিলে একটা মিশ্র ঋণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

২০১৮ সাল পর্যন্ত বিশ্ব ব্যাংক মাত্র শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং জাপান শূন্য দশমিক ১ শতাংশ সুদে বাংলাদেশকে ঋণ দিত। কিন্তু মাথাপিছু আয় বেড়ে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে চলে যাওয়ায় বাংলাদেশের ঋণের সুদ হার বেড়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বিশ্ব ব্যাংকের ঋণে সুদ হার সর্বোচ্চ ২ শতাংশ এবং জাপানি ঋণে প্রায় ১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে অর্থায়নের ধরন নিয়ে এম এ মান্নান বলেন, “আমাদের জনগণ ঋণের বা অর্থায়নের ধরন বোঝেন না। তারা খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং ঠিকমতো বিদ্যুৎ চান। সুতরাং, আমরা সাধারণ মানুষের চাহিদা অনুযায়ী বিনিয়োগ অগ্রাধিকার দেব। এই অগ্রাধিকারের মধ্যেই আমাদের সবুজ অর্থনীতি গড়ে তোলার কৌশলও টেকসই উন্নয়ন কৌশলের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়েছে।

“আমরা চাই উন্নত বিশ্ব ও উন্নয়নসহযোগিরা এসডিজি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবে।”

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক শামসুল আলম অনুষ্ঠানে বলেন, “এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট) বাস্তবায়নের মাধ্যমেই আমরা সবুজ অর্থনীতি নিশ্চিত করতে চাই। উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে আমরা এসডিজির প্রয়োজনীয় অর্থায়ন পেলেই আমাদের অভিষ্টে আমরা পৌঁছাতে পারব।

“বর্তমানে আমরা নিজস্ব অর্থায়ন দিয়েই আমরা অর্থায়ন প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। তবে পিপিপির মাধ্যমেও আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি। যদিও পিপিপিতে আমর উল্লেখযোগ্য সফলতা এখনো পাইনি।”

জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা (ইউএনডিপি) ও ব্রিটিশ হাই কমিশনের সহযোগিতায় সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) আয়াজিত এ কর্মশালায় জিইডি সদস্য মো. কাওসার আহমেদের সভাপতিত্বে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার উপস্থিত ছিলেন।