গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর গণশুনানির সিদ্ধান্ত জানাতে সংবাদ সম্মেলনে আসছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন।
Published : 30 Jun 2019, 03:34 PM
রোববার বিকাল ৪টায় ওই সংবাদ সম্মেলনে গ্যাসের দাম সমন্বয়ের বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে বলে ট্যারিফ বিভাগের উপ পরিচালক কামরুজ্জামান জানান।
আমদানি করা তরলীকৃত প্রকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যোগ হওয়ার পর ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় তা সমন্বয়ের প্রস্তাব করেছিল পেট্রোবাংলা এবং বিতরণ সংস্থাগুলো। ওই প্রস্তাবের ওপর গত ১১ থেকে ১৪ মার্চ গণশুনানি করে বিইআরসি।
বিতরণকারী কোম্পানিগুলো গ্যাসের দাম গড়ে ১০২ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করলেও তাকে অযৌক্তিক হিসেবে বর্ণনা করে কমিশনের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন সে সময় বলেছিলেন, বাস্তবতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতেই গ্যাসের নতুন মূল্য ঠিক করা হবে।
বিতরণ কোম্পানিগুলো প্রতিদিন ৯ মিলিয়ন কিউবিক ফিট (এমএমসিএফডি) এলএনজি আমদানির হিসাব ধরে দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করলেও বিইআরসির কারিগরি কমিটির মূল্যায়নে বলা হয়, বর্তমানে ৩২০ এমএমসিএফডি এলএনজি আমাদানি হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে (২০১৯-২০ অর্থবছরে) ৮০০ এমএমসিএফডি এলএনজি আমাদনি হতে পারে ধরে বিইআরসি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির শুনানি করেছে।
কামরুজ্জামান বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী গণশুনানির ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে ফলাফল ঘোষণা করতে হয়। সেই সময় সীমার শেষ পর্যায়ে এসে গ্যাসের দাম নিয়ে ঘোষণা দিতে যাচ্ছে বিইআরসি।”
বিইআরসির চেয়ারম্যান ও সদস্যরাও বিকালের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন বলে জানান কামরুজ্জামান।
সর্বশেষ ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্যাসের দাম গড়ে ২২ দশমিক ৭০ শতাংশ বাড়ানো হয়। মার্চ ও জুলাই থেকে দুই ধাপে তা বাস্তবায়িত হয়।
এরপর গতবছর এলএনজি আমদানির প্রেক্ষাপটে আবাসিক ও বাণিজ্যিক সংযোগ বাদে অন্য ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম বাড়ানোর জন্য আবেদন করে বিতরণ কোম্পানিগুলো।
ওই আবেদনের ওপর শুনানি করে ভোটের আগে বিইআরসির সিদ্ধান্তে বলা হয়, “গ্যাসের উৎপাদন, এলএনজি আমদানি, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যমান মূল্যহার পরিবর্তন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
এরপর চলতি বছরের শুরুতে গ্যাসের দাম বাড়াতে আবার তোড়জোড় শুরু হলে ভোক্তা অধিকার সংগঠন, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক দলসহ সমাজের বিভিন্ন অংশ থেকে তার বিরোধিতা করা হয়।
এ বিষয়ে ক্যাবের এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্ট থেকে বলা হয়, পেট্রোবাংলা ও তিতাসের দুর্নীতি ৫০ ভাগ কমালেই এলএনজি আমদানির কারণ দেখিয়ে গ্যাসের দাম বাড়াতে হবে না।
অন্যদিকে গ্যাসের দাম সমন্বয়ের পক্ষে যুক্তি দিয়ে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গত ৯ জুন বলেন, “গ্যাসের দামটা সমন্বয় করা দরকার, আমি বারবার বলে আসছি। বিইআরসিকে আমরা গ্যাসের দামের বিষয়টি সাবমিট করেছি।… প্রাইস সমন্বয়ের জন্য আমরা গত বছর থেকে অপেক্ষায় আছি।”
শিল্প ও গৃহস্থলী উভয় ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব মন্ত্রণালয় দিয়েছে জানিয়ে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, “সব জায়গায় কিছুটা সমন্বয়ের জন্য বলেছি।”
পুরনো খবর