চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেছেন এক ছাত্রলীগ নেতা।
Published : 01 Jun 2023, 01:54 PM
যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ‘যুদ্ধাপরাধী ছিল না’ বলে দাবি করার অভিযোগে বন গবেষণা ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামের পরিচালক রফিকুল হায়দারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করেছেন এক ছাত্রলীগ নেতা।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জহিরুল কবিরের আদালতে মামলাটি করেন ছাত্রলীগ নেতা সোহরাব হোসাইন।
ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আদালত অভিযোগ গ্রহণ করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম বিভাগের সাইবার শাখাকে তদন্ত করে ২৩ জুলাই প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২১(২), ২৫ (২) ও ৩১ (২) ধারায় মামলাটি করা হয়েছে।
মামলার বিবাদী বন গবেষণা ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) রফিকুল হায়দার (৫৮)। তিনি ইনস্টিটিউটের বনজ সম্পদ উইং এর মুখ্য গবেষণা কর্মকর্তাও।
মামলার বাদী সোহরাব হোসাইন পাঁচলাইশ থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের সদস্য।
সোহরাব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের মত একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে পরিচালক পদে থেকে তিনি দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য দিয়েছেন।
“এ ধরনের বক্তব্যে তিনি আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা দেখিয়েছেন। এই বক্তব্যের কারণে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তাই বন গবেষণা ইনস্টিটিউট সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা ও একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি মামলা করেছি। আমি না করলে, হয়ত অন্য কেউ করত।”
মামলার এজাহারে সোহরাব বলেন, “গত ২০ মে ফেসবুকে দৈনিক গণকণ্ঠ পত্রিকার ১৯ এপ্রিলের “সাকা কখনো যু্দ্ধাপরাধী ছিল না: বলেন বন গবেষণাগারের পরিচালক ড. রফিকুল হায়দার” শিরোনামের একটি এবং দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার ২৮ মার্চের “বাংলাদেশ বন গবেষণাগার পরিচালকের যুদ্ধাপরাধীদের নিরাপরাধ দাবি করে বক্তব্য” শিরোনামের আরেকটি প্রতিবেদন দেখতে পাই।”
এই বক্তব্য রফিকুল হায়দার কত তারিখে দিয়েছেন জানতে চাইলে সোহরাব হোসাইন বলেন, “কত তারিখ দিয়েছেন তা আমি নির্দিষ্ট করে বলতে পারছি না।”
এজাহারে বলা হয়, “বন গবেষণাগারে কর্মকর্তাদের সাথে এক বৈঠকে পরিচালক রফিকুল হায়দার ওই বক্তব্য দেন। এর ৪৪ সেকেন্ডের একটি অডিও ফেইসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে পড়ে।
“ওই বক্তব্যে রফিকুল হায়দার বলেন, ‘সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী যুদ্ধাপরাধী ছিল না। তার এলাকায় যাও খবর নাও। তার একটাই দোষ হাসিনাকে আঘাত করছে সংসদে দাঁড়িয়ে’।”
মামলায় অভিযোগ করা হয়- “আসামি রফিকুল হায়দারের এই বক্তব্য বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি অবজ্ঞা, বিচার বিভাগ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতি অবমাননাকর এবং রাষ্ট্র বিরোধী বক্তব্য করে গণতান্ত্রিক সরকারের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে।”
আসামি এই বক্তব্যের মাধ্যমে ‘স্বাধীনতা বিরোধী চক্রকে আরো উচ্ছৃঙ্খল করে তুলছে’ বলেও অভিযোগ করা হয় মামলার এজাহারে।
এ বিষয়ে জানতে রফিকুল হায়দারকে একাধিকার ফোন করা হলেও তিনি লাইন কেটে দেন। পরে এসএমএস দিয়ে জানান, তিনি পরে কলব্যাক করবেন, যদিও তা করেননি।
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে ২০১৫ সালের ২২ নভেম্বর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।