বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে দেশে সঙ্কট হবে না, বলেন তারা।
Published : 24 Oct 2022, 09:03 PM
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা থাকলেও বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আগামী বছর বাংলাদেশে কোনো খাদ্য ঘাটতি হবে না বলে মনে করছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক ও খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
সোমবার বঙ্গোপসাগর থেকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানবে এমন পূর্বাভাসের মধ্যে তারা বর্তমান ফসল উৎপাদন, খাদ্যের সংকট না থাকা নিয়ে কথা বলেন।
ইতোমধ্যে সন্ধ্যায় বরিশাল ও চট্টগ্রাম উপকূলের মাঝামাঝি ভোলার কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড়টি। উপকূলীয় এলাকায় চলছে ভারী বর্ষণ ও জলোচ্ছ্বাস।
সিত্রাংয়ের যে বিস্তার, তাতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১৩ জেলায় এ ঝড় তাণ্ডব চালাতে পারে বলে আবহাওয়া অফিসের শঙ্কা। ভারী বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে জলোচ্ছ্বাসে মাঠে থাকা আমনের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সোমবার টাঙ্গাইলে কৃষিমন্ত্রী ও বরিশালে আরেক অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী দেশের খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন।
দুই মন্ত্রণালয়ের পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে খাদ্য সঙ্কট নিয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরা হয়।
কৃষিমন্ত্রী টাঙ্গাইল শহরের পৌর উদ্যানে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে বলেন, দেশে মাঠভর্তি ফসল রয়েছে। আমনের অবস্থা ভালো, সোনালী ফসল হবে। এছাড়া দেশে যথেষ্ট খাদ্য মজুদ রয়েছে। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বাংলাদেশে খাদ্যের কোনো সঙ্কট হবে না, দুর্ভিক্ষ হবে না।
“পৃথিবীর অন্য যে কোনো দেশে খাদ্যের অভাব হতে পারে, দুর্ভিক্ষ হতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশ কোনো খাদ্য সঙ্কটে পড়বে না। এই মুহূর্তে দেশে খাদ্যের কোনো হাহাকার নাই, আগামী দিনেও হাহাকার হবে না।”
সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী বিএনপির অপরাজনীতি নিয়েও কথা বলেন।
রাজপথের নিয়ন্ত্রণ বিএনপির নিকট থাকবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “রাজপথের নিয়ন্ত্রণ সবসময়ই আওয়ামী লীগের হাতে ছিল, এখনও আছে, আগামী দিনেও থাকবে। রাজাকার আর জামায়াতকে সাথে নিয়ে বিএনপি যতই আন্দোলন করুক, রাজপথের নিয়ন্ত্রণ তাদের কাছে থাকবে না।
উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং
“বিএনপি আন্দোলন করে সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না। বর্তমান সরকার একটি ন্যায়সঙ্গত, জনগণের নির্বাচিত সাংবিধানিক সরকার, মেয়াদের শেষ দিন পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে।“
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আমিরুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, সদস্য এ বি এম রিয়াজুল কবির কাওছার, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন ।
এদিন বরিশাল সার্কিট হাউজে খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় খাদ্যমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীতে খাদ্য সঙ্কট হতে পারে এমন সতর্কবার্তা বিভিন্ন সংস্থা হতে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের মাটি সোনার চেয়ে খাঁটি, এদেশের উর্বর মাটিতে বছরব্যাপী শস্য ফলে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে বাংলাদেশে খাদ্য সংকট হবে না বলে আশা তার।
দেশে প্রতিবছর চার কোটি টন ধান উৎপাদন হলেও চকচকে চালের ভাত খাওয়ার অভ্যস্ততার কারণে কিছু চাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেন তিনি। সেজন্য খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে চকচকে চালের ভাত খাওয়ার অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
“ধান থেকে চাল তৈরি করতে মিলাররা ৪/৫ বার মেশিনে দেন, এতে চালের পুষ্টিকর অংশ চলে যায়; থাকে শুধু কার্বোহাইড্রেট। বারবার চাল মেশিনে পালিশ করতে গিয়ে চালের একটা অংশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বিদ্যুতের খরচও যোগ হয়। চালের দাম বেড়ে যায় যা পরবর্তীতে ভোক্তার পকেট থেকে পরিশোধ করতে হয়,” বলেন সাধন চন্দ্র।
[এ প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন টাঙ্গাইল ও বরিশাল প্রতিনিধি]