এ হারও গত দেড় দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন বলে আইএমইডির সবশেষ পরিসংখ্যান বলছে।
Published : 17 Apr 2025, 11:07 PM
চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে ৩৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪২ দশমিক ৩০ শতাংশ।
শুধু মার্চে সংশোধিত এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মূল এডিপি বাস্তবায়নের তথ্য দেওয়া হয়েছিল ২৪ দশমিক ২৭ শতাংশ; সে হিসেবে নয় মাসে ৩০ শতাংশের আশেপাশে থাকার কথা থাকলেও এডিপি কাটছাঁট করায় বাস্তবায়নের হার বেড়ে গেছে।
তবে এ হারও গত দেড় দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন বলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সবশেষ পরিসংখ্যান বলছে।
অর্থবছরের একেবারে প্রথমভাগে ক্ষমতার পালাবদলের মধ্যে ধীর হয়ে পড়া উন্নয়ন কাজে ডিসেম্বরে কিছুটা গতি বাড়লেও পরের দুই মাসে তা আবার ধীর হয়ে পড়ার তথ্য দিচ্ছে এডিপির অর্থ ব্যয়।
আইএমইডির তথ্য বলছে, মার্চে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ হয় ১৫ হাজার ৩৩৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, যা মোট সংশোধিত এডিপির ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মার্চে এ হার ছিল ৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ; খরচ হয়েছিল ২২ হাজার ৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
ব্যয় ও বাস্তবায়ন হার- উভয় বিবেচনায়ই চলতি অর্থবছরের মার্চে এডিপি বাস্তবায়ন কম হয়েছে।
সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে ৮২ হাজার ৮৯৪ কোটি ৮ লাখ টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১ লাখ ৭ হাজার ৬১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার চলতি অর্থবছরে এডিপিতে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ রেখে বাজেট পাস করেছিল।
ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে সরকার পতনকে কেন্দ্র করে জুলাই-অগাস্ট জুড়ে জ্বালাও পোড়াওয়ের পর এডিপি বাস্তবায়নে ধস নামে।
শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর দায়িত্বে আসা অন্তর্বর্তী সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে জোর দেয়। আগের সরকারের নেওয়া অনেক প্রকল্পে অর্থছাড় কমিয়ে দেওয়া হয়। এতে চলমান অনেক প্রকল্পের কাজও স্থবির হয়ে যায়। এসব মিলিয়ে এডিপির বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয় কমে যায় বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভাষ্য।
সাধারণত অর্থবছরের প্রথমদিকে এডিপির ব্যয়ের পরিমাণ কম থাকে। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এবার তা আরও কমে গেছে।
একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যয় সাশ্রয়ী নীতির প্রভাবও পড়েছে এডিপি বাস্তবায়নে। সরকার কম ব্যয়ের দিকে ধাবিত হয়ে এটি কাটছাঁটও করেছে। সংশোধিত এডিপিতে টাকার অঙ্কে কমানো হয়েছে ৪৯ হাজার কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের রেখে যাওয়া চলতি অর্থবছরের ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকার এডিপি কমিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা করেছে। সবচেয়ে বেশি কমিয়েছে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দসহ ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি ৯০ লাখ টাকার এডিপি চূড়ান্ত হয়েছিল। কমানোর পর এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য ব্যয়ের বরাদ্দসহ আরএডিপির আকার দাঁড়ায় ২ লাখ ২৬ হাজার ১২৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা; অর্থ্যাৎ কমেছে ১৮ দশমিক ৭২ শতাংশ বা ৫২ হাজার ১৬২ কোটি টাকা।
৮ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন দেড় দশকে সর্বনিম্ন
একমাস পরই ধীরগতি, ৭ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন সাড়ে ২১%
এডিপির আকার কমল ১৮%, স্বাস্থ্য-শিক্ষায় সবচেয়ে বেশি