সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের বিরুদ্ধে মামলা

মামলায় প্ল্যান্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলায় মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2023, 06:14 PM
Updated : 6 March 2023, 06:14 PM

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সীমা অক্সিজেন লিমিটেডে বিস্ফোরণে প্রাণহানির ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে।

নিহত একজনের স্বজন কারখানা কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এই মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ করে সোমবার রাতে সীতাকুণ্ড থানায় এ মামলা করেন।

মামলায় ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাঈদ।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিস্ফোরণে নিহত এক ভিকটিমের পরিবার বাদী হয়ে মামলাটি করেছে। দণ্ডবিধির ৩৩৭, ৩৩৮, ৩০৪ ও ৪২৭ ধারায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে।”

দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় বলা আছে- হত্যার উদ্দেশ্য না থাকার পরও মৃত্যু ঘটলে তা ‘অপরাধজনক নরহত্যা’ বিবেচনা করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং তার সঙ্গে অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে।

সীতাকুণ্ড থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বিস্ফোরণে নিহত আবদুল কাদেরের স্ত্রীর রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা করেন।

মামলায় সীমা অক্সিজেন লিমিটেডের মালিকদের মধ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুন উদ্দিন, তার ভাই পারভেজ উদ্দিন ও আশরাফ উদ্দিন ওরফে বাপ্পিকে আসামি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

Also Read: সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের বিভীষিকা আহতদের বয়ানে

Also Read: ‘কিছুই বুঝতে পারছেন না’ সীমা গ্রুপের ব্যবস্থাপক

Also Read: অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ ‘এয়ার সেপারেশন কলাম থেকে’

শিল্পে ব্যবহারের জন্য অক্সিজেন উৎপাদনের কারখানাটিতে শনিবার বিকালে বিকট বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে। ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা ঘণ্টাখানেকের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনেন।

বিস্ফোরণে সাতজন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে কমপক্ষে ২৪ জন। তাদের মধ্যে ১৮ জন এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। নিহতদের মধ্যে দুজন স্থানীয় ব্যক্তি, কারখানা থেকে উড়ে আসা ভারী বস্তুর আঘাতে বাইরে থেকেই তারা মারা যান।

বিস্ফোরণের ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। রোববার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তদন্ত কমিটির প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসান জানান, অক্সিজেন প্ল্যান্টে এয়ার সেপারেশন কলাম থেকে বিস্ফোরণের সূত্রপাত হতে পারে বলে তাদের ধারণা।

তদন্ত কমিটির সাথে বিশেষজ্ঞ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা সদস্য ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ফলিত রসায়ন বিভাগের সভাপতি ড. সুমন বড়ুয়া জানিয়েছেলেন, সেপারেশন প্ল্যান্টে প্রেশার রিলিজের যে বিষয়টি রয়েছে, সেটা সঠিকভাবে না হওয়ায় বিস্ফোরণ হয়েছে বলে তার ধারণা।

এজন্য কারাখানা কর্তৃপক্ষ কিংবা প্ল্যান্ট পরিচালনার সাথে জড়িতদের গাফেলতি থাকতে পারে বলেও মনে করেন তিনি।

তবে সীমা অক্সিজেন কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা সব নিয়ম মেনেই কারখানা পরিচালনা করছিলেন।