বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের এই আয়োজনে সঙ্গী হয়েছে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কর্তৃপক্ষ।
Published : 19 Oct 2023, 06:31 PM
খোলাবাজারে যেখানে এক জোড়া ডিমের দাম ২৬ টাকা, সেখানে দুই হালি ডিম মিলছে মাত্র এক টাকায়। আবার একশ টাকার বেশি দামের তেল, চিনি মিলছে চার টাকা আর এক টাকায়।
চট্টগ্রামের বাকলিয়া এলাকার রাজবাড়ি কনভেনশন সেন্টারে এমনিই এক ‘আজব হাট’ বসেছে। যেখনে ক্রেতারা সমাজের বঞ্চিত মানুষেরা।
‘বঞ্চিত মানুষের শারদ আনন্দ’ শিরোনামে চট্টগ্রামে এ আজব হাটের আয়োজক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। যাদের পাশে দাঁড়িয়েছে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার দুই দিনব্যাপী এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়।
এ হাট থেকে সুবিধাবঞ্চিত মানুষ তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় বাজারের পাশাপাশি কিনতে পারবেন জুতা, জামা, মাছ, মাংস ও স্টেশনারি সামগ্রীও।
যেখানে মাছের দাম ধরা হয়েছে চার টাকা, মুরগী পাঁচ টাকা। এক টাকায় মিলছে এক কেজি চাল, আলু, বুটের ডাল। আর দুই টাকায় মিলছে মসুর ডাল।
নিত্য প্রয়োজনীয় গৃহস্থালী এসব পণ্যের দামের মত এক টাকায় মিলছে এক জোড়া জুতা, পাঁচ টাকায় শাড়ি, চার টাকায় থ্রি-পিচ আর দুই টাকায় ছোটদের কাপড়। একই দামে মিলছে বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড সদস্য জামাল উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এক হাজার পরিবারের তিন হাজার সদস্য তাদের এ হাট থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারবেন।
তাদের এ বাজারে ২৬ ধরনের পণ্য আছে। তবে জনপ্রতি ১৪ টাকার বাজার করতে পারবেন এক জন। ১৪ টাকায় কেনা এসব পণ্যের বাজার দাম দেড় হাজার টাকা।
বিদ্যানন্দের স্বেচ্ছাসেবীরা তাদের এ আজব হাটের ক্রেতাদের বলছেন- ‘এটি কোনো দান নয়, বাকি ভেবে পণ্য নিন, পরে কোনো অভাবীকে মূল্য দিয়ে দিন।’
বিদ্যানন্দের এ বাজারে যারা ক্রেতা, তারা তাদের নাম লিখে রাখছেন বাকির খাতায়। পরে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী কোনো অভাবীকে দাম পরিশোধ করে দেবেন। সেজন্য তারা সেখানে একটি প্রতীকী টিপ সইও দিয়ে রাখছেন।
এ বাজারের ক্রেতা ঝর্ণা মহাজন নামের পঞ্চাশোর্ধ এক নারী বলেন, জিনিসপত্রের অতিদামে তাদের পক্ষে পূজার বাজার করা সম্ভব নয়। এখান থেকে অল্প দামে অনেক কিছুই কিনতে পারছেন।
একই কথা বলেন, মঞ্জু রানীও। তিনিও কিনেছেন ডিম, আলু, তেল, চিনি।
এ আয়োজনের উদ্বোধন করে বিদ্যানন্দের এ হাটে বিক্রেতাও হয়েছিলেন চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “উৎসবে মানুষের অনেক প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে হয়। কিন্তু আয়ের সাথে ব্যয় সমন্বয় করতে পারে না। এ সময় পাশে আসে বিদ্যানন্দ।
“এ সহযোগিতা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে না পারলেও সমাজের বিত্তবান মানুষদের এ ধরনের কাজে এগিয়ে আসার প্রেরণা যোগায়।”