কয়েকদিন আগে থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) ও জেলা প্রশাসন পৃথক স্থানে স্বাধীনতা দিবস পালনের এই উদ্যোগ নিতে শুরু করে।
Published : 25 Mar 2024, 08:09 PM
চট্টগ্রামে এবার স্বাধীনতা দিবস পালনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নগরীর মিউনিসিপ্যাল স্কুলের অস্থায়ী শহীদ মিনারে এবং জেলা প্রশাসন উত্তর কাট্টলীর অস্থায়ী স্মৃতি সৌধে পৃথক আয়োজন করেছে।
কয়েকদিন আগে থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) ও জেলা প্রশাসন পৃথক স্থানে স্বাধীনতা দিবস পালনের এই উদ্যোগ নিতে শুরু করে।
সোমবার সিটি করপোরেশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে এবারও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল ও কলেজ মাঠে অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন মেয়র, মুক্তিযোদ্ধা, কাউন্সিলর, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ চট্টগ্রামের জনসাধারণ।
ইতিমধ্যে শহীদ মিনারে পরিচ্ছন্নতা, রঙ করা, বাঁশ দিয়ে চলাচলের পথ তৈরিসহ সব আয়োজন শেষ হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় কয়েকটি সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন কালরাত্রি স্মরণে মিউনিসিপ্যাল স্কুলের অস্থায়ী শহীদ মিনারে কর্মসূচিও পালন করেছে।
সিসিসি জানায়, মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে অস্থায়ী শহিদ মিনারে ফুল দেয়ার পর টাইগারপাসে সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী৷ এরপর নগর ভবনে নির্মিত মুজিব কর্নারের উদ্বোধন করবেন মেয়র।
অস্থায়ী শহীদ মিনারে স্বাধীনতা দিবস পালন বিষয়ে মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “নির্মাণাধীন শহীদ মিনার দৃশ্যমান না হওয়া এবং সিঁড়ির সঙ্কীর্ণতা ও বয়োবৃদ্ধদের উপযোগী না হওয়া নিয়ে অনেকের অভিযোগ আছে। এ বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় গতবারের মতো এবারও মিউনিসিপ্যাল স্কুল প্রাঙ্গণে আমরা শ্রদ্ধা নিবেদন করব।”
চট্টগ্রাম নগরীতে একটি শহীদ মিনার থাকলেও কোনো স্মৃতি সৌধ নেই। সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স প্রকল্পের আওতায় সেই পুরনো শহীদ মিনারটিও ভেঙে নতুন শহীদ মিনার করা হয়েছে। যা দৃশ্যমান নয় এবং আকারে ছোট বলে আপত্তি উঠেছে চট্টগ্রামের বিভিন্ন মহল থেকে।
অন্যদিকে গত বছরের ২৮ অক্টোবর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের সময় সমুদ্রের পার্শ্ববর্তী উত্তর কাট্টলীতে ৩০ একর জায়গায় নতুন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও যাদুঘর নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
এই অবস্থায় এবারের স্বাধীনতা দিবসকে সামনে রেখে নগরীর মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে উত্তর কাট্টলী মৌজায় প্রস্তাবিত ওই ৩০ একর জায়গার মধ্যে আপাতত ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৩০ ফুট প্রস্থের জমিতে জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় অস্থায়ী ভিত্তিতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়।
যেটি শনিবার উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভের ৫৩ বছর পর চট্টগ্রামে কোনো স্মৃতি সৌধ হলো।
ওই অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জানান, সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় আগামী ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে সেখানে স্থায়ী স্মৃতি সৌধ নির্মাণের কার্যক্রম বাস্তবায়ন হওয়ার কথা রয়েছে।
“এটা চট্টগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। সে জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা এখানে অস্থায়ীভাবে হলেও মহান মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মৃতিসৌধ করেছি। জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে কম সময়ের মধ্যে এটির কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছি। আগামী ২৬ মার্চ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করতে পারব।”
জেলা প্রশাসন স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচিতে জানায়, মঙ্গলবার ভোরে উত্তর কাট্টলীতে প্রস্তাবিত স্মৃতিসৌধ এলাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হবে।
এরপর অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। এরপর সকাল ৮টায় নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লের আয়োজন করা হয়েছে।
ভোরে মূল শহর থেকে দূরে সাগর তীরের উত্তর কাট্টলী এলাকায় অস্থায়ী স্মৃতি সৌধে যেতে শাটল বাসের ব্যবস্থা করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
নগরীর ২ নম্বর গেট শপিং কমপ্লেক্স এর সামনে থেকে মঙ্গলবার ভোর ৫টায় শুরু হবে শাটল বাস চলাচল। ৩০ মিনিট পরপর বেলা ১১টা পর্যন্ত স্মৃতি সৌধের উদ্দেশ্যে শাটল বাস ছেড়ে যাবে। একই পথে ফিরতি বাসও চলবে।
এছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ভোর ৫টা থেকে ১৫ মিনিট পরপর চারটি রিজার্ভ বাস ছেড়ে যাবে অস্থায়ী স্মৃতি সৌধের উদ্দেশ্যে।