“আমরা হলাম যে আওয়ামী লীগ, আমরা জাতে মাতাল তালে ঠিক,” বলেন আ জ ম নাছির।
Published : 13 Jul 2023, 02:11 PM
চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপ নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর ঐক্যবদ্ধভাবে ভোটে লড়ার ঘোষণা দিলেন নৌকার প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু এবং নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।
বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর জুবিলী রোডে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে এই আসনের পাঁচ প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ করা হয়।
চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মোট ৫ জন প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ করা হয়েছে। এদের মধ্যে স্বতন্ত্র এক প্রার্থীর মনোনয়ন বাছাইয়ে বাতিল হয়েছিল। পরে তিনি আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।”
প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের মহিউদ্দিন বাচ্চু নৌকা, জাতীয় পার্টির মো. সামশুল আলম লাঙ্গল, তৃণমূল বিএনপির দীপক কুমার পালিত সোনালী আঁশ, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক জোটের রশিদ মিয়া ছড়ি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মনজুরুল ইসলাম ভুঁইয়া রকেট প্রতীক নিয়ে ভোটে লড়বেন।
প্রতীক বরাদ্দের পর দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বেরিয়ে আসেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু। এ সময় তার সাথে ছিলেন আ জ ম নাছির উদ্দিন।
চট্টগ্রাম নগরের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে দুটি ধারা আছে। এরমধ্যে একটি পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন প্রয়াত নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। অন্য পক্ষটি আ জ ম নাছিরের অনুসারী। মহিউদ্দিনের মৃত্যুর পর তার অনুসারীরা আছেন তার বড় ছেলে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সাথে।
চট্টগ্রাম-১০ আসনে দলের মনোনয়ন পাওয়া মহিউদ্দিন বাচ্চু নগরীর রাজনীতিতে শুরু থেকেই প্রয়াত মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী। নগর যুবলীগে সাবেক আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু নিজেকে মহিউদ্দিন চৌধুরীর কর্মী হিসেবেই পরিচয় দেন।
বৃহস্পতিবার প্রতীক বরাদ্দের পর তাই আ জ ম নাছিরের কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, কীভাবে ভোটের প্রচার হবে। চট্টগ্রাম-১০ আসনে ২৯ জন দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিল, সে বিষয়টিও বলেন সংবাদকর্মীরা।
জবাবে সাবেক মেয়র নাছির বলেন, “আমাদের প্রতিযোগিতা এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। গণসংগঠনে প্রতিযোগিতা থাকা স্বাভাবিক। আর ইতিবাচক প্রতিযোগিতা সংগঠনকে সমৃদ্ধ করে। নেতিবাচক প্রতিযোগিতা সংগঠনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
“আমাদের এখানে যে প্রতিযোগিতাটা আছে এটা হলো ইতিবাচক প্রতিযোগিতা। এটা সংগঠনকে সমৃদ্ধ করছে। এবং আমরা হলাম যে আওয়ামী লীগ, আমরা জাতে মাতাল তালে ঠিক। কখন কোন কাজটা করতে হবে, কখন ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এটা আমরা সবাই জানি।”
নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাছির বলেন, “নির্বাচন এটা- আমাদের অস্তিত্বের একটা লড়াই। তখন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। বিএনপি-জামায়াত এবং স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির যে অপরাজনীতি, অপপ্রচার, জনস্বার্থ বিরোধী যে প্রচেষ্টা, জ্বালাও পোড়াও বা মানুষ হত্যার রাজনীতি যখন করে তখন কিন্তু আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। ওই রাজনীতি আমরা শক্তভাবে প্রতিরোধ করি।”
বক্তব্য শেষে নাছির ও মহিউদ্দিন বাচ্চু হাতে হাত রেখে উঁচিয়ে ধরেন। নেতাকর্মীরা তখন ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিতে থাকেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও চট্টগ্রাম-১০ আসনের প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু বলেন, “আমাদের নির্বাচনের জন্য আলাদা করে প্রস্তুতি, তেমন নয়। সাংগঠনিকভাবে এমনিতেই আমরা সবসময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত থাকি।
“আমরা ২৯ জন দলের মনোনয়ন চেয়েছিলাম। আমার বিবেচনায় প্রত্যেকে যোগ্য ও শক্তিশালী। আমাদের নেত্রী যাকে যোগ্য মনে করেছেন তাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। প্রত্যেকে আমাদের দলের নেতাকর্মী। তারা আমার বন্ধু। নৌকা মুক্তিযুদ্ধে ও স্বাধীনতার প্রতীক। যে সংকট মোকাবেলার ক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকাকে সাথে নিয়েই আমরা করি। নৌকার প্রার্থী হওয়া আসলে গর্বের। আমিও গর্বিত।”
অন্য দলের প্রার্থীদের কীভাবে দেখছেন– এমন প্রশ্নের জবাবে মহিউদ্দিন বাচ্চু বলেন, “ভোটের মাঠে অন্য দলের যারা আছেন তারা যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী। আমাদের দলের উপর জনগণের যে আস্থা বিশ্বাস আছে সেটি একেবারে স্বীকৃত বিষয়।
“বিভিন্ন নির্বাচনে সেটি ফল আমরা দেখেছি। জনগণের হৃদয়ে আমাদের দল অবস্থান করছে। তাই বিজয়ের বিশ্বাস আমাদের আছে।”
বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর শুলকবহর ওয়ার্ডে গণসংযোগের মধ্য দিয়ে শুরু হবে মহিউদ্দিন বাচ্চুর ভোটের প্রচার।
গত ২ জুন চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্য আফছারুল আমীনের মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়। আগামী ৩০ জুলাই এ আসনের ভোটগ্রহণ হবে ১৫৬টি কেন্দ্রে।
৪ লাখ ৮৮ হাজার ৬৩৮ জন ভোটার সবগুলো কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দেবেন।