মাছ ধরার ট্রলারে ডাকাতির অভিযোগে গ্রেপ্তার ৪

গ্রেপ্তার হওয়া ডাকাত দলটি গত ১০ ফেব্রুয়ারি কুতুবদিয়া চ্যানেলেও একটি ট্রলারে ডাকাতি করে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Feb 2023, 12:17 PM
Updated : 22 Feb 2023, 12:17 PM

বরগুনায় বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ট্রলারে ডাকাতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে র‌্যাব।

র‍্যাব কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম জানান, চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা, বড়ঘোনা, বাংলাবাজার, শৈলকূপাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন-মো. কায়ছার ওরফে কালু (২৫), মো. জাহিদ (২৫), ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ট্রলার মালিক মো. সেলিম ও তার ১৫ বছর বয়েসী কিশোর ছেলে।

র‌্যাবের ভাষ্য, গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে কালু ও জাহিদ সরাসরি ডাকাতিতে অংশ নিয়েছিল। সেলিমের ছেলেটি ডাকাতি করা ট্রলারে না উঠে নিজেদের ট্রলারে থেকে অস্ত্রশস্ত্র পাহারা দিয়েছিল। আর সেলিম বিভিন্ন সময়ে তার ট্রলারটি ডাকাতদের ভাড়া দিয়ে থাকেন।  

এছাড়া জেলেদের ট্রলার থেকে থেকে লুট করা ১৪ হাজার ফুটের জাল, ট্রলারের ব্যাটারি, তেল মোবাইলসহ নানা ধরনের মালামাল এবং দেশীয় ও ধারলো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

বুধবার র‌্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে এসে মাহবুব জানান, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে পাথরঘাটা উপজেলার বঙ্গোপসাগরের বয়া নামে একটি স্থানে ‘এফভি ভাই ভাই’ নামে একটি মাছ ধরার ট্রলার ডাকাতের কবলে পড়ে। ওই ট্রলারে বরগুনার ১৮ জন জেলে ছিলেন।

ডাকাতির ঘটনা বর্ণনায় অধিনায়ক কর্নেল মাহবুব বলেন, “দ্রুতগতির একটি ট্রলার নিয়ে ১৮/২০ জনের ডাকাত দলটি মাছ ধরার ট্রলারটিকে প্রথমে ধাক্কা দেয় তারপর কাছে এসে গুলি ছুড়তে ছুড়তে ট্রলারে উঠে পড়ে। এনপর ডাকাতরা ট্রলারে থাকা নয় জেলেদের কুপিয়ে জখম করে এবং মালামাল লুঠ করে নেয়।

“ডাকাত দলের হামলায় ৯ জেলে আহত হয়। জীবন বাঁচাতে সাগরে লাফিয়ে পড়ে আরও নয় জন জন। তাদের মধ্যে পাঁচ জন এখনও নিখোঁজ। পরদিন সাগর থেকে উদ্ধার হওয়া চার জনের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে।“

র‍্যাবের এই কর্মকতা আরও বলেন, ট্রলারে থেকে যাওয়া আহত নয় জেলেকে পরদিন ১৮ ফেব্রুয়ারি অন্য একটি ট্রলারের জেলেরা উদ্ধার করে পাথরঘাটা নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত দুই জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

র‍্যাব কর্মকর্তা কর্নেল মাহবুব আলম জানান ডাকাতির খবর পেয়ে র‌্যাব-৭, ৮, ১৫ ও সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ব্যাপক নজরদারি শুরু করে।

র‌্যাব-৭ অধিনায়ক বলেন, “এ দলটির এক জন দলনেতা আছেন, তিনিই মূলত তার দলের জন্য বাঁশখালী, মহেশখালী, কুতুবদিয়াসহ বিভিন্ন স্থান থেকে  লোকজন, অস্ত্র সংগ্রহ করাসহ সবকিছুই করেন।“

দলনেতার নাম প্রকাশ না করে কর্নেল মাহবুব আলম বলেন, “তাকে ধরতে র‌্যাব কাজ করছে। মূলত ছোট ছোট দল সংগ্রহ করে একটি বৃহৎ দল তৈরি করে তারা। যার কারণে এক জলের সদস্যরা অন্য দলের সদস্যদের চেনেন না। তারা মূলত ডাকাতির পর লুণ্ঠিত মালামাল বিক্রি করে দলনেতার কাছ থেকে টাকা ভাগ নিয়ে নিজ নিজ এলাকায় চলে যান। “

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান গত ১০ ফেব্রুয়ারি এই ডাকাত দলটি কুতুবদিয়া চ্যানেলেও একটি ট্রলারে ডাকাতি করে। কিন্তু সেখানে লাভবান না হওয়ায় বরগুনায় ‘এফভি ভাই ভাই’ ট্রলারে হানা দেয়।