লোক পাঠিয়েও ড্রেজার থেকে আনা যায়নি সেই ৮ শ্রমিককে, এখন নিখোঁজ

মিরসরাই উপকূলে ডুবে যাওয়ার ড্রেজারটির ভেতরে বালু-মাটি ঢুকে পড়ায় উদ্ধার অভিযান চালাতে বেগ পোহাতে হচ্ছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2022, 12:09 PM
Updated : 25 Oct 2022, 12:09 PM

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তাণ্ডবের সময় বঙ্গোপসাগরে ডুবে যাওয়া বালুর ড্রেজারে থাকা আট শ্রমিকের সন্ধান ২৪ ঘণ্টায়ও মেলেনি।

ড্রেজারটির বেশিরভাগ অংশ ডুবে তার ভেতরে বালু-মাটি ঢুকে পড়ায় উদ্ধার অভিযান চালাতে বেগ পোহানোর কথা জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

মীরসরাইয়ের ইউএনও মো. মিনহাজুর রহমান বলেন, সোমবার ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের বিপদ সংকেত ঘোষণার পর ড্রেজারে থাকা শ্রমিকদের সরিয়ে নিতে কয়েক দফায় নৌকা ও ট্রলার গিয়েছিল। কিন্তু আট শ্রমিক ওই ড্রেজারে থেকে যায়।

তিনি বলেন, “তাদের তীরে ফেরাতে গতকাল (সোমবার) বিকাল ৫টার সময় নৌকা গেলে ৯ শ্রমিকের মধ্যে একজন ফিরে আসেন। এর এক ঘণ্টা পর একবার এবং রাত সাড়ে ৮টায় আবার ট্রলার ও নৌকা পাঠিয়েছিল মালিকপক্ষ। কিন্তু তারা ফেরেননি। ড্রেজারের ভেতর একটি কক্ষে তারা রয়ে যান।”

সোমবার রাত ১১টার দিকে মিরসরাইয়ের বামনসুন্দর খাল ও বঙ্গোপসাগরের সংযোগ অংশে ‘সৈকত এন্টারপ্রাইজ-২’ নামের ড্রেজারটি ডুবে গেলে ওই আট শ্রমিক নিখোঁজ হন।

এরা হলেন- শাহীন (৩৭), ইমাম (২২), তারেক (২০), মাহমুদ (২৬), আল আমীন (৩০), জাকারিয়া (২৯), আলম (৩৫) ও জাহিদ (২৭)। নিখোঁজ সবাই পটুয়াখালী জেলার জৈনকাঠি এলাকার বাসিন্দা।

Also Read: চট্টগ্রামে বালুবাহী নৌযান সাগরে ডুবে আট শ্রমিক নিখোঁজ

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ইউএনও বলেন, “রাতে ঝড় শুরু হলে ড্রেজারটি ডুবে যায়। সকালে নৌকা নিয়ে স্থানীয়রা ড্রেজারটির কাছে গিয়েছিল। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছে, তারা লাশ দেখেছে ভেতরে।

“রাতে ড্রেজার ডোবার পর এখন পর্যন্ত অনেক সময় পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে জীবিত কোনো শ্রমিকের সন্ধান মেলেনি।”

ডুবুরি দল কাজ করেছে জানিয়ে ইউএনও বলেন, “সাগরে এখন ভাটার টান। কিন্তু ড্রেজারটির বেশিরভাগ অংশ ডুবে যাওয়ায় সেটির ভিতর বালু-মাটি ঢুকে পড়েছে। এতে ড্রেজারের বেশিরভাগ অংশ মাটির নিচে ঢুকে গেছে। তাই ডুবুরি দলের কাজ করতে বেগ পেতে হচ্ছে।”

তিনি জানান, ইকোনমিক জোনে বেপজার হয়ে মাটি সরবরাহের কাজ করে ঠিকাদার খোকন। ঠিকাদারের পক্ষ থেকে ড্রেজারটি নিয়োগ পেয়ে কাজ করছিল।

ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ হারুন পাশা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ড্রেজারের আটজন শ্রমিক ভেতরে আটকা পড়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। এখনও কাউকে জীবিত বা মৃত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আমরা উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছি।”

সোমবার ঘুর্ণিঝড় সিত্রাং এগিয়ে এলে চট্টগ্রামে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করা হয়। এসময় সব ধরনের নৌযানকে উপকূলের কাছে থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

রাতে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রমের সময় ঝড়ো হাওয়া এবং একই সময় জোয়ার চলমান থাকায় উত্তাল ছিল সাগর।