নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে পরিবহন খাতে নৈরাজ্য দেখা দিতে পারে বলে এক আলোচনার সভার বক্তারা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এর ফলে সাধারণ মানুষের জনজীবনেও বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন তারা।
Published : 06 Apr 2019, 05:22 PM
শনিবার বাংলাদেশ অটোরিকশা-অটোটেম্পু পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন আয়োজিত এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় প্রেস ক্লাবে।
গ্যাসের দাম না বাড়ানোর দাবি আদায়ে জেলা ও উপজেলায় মানববন্ধন, প্রচারপত্র বিতরণ এবং শ্রমিক সমাবেশ পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন কলামনিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আলম এবং গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।
ফেডারেশনের সভাপতি সিকদার বেনজির আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম ফারুক লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
গোলাম ফারুক বলেন, “বর্তমানে একজন অটোরিকশা চালক গ্যাস ক্রয় বাবদ দৈনিক ৩০০ টাকা ব্যয় করেন। এখন সরকার যে হারে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা করছে তাতে একজন চালকের গ্যাস ক্রয়ে খরচ হবে ৬০০ টাকার বেশি।
“গত দশ বছরে ছয় বার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রতিবেশি ভারতে ৬ ডলারে যে পরিমাণ গ্যাস পাওয়া যায় বাংলাদেশ সেই পরিমাণ গ্যাস কেন ১০ ডলার দিয়ে কিনব? সরকার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করলে বাসা ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল এবং দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে।”
সংশ্লিষ্ট সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্নীতিমুক্ত করলে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হবেনা বলে মনে করেন তিনি ।
সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, “গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির যে প্রস্তাব সরকার করেছে তা দেশের ১৬ কোটি মানুষকে জরিমানার শামিল। জেলে না নিয়েই শাস্তি দিচ্ছে সরকার।”
তিনি বলেন, “সরকার যখনই গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করে তার আগে একটি গণশুনানি করা হয়। সেই শুনানির যুক্তি-তর্কে যে হারে দাম বৃদ্ধির পরামর্শ দেওয়া হয় সরকার তা মনেন না। তাহলে এই গণশুনানির প্রয়োজন কী।”
তিনি বলেন, সম্প্রতি আদালত বলেছে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্নীতি যদি অর্ধেকও কমে তাহলে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির দরকার হয় না। যারা গ্যাস চুরি করছে তারা যুদ্ধাপরাধীর চেয়েও বড় অপরাধী।”
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, “সরকার নতুন করে মূল্যবৃদ্ধির যে প্রস্তাব করেছে তা গ্যাসের স্ট্যান্ডার্ড মূল্যের তুলনায় দ্বিগুণ। আমাদের গ্যাস উত্তোলন ও ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্নীতির কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
“সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে তার বাস্তবায়ন সরকার একারপক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য সরকারকে জনগণের সহযোগিতা করতে হবে।”
যে যেখানে অনিয়ম দুর্নীতি দেখেন, তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আনার পরামর্শ দেন তিনি।