“বে টার্মিনালে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। দুটি টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনায় পিএসএ সিঙ্গাপুর ও ডিপি ওর্য়াল্ড ইতিমধ্যে আগ্রহ দেখিয়েছে। অচিরেই চুক্তি স্বাক্ষর হবে আশা করছি। এছাড়া বন্দরের অর্থায়নে করতে যাওয়া মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণে আবুধাবির একটি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে।”
Published : 27 Dec 2023, 07:47 PM
বে টার্মিনালে শতভাগ বিদেশি বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।
বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন।
বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, “বে টার্মিনালে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। দুটি টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনায় পিএসএ সিঙ্গাপুর ও ডিপি ওর্য়াল্ড ইতিমধ্যে আগ্রহ দেখিয়েছে। অচিরেই চুক্তি স্বাক্ষর হবে আশা করছি। এছাড়া বন্দরের অর্থায়নে করতে যাওয়া মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণে আবুধাবির একটি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে।”
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বন্দরের বে টার্মিনালের মাস্টারপ্ল্যান উন্মোচন করেছেন। এখানে তিনটি নয়, চারটি টার্মিনাল হবে। দেশে প্রথমবারের মতো একটি লিকুইড বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ হবে। ইতিমধ্যে এর ফিজিবল স্টাডি চলছে। এটি পরিচালনায় দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে বিনিয়োগের লিখিত প্রস্তাব দিয়েছে।”
এতে তিন বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ হতে পারে উল্লেখ করলেও কারা এই বিনিয়োগ প্রস্তাব দিয়েছে তা প্রকাশ করেননি তিনি।
এক প্রশ্নে রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, “আমরা চাই বে টার্মিনালে শতভাগ বিদেশি বিনিয়োগ আসুক। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিনিয়োগ করে টার্মিনাল তৈরি ও অপারেট করবে, পরে আমাদের কাছে হস্তান্তর করলে মালিকানা নিজেদের (চট্টগ্রাম বন্দর) হবে।”
তিনি জানান, এপিএম টার্মিনালসের বিনিয়োগের বিষয়ে আগামী ৩ জানুয়ারি প্ল্যাটফর্ম সভা আহ্বান করা হয়েছে। আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে যাতে চুক্তি করা যায় সেই লক্ষ্যেই কাজ এগিয়ে চলছে।
পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় সৌদি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হওয়ার পর টার্মিনালের অগ্রগতি তুলে ধরেন বন্দর চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, গত ৪ ডিসেম্বর রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার পর এখন চুক্তি বাস্তবায়নের কাজ চলছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে টার্মিনালে পণ্য ওঠানামার কাজ হবে এবং দেড়–দুই বছরের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ অপারেশনে যাবে।
মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম নিয়ে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, ২০২৪ সালের মার্চ–এপ্রিলে গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের টার্মিনালের প্রকৃত নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
বিশ্ব অর্থনীতির প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও চট্টগ্রাম বন্দর কার্গো ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পেরেছে বলে জানান তিনি।
চলতি বছরে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমদানি-রপ্তানি মিলিয়ে বন্দর ৩০ লাখ ৪ হাজার ৫০৫ টিইইউস (প্রতিটি ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের) কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করেছে।
এর মধ্য দিয়ে বন্দর ‘থ্রি মিলিয়ন ক্লাবে’ প্রবেশ করতে পেরেছে উল্লেখ করে সোহায়েল বলেন, বছর শেষে বন্দর ৩ দশমিক ১ মিলিয়ন টিইইউস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করতে সক্ষম হবে।
“এ সময়ে ১১ কোটি ৮৩ লাখ ৪৫ হাজার ৫৭৬ টন কার্গো হ্যানডলিং করেছে বন্দর। ৩১ ডিসেম্বর নাগাদ প্রায় ১২ কোটি টন ছাড়িয়ে যাবে। এটি পূর্বের কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের রেকর্ড ছাড়াবে।”
এসময় বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।